পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী ও টাঙ্গাইলে ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ৪৬ বছর আগে মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী মরণবাঁধ ফারাক্কা বিরুদ্ধে যে আওয়াজ তুলে ছিলেন তার প্রশংসা করেন। বক্তারা বলেন, দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে ভারতের তাবেদারী থেকে রক্ষা পেতে এ কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায় : ভারত আমাদের গণতন্ত্রকে নষ্ট করেছে। নদীকে হত্যা করেছে। প্রাণ প্রকৃতি জীব বৈচিত্র সবকিছু পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে ফারাক্কা আর গজলডোবা দিয়ে। আমাদের দেশের উপর গজব নামিয়েছে। আমাদের সবকিছুর উপর দাদাগীরি করছে। এদের বন্ধুরা ক্ষমতায় রয়েছে। দেশে এখন চলছে কর্তৃত্ববাদী শাসন। এদের লুটপাটের কারণে মানুষ এখন ভিক্ষুকে পরিনত হচ্ছে। এদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর সময় নেই। ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গতকাল রাজশাহীতে ফারাক্কা লংমার্চের ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে ফারাক্কা লংমার্চ উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাজশাহীর পদ্মার তীরে লালনশাহ মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী যুগস্রষ্টা ও দূরদর্শীসম্পন্ন মানুষ। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে পাশের মাদ্রাসা ময়দান থেকে ফারাক্কার বিরুদ্ধে লাখো মানুষের লংমার্চ নিয়ে চাপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত গিয়েছিলেন। লাখো কন্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন মরণবাঁধ ফারাক্কা ভেঙ্গে দাও। গুড়িয়ে দাও। তিনি রাজশাহীর এ রাস্তাটির নাম মওলানা ভাসানী সড়কের দাবি জানান।
তিনি বলেন, দেশে আজ সুশাসন নেই। দেশের অবস্থা বড় করুণ। দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে। টিসিবির লাইনে আজ মধ্যবিত্তরাও দৌড়াচ্ছেন। দেশের মানুষকে ভিক্ষুকের দেশে পরিনত করেছে। সরকার দেশে মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে। শুধু জামাত নয় আওয়ামীলীগও মানবতা বিরোধী অপরাধে দুষ্ট। সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন কান পেতে শুনুন দেশের মানুষ আজ কত বিক্ষুব্ধ। মানুষ যে কোন সময় ক্ষোভে ফেটে পড়বে। মানুষের ধর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। পাশের দেশ শ্রীলংকার দিকে তাকিয়ে দেখুন এখানে কিভাবে জাতীয় বীর জাতীয় বেঈমান হয়ে গেলো। শ্রীলংকাকে দেখে শিখতে হবে। আমাদের সামনে কঠিন সময় আসছে। সুসাশন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে ভারতের তাবেদারী থেকে রক্ষা পেতে এ কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। কল্যাণকর বাংলাদেশের যে স্বপ্ন মওলানা ভাসানী দেখতেন, বঙ্গবন্ধু দেখতেন সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে।
বিশিষ্ট নদী গবেষক ফারাক্কা লংমার্চ উৎযাপন কমিটির আহবায়ক মাহবুব সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী মু.ইনামুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক যোনায়েত সাকী, আজাদ খান ভাসানী, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এ্যাড. এনামুল হক, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাবি অধ্যাপক জিএম শফি, ডা. ওয়াসিম হোসেন, জাহান পান্না, এ্যাড. মুরাদ মোর্শেদ,আবু ইউসুফ মো: সেলিম প্রমুখ।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী যোনায়েদ সাকী বলেন, ১৯৭২ সালে এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এখন বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে ফের শুরু হয়েছে কর্তৃত্ববাদী শাসন। নির্বিচারে চলছে খুন, গুম। প্রতিবাদ করলে নিখোঁজ হয়ে যেতে হচ্ছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই।
তিনি বলেন, ভারতের সাথে নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারনে পদ্মার ও তিস্তার পানির নায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনা। জাতি আজ দুর্বৃত্তদের পালাবদলের ক্ষমতায়নের দু:শাসন থেকে মুক্তি চায়। দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার এখনি সময় ।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান,
নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে টাঙ্গাইলে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের ৪৬তম দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইল সাধারণ গ্রন্থাগারে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিংঘের সাবেক পানি বিশেষজ্ঞ ড. এস আই খান।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খন্দকার নাজিম উদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সৈয়দ ইরফানুল বারী ও ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানুসহ প্রমুখ।
এ সময় আলোচকরা বলেন, গঙ্গা নদীর বুকে দেওয়া ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে ভাটিতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষ সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের আরও প্রায় চার কোটি মানুষ ও এক-তৃতীয়াংশ এলাকা সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। আরও নানামুখী ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের। এ অবস্থার জন্য যারা দায়ী তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারসহ সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকালে ন্যাপ ভাসানী ও ভাসানী পরিষদের পক্ষ থেকে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে মাজারে দোয়ার আয়োজন করা হয়।
১৯৭৬ সালের এই দিনে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দান থেকে শুরু হয় লংমার্চ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে গিয়ে শেষ হয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে মওলানা ভাসানী এ লংমার্চ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।