দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
মহান রাব্বুল আলামীন মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে। মানুষের দৈহিক কাঠামো মস্তিষ্কের গঠন ও চিন্তাশক্তি এবং কর্মকৌশল সবকিছুই অতুলনীয়। এ মর্মে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন আমি মানুষকে অতীব উত্তম কাঠামোয় সৃষ্টি করেছি। (সূরা আত তীন : ৪)। মানুষের এ শ্রেষ্ঠত্বের পৃথিবীতে তাঁর দায়িত্বও সবচেয়ে বেশি। মানুষকে পবিত্র কুরআনুল কারীমে খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মানুষকে যে চিন্তা তথা ইচ্ছার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে এর দ্বারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত বা দাসত্ব করাÑযার দ্বারা বুঝায় আল্লাহ প্রদত্ত বিধান জমিনে বাস্তবায়নের যোগ্য মাখলুক হিসেবে গড়ে তোলা। এ মর্মে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেনÑ আর তাদেরকে এছাড়া অন্য কোনো হুকুমই দেয়া হয় নাই যে, তারা আল্লাহর বন্দেগী করবে- নিজেদের দ্বীনকে তাঁরই জন্য খালেস করে সম্পূর্ণরূপে একনিষ্ঠ ও একমুখী হয়ে, আর সালাত কায়েম করবে ও জাকাত দেবে। মূলত এটাই অতীব সত্য সঠিক ও সুদৃঢ় দ্বীন (তথা জীবনব্যবস্থা)। (সূরা বাইয়্যেনা : ৫)
বর্ণিত আয়াতে শারীরিক তথা আনুষ্ঠানিক ইবাদতের সাথে আর্থিক ইবাদতের প্রতিও তাগিদ প্রদান করা হয়েছে। মানুষের শ্রম ও অর্থ এ দুটোর কুরবানী দ্বারাই আল্লাহর প্রকৃত বান্দাহ হবার সুযোগ মানুষ পেতে পারে।
পৃথিবীতে মানুষ এসেছে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের মাধ্যমে। নিজদেরকে আল্লাহর প্রকৃত বান্দাহর পরিচিতি তুলে ধরা। এ মর্মে আল্লাহ রাব্বুল আলআমীনের ঘোষণা হে বিশ্বাসীগণ! আমি কি তোমাদেরকে সে ব্যবসায়ের কথা বলে দেবো যা তোমাদেরকে পীড়াদায়ক আজাব থেকে রক্ষা করবে (সূরা ছফ : ১০)। পরবর্তীতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেনÑ তোমরা ঈমান আনবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি, আর সংগ্রাম করবে আল্লাহর পথে নিজেদের মালসম্পদ ও নিজেদের জানপ্রাণ দ্বারা, এটাই তোমাদের জন্য অতীব উত্তম (সূরা ছফ : ১১)। বর্ণিত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের সাথে সাথে জানমাল দ্বারা বিরামহীন সংগ্রামকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠতম ব্যবসা তথা উপায় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ পরবর্তী আয়াতেই এ সংগ্রামের প্রতিদান হিসেবে আল্লাহর বান্দাহর অপরাধ ক্ষমাসহ জান্নাতে প্রবেশের ব্যবস্থা ও সেখানে বিভিন্ন উপভোগ্য সামগ্রী প্রাপ্তির সুসংবাদ দান করেছেন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে সংগ্রাম যাকে পবিত্র কুরআনুল কারীমে জিহাদ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে তার একটি দিক হলো আল্লাহর দ্বীনকে পৃথিবীতে বিজয়ী করার লক্ষ্যে দ্বীন প্রত্যাখ্যানকারী কাফির মুশরিক ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। অপরদিকটি হলো মজলুম জনতাকে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনা তথা জালেমদের হিংস্র থাবার করাল গ্রাস থেকে মুক্তির লক্ষ্যে আপসে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। এ সম্পর্কে রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনুল কারীমে তার ভাষণে উলেখ করেছেন যে, শোনন মুমিনগণ! তোমরা ওইসব নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য