ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি হলে শিক্ষার্থীকে সান্ধকালীন কোর্স নিয়ে ভাবতে হবে না এমনটিই বলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ আলী রেজওয়ান তালুকদারের বিরুদ্ধে। বিভাগটির সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থ ইংরেজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে বিচার দাবি করেন। গত বুধবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোঃ আবু তাহের ও ইংরেজি বিভাগের প্রোগ্রাম পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রী সান্ধকালীন কোর্সের অধীনে পরীক্ষা দিতে বিভাগে আসেন। পরীক্ষা চলাকালীন সময় তাদের সবার ফোন জমা রাখতে বলা হয়। একথা শুনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ছাত্রী মোবাইলসহ ভ্যানিটি ব্যাগ বাহিরে রাখে এবং পরিক্ষা শেষে ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দেখে মোবাইলের সিম অদল বদল করা এবং মেমোরি কার্ডের জায়গায় নষ্ট একটি মেমোরি কার্ড লাগানো থাকে৷
বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষককে ফোন করলে তিনি ফোন তুলেননি। তখন আমি বুঝতে পারি শিক্ষকের অনেক অনৈতিক প্রস্তাবে আমি রাজি না হওয়ার তথ্য এ মোবাইলে ছিলো। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি অভিযোগ করি। অভিযোগগুলো হলো শিক্ষার্থীকে সরাসরি অনৈতিক প্রস্তাবের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় বিভাগের নিজস্ব রুমে এমনকি শহরে তাহার নিজস্ব বাসায় যাওয়ার জন্য বলেছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি হলে শিক্ষার্থীকে সান্ধকালীন কোর্স নিয়ে ভাবতে হবে না। ছাত্রী অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারনে উক্ত শিক্ষক ছাত্রীর মোবাইলে অনেক ডকুমেন্ট ছিল বিধায় সেই প্রমানগুলো নষ্ট করার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক সবকিছু মুছে দিয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। এছাড়াও অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর পরিবার বিষয়টি নিয়ে সমস্যায় আছে বলে জানানো হয় অভিযোগে।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী জানান, বিভাগীয় প্রধান প্রথমে আমাকে সিআর হিসেবে নির্বাচন করে। এবং বিভিন্ন সময় আমাকে রুমে ডাকতেন। এরুম ছাড়াও আমাকে ব্যক্তিগত রুমে ও শহরের বাসায় ডাকতেন। সেই সাথে বিভিন্ন ভাবে এড়িয়ে যেতাম। পরবর্তীতে আমাকে প্রলোভিত করার জন্য বিভিন্ন মেসেঞ্জার থেকে হোয়ার্টস এপে ডাকত ও ব্যক্তিগত অনেক কিছু বলতো। আমি তার বিষয়গুলোতে সাড়া না দেওয়ায় আমার ফোন থেকে সব নিয়ে মুছে দেয়। শিক্ষার্থী আরো জানান, 'আমি এবিষয়ের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি করছি। আশা করছি প্রশাসন বিষয়টা আমলে নিবে।'
এর আগেও অভিযুক্ত শিক্ষকের নামে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি এবং ডরমেটরিতে শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। পরিক্ষার খাতা দ্বিতীয় পরিক্ষকের কাছে না পাঠিয়ে নিজেই দেখা ফেলার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগেও শাস্তি দেওয়া হয়েছিলো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইংরেজি বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী জানান, 'আমাদের বিভাগীয় প্রধান এর আগেও বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে রাত কাটানোর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া খাতা দেখা নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগে খাতা দেখা নিষিদ্ধ ছিলো।'
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ আলী রেজওয়ান তালুকদার বলেন,‘আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ যেহেতু দেওয়া হয়েছে তা প্রমাণ করার বিষয়। প্রমাণ করলে বিষয়টি বুঝা যাবে।’
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইংরেজি বিভাগের প্রোগ্রাম পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। প্রেগ্রামের সাথে যারা আছেন সবাইকে নিয়ে বসে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।