পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পেঁয়াজ এখন হয়ে গেছে ভারতের গলার কাঁটা। পেঁয়াজ তোলার মৌসুম শুরু হতে না হতেই পণ্যটি বিক্রি করতে দেশটির কৃষকরা হাটে ভিড় করছেন। বিপাকে পড়েই বাংলাদেশের কথা মনে করেছে প্রতিবেশী ভারত। দেশটি সঙ্কটের সময় দীর্ঘদিন পেঁয়াজ না দিলেও এখন বাংলাদেশে রফতানি করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। নিজেদের সঙ্কটের সময় আমদানি করেছে চাহিদার সূ² হিসাব না করে। এখন সেই পেঁয়াজ গোডাউনে পচে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে ভারত। এর আগে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সঙ্কটের সময় পণ্যটি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটি। আর এতে বাংলাদেশের বাজারে রেকর্ড গড়ে পেঁয়াজের কেজি ২৮০ টাকায় পৌঁছে। অবশ্য ভারতের বাজারেও পেঁয়াজ সঙ্কট ছিল তুমুল পর্যায়ে। রাজ্য ভেদে ১০০ রুপি কেজি ছাড়িয়ে যায় দাম।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় উভয় দেশ। এতে বাংলাদেশ পেঁয়াজের বাজারে চাহিদা অনুযায়ী আমদানি সমন্বয় করতে পারলেও পারেনি ভারত। রাজ্য সরকারের চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি করে বিপাকে পড়ে গেছে কেন্দ্র। কারণ যে চাহিদ দিয়েছিল রাজ্য সরকার, আমদানির পর তা প্রত্যাহার করে নেয়ায় গোডাউনে পড়ে রয়েছে অন্তত ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ। এ হিসেবে ১৩ জানুয়ারি ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার রকিবুল হকের সঙ্গে বৈঠকে পেঁয়াজ কেনার প্রস্তাব দেন। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ওঠে।
অবশ্য ওই বৈঠকে প্রস্তাবের বিপরীতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার রকিবুল হক বলেছিলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। একইসঙ্গে নেপাল হয়ে আরও পেঁয়াজ দেশের বাজারে ঢোকার অপেক্ষায়। সুতরাং পণ্যটি রফতানিতে বিনামূল্যে পরিবহনসহ কিছু প্রণোদনা দেয়া উচিত ভারতের।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। তাই দ্রুত জমে থাকা পেঁয়াজ বাংলাদেশকে দিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। দেশটি বিপদ থেকে উদ্ধার হতেই বাংলাদেশের কথা মনে করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’ প্রতিবেদনে বলেছে, বিভিন্ন রাজ্যের চাহিদার ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানি করে বিপাকে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। দ্য প্রিন্ট বলেছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতের সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত বিদেশ থেকে মোট ৩৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির চুক্তি করেছে। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১৮ হাজার টন পেঁয়াজ পৌঁছেছে। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্য সরকার এই পেঁয়াজের মাত্র তিন হাজার টন নিয়েছে। বাকি পেঁয়াজ মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দরে খালাসের অপেক্ষায়।
ভারতের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সাড়া দেবে কি-না, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। এ জন্য সরকার আগামী কয়েক মাস দেশের পেঁয়াজ উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ে পর্যালোচনা করে কতটুকু লাগবে, তা বের করবে। আমদানি করতে হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের আমদানিকারক ও কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে সরকারকে। এরপর হয়তো আমদানি করতে পারে। অবশ্য ভারত অফিসিয়ালি এ ধরণের কোনো প্রস্তাব দেয়নি জানিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমরা ভারতের কাছ থেকে অফিসিয়ালি পেঁয়াজ কেনার কোনো প্রস্তাব পাইনি। এছাড়া এটা আমাদের কনসিডারেশনও নেই। এছাড়া এ ধরনের প্রস্তাব এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে আসবে। প্রস্তাব এলে দেখে বিবেচনা করব, কী ধরনের। কিন্তু আমরা তো এখন নিজেরাই সরাসরি আমদানি করছি। এরপরও যদি উপযুক্ত হয়, দেখা যাবে। বাট এখন আমাদের এটা কনসিডারেশনে নেই। এরপর জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ভারত রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় পেঁয়াজের দাম কমে আসবে। ১১০ টাকা কেজি থাকবে না। এছাড়া এখন পেঁয়াজের মৌসুমও।
জানতে চাইলে সিপিডির সিনিয়র গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ভারত নিজেদের আমদানি করা পেঁয়াজ দিতে চাচ্ছে। কারণ পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। তবে আমাদের চাহিদার ভিত্তিতে এটা নির্ধারণ করতে হবে। আগামী মাসগুলোতে আমাদের পেঁয়াজের সরবরাহ থাকবে। এ হিসেবে তাদের পেঁয়াজ আনার সুযোগ আছে কি-না বিবেচনায় নিতে হবে। একইসঙ্গে এর গুণগতমান বিচারের পাশাপাশি তাদের দেশীয় পেঁয়াজ দেবে কি-না, সে শর্ত দিতে হবে। এছাড়া অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, বর্তমানে যারা বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে, ও যারা উৎপাদন করছে, তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
রাজধানীর শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজের টেম্পার নষ্ট হয়ে গেছে। মান এখন ভালো নেই। যখন প্রয়োজন ছিল, তখন তো তারা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে দেশের চাহিদা মিটিয়েছি। এখন যদি আবার ভারত থেকে মানহীন নষ্ট পেঁয়াজ কম দামে আনে, তাহলে দেশের আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দেশের কৃষকও পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।