কেন লড়াই করছো না যারা অত্যাচারিত হয়ে আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করছে হে রব! আমাদেরকে এ অত্যাচারী জনপদ থেকে বের করে নাও কিংবা তোমার পক্ষ থেকে (এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য) সাহায্যকারী পাঠাও। আমি এতক্ষণ যে বিষয় আলোচনা করলাম তার সাথে লাইলাতুল কদর ও ই’তিকাফের কি সম্পর্ক রয়েছে এ ধরনের প্রশ্ন আসা খুবই স্বাভাবিক। এ জবাব হলো মুসলমানদের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক আন্তর্জাতিকসহ যাবতীয় কাজ আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার বিধান ও মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ মোতাবেক আবর্তিত হলে সব কিছুই আল্লাহর ইবাদতে পরিণত হবে এবং সবগুলোই রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের উছিলা হবে বলে বিশ্বাস করতে হবে।
পৃথিবীতে মানুষকে খিলাফাতের দায়িত্ব পালন করতে হলে আল্লাহর সৈনিক হিসেবে যোগ্য করে গড়ে তোলার নিরন্তর প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। খলিফা হিসেবে মানুষ তার তৎপরতায় যত দক্ষতাই প্রদর্শন করুক না কেন আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সে কোনোক্রমেই সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে পারবে না। আর আল্লাহর সাহায্য পেতে হলে বান্দাহকে একান্তভাবে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং তার উপায় হলো নিরিবিলি পরিবেশে সালাত ও তাসবিহির মাধ্যমে কাকুতি-মিনতি সহকারে খালেসভাবে রাব্বুল আলামীনের কাছে নিজকে উপস্থাপন করা। মানুষকে দিবসে সূর্যের আলোকে যেমন দৈহিক শক্তির দ্বারা প্রাণান্তরকরভাবে আল্লাহর দেয়া বিধান বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাতে হবে তেমনি রাত্রে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে সাহায্যের জন্য ধর্ণা দিতে হবে। বিশ্বনবী (সা.)-এর উম্মত হিসেবে এ দায়িত্ব পালনের অপরিহার্যতা সর্বাধিক। পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা মহানবী (সা.)-এর সঙ্গীদের বৈশিষ্ট্য এভাবে বর্ণনা করেছেনÑ মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল, আর যেসব লোক তাঁর সঙ্গে রয়েছে তারা কাফিরদের প্রতি শক্ত, কঠোর এবং পরস্পর পূর্ণ দয়াশীল। তোমরা তাদেরকে রুকুতে, সিজদায় ও আল্লাহর অনুগ্রহ এবং সন্তুষ্টির সন্ধানে আত্মনিয়োগ দেখতে পাবে। সিজদাসমূহের চিহ্ন তাদের মুখাবয়বে ভাস্বর হয়ে আছে যার দ্বারা তারা স্বতন্ত্রতাসহ পরিচিত হয়, তাদের এগুণ পরিচিতি তাওরাত ও ইঞ্জিলে উল্লেখ রয়েছে। (সূরা ফাতহ : ২৯)।
পবিত্র কুরআনুল কারীমের ভাষণে এ কথাটি সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের সংগ্রামে মুমিনগণ যেমন আপসহীন তথা লৌহ কঠিন প্রাচীর সদৃশ্য তেমনি অবসর তথা আল্লাহর দরবারে নম্র ও বিনয়ের অতুলনীয় দৃষ্টান্তের প্রতীক হিসেবে আল্লাহর কাছে এ কর্মকা-ের দ্বারা মুসলিমগণ নিজেদের সওয়াবের ভা-ার সমৃদ্ধ করতে বিরতিহীন প্রচেষ্টায় মগ্ন থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। প্রিয় পাঠকবৃন্দ আসুন আমরা মূল আলোচ্য বিষয়বস্তুর এখন গভীরে প্রবেশ করি। পূর্ব জামানার তুলনায় মহানবী (সা.)-এর উম্মতগণের হায়াত বা আয়ুষ্কাল খুবই কম। পূর্ব কালের পয়গম্বরগণের উম্মতদের হায়াত ছিল অনেক বেশি। ওই সময়ের অনেক মর্দে মুজাহিদও আবেদগণ শত শত বছর আল্লাহর পথে সংগ্রাম ও রাত্রে দাঁড়িয়ে সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন তথা সওয়াব লাভের চেষ্টা করতেন। মহানবী (সা.)