পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলার কৃষকদের জন্য আজন্ম লড়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য জন্ম নেওয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন কৃষি এবং কৃষককেই। ‘সোনার বাংলা’র শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলতে কৃষকদের নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে গেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। মহান বিজয়ের পর ৪৩ লাখ কৃষককে পুনর্বাসিত করেছেন; কৃষকদের খাজনা মওকুফ করেছেন, বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন দেড় লাখ গরু, সার, উন্নত বীজ, সেচ পাম্প। কৃষকদের মাঝে নামমাত্র সূদে ঋণ বিতরণের জন্য গঠন করেছেন ব্যাংক। প্রথম বাজেটেই এক পঞ্চমাংশ বরাদ্দ দিয়েছিলেন কৃষি খাতে।
বঙ্গবন্ধুর এই কৃষকবান্ধব অর্থনৈতিক দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন একজন ব্যাংকার; মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের জন্য নিয়েছেন এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে কৃষকদের মাঝে বিতরণ শুরু করেছেন বিনা সুদে কৃষি ঋণ।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে তারা যে প্রকল্পটা গ্রহণ করেছে, এটা যদি ফলপ্রসূ হয়, এবং স¤প্রসারিত হয়, তাহলে আমাদের দেশের অনেক কৃষক এর আওতায় আসবে এবং এটা দেখে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো উৎসাহিত হবে। এটা আমাদের কৃষিতে একটা বড় বিপ্লব নিয়ে আসবে।
রুপালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ‘মুজিব বর্ষের স্পর্শে স্পন্দিত রূপালী ব্যাংক’ উপলক্ষে ১ জানুয়ারি থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে টমোটো চাষীদের মধ্যে ‘জিরো কুপন লেন্ডিং’ কর্মসূচির আওতায় ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে ব্যাংকটি। পাইলট প্রকল্প হিসেবে নাটোরের ৫শ টমোটো চাষীকে ৫০ হাজার টাকা করে ঋণ বিতরণ করেছে রূপালী। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৯-২০ অর্থবছরের কৃষি ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী এই পরিমাণ ঋণ দিয়ে কৃষক ১ দশমিক ২৯ একর জমিতে টমোটো চাষ করতে পারবে।
রূপালী ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেছেন, প্রাথমিক প্রকল্প হিসেবে টমোটো চাষীদের ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। ক্রমন্বয়ে সারাদেশের সকল শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন কৃষি পণ্যের চাষীদের মাঝে বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করা হবে। আদা, হলুদ,পেয়াজ, আম চাষে বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করা হবে।
এই ঋণ প্রকল্পের নথি পর্যালোচনা করে দেখা দেছে, প্রতিটি ঋণের মেয়াদ থাকবে ছয় মাস। গ্রীষ্মকালীন টমোটো ও রবি টমোটো চাষের জন্য বছরে দুইবার ঋণ বিতরণ করবে ব্যাংকটি। রবি চাষের জন্য ১৫ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর এবং গ্রীষ্মকালীন চাষের জন্য ১ ফেব্রæয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই ঋণ বিতরণ করা হবে। রবি চাষের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে হবে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এবং গ্রীষ্মকালীন সময়ের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে হবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে।
এই ঋণ সহায়ক জামানতমুক্ত। তবে স্বামী বা স্ত্রী অথবা গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তি ঋণের জামিনদার হিসেবে থাকবেন। কৃষককে দশ টাকার কৃষক হিসাবের মাধ্যমেই ঋণ উত্তোলন ও পরিশোধ করতে হবে। উৎপাদিত টমোটো বিক্রির অর্থের মাধ্যমে দৈনিক বা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ঋণ বিতরণকারী শাখা কৃষকের দশ টাকার হিসাব থেকে ঋণের টাকা আদায় করতে পারবে। ঋণ বিতরণকারী শাখা, জোনাল অফিসের প্রতিনিধি ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত টিম চারা রোপন থেকে শুরু করে ঋণ আদায় পর্যন্ত তদারকি করবেন বলে জানা গেছে।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমি জামালপুরে দেখেছি কৃষক দুই টাকা কেজি দরে টমোটো বিক্রি করছে। অথচ ক্রেতা সেই টমোটো কিনছে ১শ টাকা কেজিতে। এজন্যই আমি কৃষকদের মাঝে বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করে একদিকে তাদেরকে দাদনদারদের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি, অন্যদিকে কৃষক ও ভোক্তার জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। ক্রমন্বয়ে সারাদেশের সকল শাখার মাধ্যমে আলু, পিয়াজ, আদা, হলুদ, আম সহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যে বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করবো।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন বাংলার এই বঞ্চিত কৃষক সমাজের জন্যই সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর এই কৃষকবান্ধব কর্মকাÐকেই আমরা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষুদ্র উদ্যোগ নিয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।