পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদী নিয়ে উদাসীনতার জেরে নিরবে মরুকরণ হয়ে চলেছে উত্তরাঞ্চলে। শুধু বর্ষার সময়টা ছাড়া, বছরের প্রায় ৭/৮ মাসই উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের শতাধিক নদ/নদীই থাকে পানিশুন্য। ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৩টি বড় নদী পদ্মা, যমুনা ও তিস্তার শাখা গুলি থেকে জালের মত ছড়িয়ে যাওয়া শতাধিক নদী ছাড়াও চলনবিল এলাকায় সারা বছর পানি প্রবাহ না থাকায় সবচেয়ে ক্ষতি হচ্ছে মাছের প্রজনন। ১৯৭০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৫০ বছরের মধ্যেই ৫০ প্রজাতির মাছ বিলিন হয়ে গেছে ।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নৌ পথের। মুঘল ও বৃটিশ এরপর পাকিস্তানের ৬০ দশক পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদীতেই চলতো বিশাল বিশাল পালতোলা সওদাগরী নৌকা। টনকে টন ধান, পাট, তামাক, নারিকেল ইত্যাদি দেশীয় পণ্য পরিবহনের সহজলভ্য পথ ছিল নৌ-পথ। মরহুম মরমী শিল্পী আব্বাস উদ্দিনের গাওয়া ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই , হাঁকাও গাড়ি মোর চিলমারির বন্দরে রে...’ কিংবা মরহুম আব্দুল আলিমের গাওয়া নাইয়ারে নায়ের বাদাম তুইলা, কোন দেশে যাও চইলা ... সর্বনাশা পদ্মা নদী তোর কাছে শুধাই, বল আমারে তোর কি রে আর কুল কিনারা নাই ... জাতীয় গানের মধ্যে ফুটে ওঠা নদী মাতৃক বাংলাদেশের উত্তর জনপদের যে চিত্র তার সাথে বর্তমানের বিদ্যমান বাস্তবতা বড়ই করুণ !
পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ডে দেখা যায়, ১৯৭৪ সালে পরীক্ষা মূলকভাবে পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা নামক স্থানে বাঁধ নির্মাণ করে প্রমত্তা পদ্মার পানি ভাগিরথি নদীতে পার করে নেয়ার পর থেকেই মুলত: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ শুরু হয়। ফারাক্কার প্রভাবে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও পাবনা জেলার অংশ বিশেষের ২৫/৩০টি ছোট বড় শাখা নদীর অপমৃত্যু হতে চলেছে। দেশের বৃহত্তম চলনবিল এখন পানি সংকটে ভুগছে। নাটোরের সিংড়া উপজেলার চামারী ইউনিয়নের বিল ডহর গ্রামের আবুল কালামের ভাষায়, চলন বিলের মাছ ও শুঁটকির কদর ছিল দেশব্যাপী । কিন্তু পানির অভাবে এখন চলনবিল আগাম জাতের বোরো ধান উৎপাদক হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে ।
একইভাবে ২০১৪ সালে তিস্তা নদীর উজানে গজলডোবা নামক স্থানে ব্যারেজ নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় রংপুর বিভাগের শতাধিক ছোট বড় নদী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে।
তিস্তা ব্যারেজসহ আরও কয়েকটি ছোট ও মাঝারি ড্যাম, স্পার ও বাঁধ নির্মাণ করে উজানে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার প্রকৃতি ও পরিবেশে ক্রমশ: বিপর্যয়ের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামের চিলমারি, গাইবান্ধার বালাসি ও ফুলছড়ি ও বৃহত্তর পাবনার বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দর গুলোকে ঘিরে বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ, বার্জ প্রভৃতির চলাচল এখন কেবলমাত্র বর্ষাকালেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জ সার্কেলের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাসুদ রানার মতে শুষ্ক মওশুমে উত্তরের ছোট বড় ও মাঝারি নদ-নদীতে যদি লঞ্চ ও স্টিমার চলাচলের মত পানি প্রবাহ থাকতো সেক্ষেত্রে সড়ক পথের ওপর চাপ কম পড়তো।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জেলে সম্প্রদায়ের লোকজনের মতে এক যমুনাতেই পাঙ্গাস, কালিবাউশ, বাইম, গুলিসা, বোয়াল জাতের মাছের প্রাপ্যতা এতটাই কমে গেছে যে, আর কিছুদিন পর এসব মাছের নামই ভুলে যাবে এলাকার মানুষ।
নদী এলাকায় বসবাসকারি জেলে ও নৌকা তৈরির সাথে জড়িত লোকজন পেশা বদল করে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা। তাদের ভাষায় নদ-নদী খাল বিলের অপমৃত্যুর কারণে উত্তরাঞ্চলের ৫০ প্রজাতির মাছ বিলিন হতে চলেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।