-এর দরবারে এ সমস্ত বিষয় আলোচনা হতো। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নেশায় উদগ্রীব সাহাবী কেরামগণ পূর্ব জামানার দীর্ঘ হায়াতপ্রাপ্ত আবেদগণের তুলনায় নিজদের স্বল্পায়ুর জীবনের ইবাদতকে নগণ্য মনে করতে লাগলেন। এ বিষয়টির প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার মহানবী (সা.)-এর উম্মতগণকে আশ্বাস করার লক্ষ্যে তাদের জন্য সুসংবাদ সম্বলিত সূরা কদর নাজিল করেন। মহান রাব্বুল আলামীন এ সূরায় তার ভাষণ এভাবে দান করেনÑ আমি এ (কুরআন) কদরের রজনীতে নাজিল করেছি, তুমি কি জান কদরের রজনী কি? কদরের রাত্রি হাজার মাস হতেও অধিক উত্তম। ফেরেশতা ও রূহ এ (রাতে) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সমস্ত হুকুম নিয়ে অবতীর্ণ হয়। সে রজনী পুরোপুরি শান্তি ও নিরাপত্তার (যার স্থিতি) ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত (সূরা কদর)। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এ সুসংবাদ দ্বারা বিশ্বনবী (সা.)-এর উম্মতদেরকে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী করেছেন। এ মর্মে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও ঘোষণা করেনÑ আমি উহাকে (কুরআন) এক বড় কল্যাণময় ও বরকতপূর্ণ রজনীতে নাজিল করেছি। কেননা আমি লোকদেরকে সাবধান করবার ইচ্ছা করছিলাম (সূরা দুখান : ৩)। এরপর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেনÑ উহা ছিল সে রজনী যাতে প্রত্যেকটি নির্দেশে প্রকাশ করা হয়ে থাকে (সূরা দুখান : ৪)। বর্ণিত আয়াতও লাইলাতুল কদরের মর্যাদা সম্পর্কিত বিষয়েই আলোচনা করা হয়েছে বলে মশহুর তাফসীরকারকগণ উলেখ করেছেন। বর্ণিত আয়াতে এরাতে মানুষের ভাগ্যের ফায়সালার ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সিদ্ধান্তের বিষয়ও উলেখ রয়েছে।
লাইলাতুল কদরের যে ফাজায়েল পবিত্র কুরআনুল কারীম ও হাদীস গ্রন্থসমূহে বর্ণনা করা হয়েছে তা অফুরন্ত। এ মর্মে মহানবী (সা.) থেকে একটি হাদীস হজরত আবু হুরায়রা (রা.) এভাবে বর্ণনা করেছেনÑ যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতেসাব (আত্মশুদ্ধি)-এর নিয়তে কদরের রজনীতে (সালাতে) দাঁড়ালো তার পূর্বেকার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় (সহিহ আল বুখারি, হাদীস নং-১৮৭১)
লাইলাতুল কদরের এ অঢেল সওয়াব তথা ফজিলতের রজনীতে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। এরমধ্যে যে অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো রয়েছে তার প্রথমটি হলো যে বিষয়টা পাবার জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে তা লাভের ব্যাপারটা দীর্ঘ তথা কঠোর সাধনার মাধ্যমেই অর্জন করতে হয়। দ্বিতীয়ত: মুমিনগণ যেন রাত্রি জাগরণ তথা আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দেয়ার স্থায়ী অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে নিছক কোনো সাময়িক বা অনুষ্ঠান সর্বস্ব ইবাদত না হয় সে দিকটার প্রতিও লক্ষ্য রাখার ব্যাপার বটে। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) ঘোষণা করেন ওই আমলটাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট পছন্দনীয় যা অব্যাহতভাবে করা হয়। জনৈক সাহাবী (রা.) আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর ইবাদত সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.)-কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন যে, মহানবী (সা.)-এর আমল এরূপ ছিল যা তিনি সবসময় করতেন, কখনো বাদ দিতেন না সহিহ আল বুখারি। লাইলাতুল কদরের উপস্থিতি যে মাহে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রজনীসমূহেই রয়েছে সে সম্পর্কে বহু সংখ্যক নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণিত আছে। এ মর্মে একটা হাদীস এ রকম হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুলাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশদিনের বেজোড় রজনীতে তালাশ কর (সহিহ আল বুখারি, হাদীস নং-১৮৭৪)
এখন আমি ই’তিকাফ সংক্রান্ত কয়েকটি কথা বলতে চাই। ই’তিকাফ মূলত বিশেষ স্থানে অবস্থান করে একাগ্রভাবে আল্লাহর স্মরণে নিমগ্ন হওয়া। ই’তিকাফের বিশেষ দু’টি দিক রয়েছে। প্রথমটি হলো ই’তিকাফ কাফের প্রধান লক্ষ্য হলো লাইলাতুল কদরের রজনীর যে অজগ্র ফাজায়েল রয়েছে তা লাভ করা। মাহে রমজানের শেষ দশকের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কিফায়ার মূল বিষয় লাইলাতুল কদরের মর্যাদাময় রাত যেন কোনোক্রমেই বাদ না পড়ে সে জন্য নিজকে নিয়োজিত করা।
এ সম্পর্কিত হাদীসগুলো মধ্যে একটি এ রকমÑ আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুলাহ (সা.) রমজানের মধ্যের দশদিনে ই’তিকাফ বসতেন। অতঃপর এক বছর তিনি (সে নিয়মে) ই’তিকাফে বসলেনÑ যখন একুশ তারিখের রাত আসলো। এটি এ রাত ছিল, যার ভোরবেলায় তিনি ই’তিকাফ থেকে বেরিয়ে আসলেন। তিনি বললেন যে, আমার সাথে ই’তিকাফ করেছে সে যেন শেষ দশদিনে ই’তিকাফ করেÑ কেননা এই (কদরের) রাত আমাকে দেখানো হয়েছে অতঃপরতা আমার থেকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে... (সহিহ আল বুখারি, হাদীস নং-১৮৮৫)। হাদীসের এ বক্তব্যে বুঝা গেল যে, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকের মধ্যেই রয়েছে যা নিরবচ্ছিন্নভাবে রাত্রি জাগরণের মাধ্যমে পেতে হবে। আর রমজানের ই’তিকাফ লাইলাতুল কদরকে অšে¦ষণের উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে যা মহলার মসজিদে ই’তিকাফ কারীগণ পালন করে থাকেন।
মাহে রমজানের এ ই’তিকাফ ব্যতিরেকে মান্নতের ই’তিকাফ থাকে ওয়াজিব ই’তিকাফ বলা হয় নফলও মুস্তাহাব ই’তিকাফ যা ই’তিকাফকারীর নিয়তের উপর নির্ভর করে। এ সমস্ত ই’তিকাফের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো মহান রাব্বুল আলামীনের সাথে গভীর সম্পর্ক বা ভালোবাসা সৃষ্টি করা। মানুষকে একদিন এ কোলাহলময় পৃথিবী ছেড়ে একাকিভাবে কবরের বাসিন্দা হতে হয়, সেখানে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া বিশ্বের কোনো প্রাণীর সাথে তার কোনোরূপ সম্পর্ক থাকবে না। এ বিষয়টাকে সামনে রেখেই মুমিনগণকে সাময়িকভাবে হলেও পরিবারের কোলাহলময় পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এক আল্লাহর নিকট ধর্ণা দেয়ার পরিবেশে প্রবেশ করা কর্তব্য। যেখান আল্লাহর বান্দাগণ তাকওয়া লাভ করে বিশ্ব সংসারে এক রবের বিধান বাস্তবায়নের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হতে পারে আর এটাই হলো আমার ই’তিকাফের দ্বিতীয় আলোচ্য বিষয়। এ মর্মে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন তাদেরকে তো আমার নিকটই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সূরা গাশিয়া : ২৫)। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদেরকে লাইলাতুল কদর ও ই’তিকাফের সওয়াব লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।