পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারা দেশে গত বছর ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৮৫৫ জন। এছাড়া সড়কে আহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৩৩০ জন। একই সময় ৪৮২টি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন ও আহত হয়েছেন ৭০৬ জন। নৌ পথে ২০৩ টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২১৯ জন ও আহত হয়েছেন ২৮২ জন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৩৭৫ জন যাত্রী। গতকাল যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়। তবে ১২টি কারণে এসব দুর্ঘটনা হয়েছে জানিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বছরের চেয়ে গত বছর প্রাণহানির ঘটনা ৮ দশমিক শূণ্য ৭ শতাংশ বেড়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি জানান, গত বছর জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষ্টন করে দুর্ঘটনার তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল আগের বছরের প্রায় সমান। কিন্তু ২০১৮ সালের তুলনায় গত বছর প্রাণহানি বেড়েছে ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর সড়কে ৯৮৯ জন চালক, ৮৪৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮০৯ জন শিক্ষার্থী, ১১৫ জন শিক্ষক, ২১৬ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৮৯৪ জন নারী, ৫৪৩ জন শিশু, ৩৬ জন সাংবাদিক, ২৬ জন চিকিৎসক, ১৬ জন আইনজীবী ও প্রকৌশলী এবং ১৫৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ২৪ জন সেনা সদস্য, ৫৩ জন পুলিশ ও র্যাব সদস্য, ৩ জন বিজিবি সদস্য, ১ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী, ১ জন নৌ-বাহিনীর সদস্য, ৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৬ জন সাংবাদিক, ৫৮২ জন নারী, ৪৪৭ জন শিশু, ৪৭৪ জন শিক্ষার্থী, ৮১ জন শিক্ষক, ৬৯১ জন চালক, ৩৫৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯ জন প্রকৌশলী, ৫ জন আইনজীবী, ১১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ২৫ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত বছর ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় মোট ৭৩৫৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। যার ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ বাস, ২৯ দশমিক ৮১ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৫ দশমিক ২২ শতাংশ কার, জীপ ও মাইক্রোবাস, ৯. দশমিক ৩৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২১ দশমিক ৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৮ দশমিক ০৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদন বলা হয়েছে, গত বছর ৫৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ দুর্ঘটনা মুখোমুখি সংগঠিত হয়েছে। খাদে পড়ে ১৮ দশমিক ০৭ শতাংশ, বিবিধ কারণে ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ, শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে এবং শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে আগের বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত যানবাহনের মধ্যে ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক রয়েছে। এছাড়া ১ দশমিক ৫২ শতাংশ নসিমন-মাহিন্দ্র- লেগুনা, ১ দশমিক ১৩ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-লরি, শূণ্য দশমিক ০৭ শতাংশ বাসে দুর্ঘটনার হার বেড়েছে। তবে মোটরসাইকেলে হেলমেট বাধ্যতামূলক করায় ও মোটরসাইকেল চলাচলে নজরদারি বৃদ্ধি করায় ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে। এছাড়াও ২ দশমিক ৭১ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা শূণ্য দশমিক ২৬ শতাংশ দুর্ঘটনা আগের বছরের তুলনায় গত বছর কম হয়েছে। ২০১৯ সালে ১৫ জুন সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়। এইদিনে ৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ১২১ জন আহত হয়। এই বছর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৪ জুলাই। এই দিনে দুইটি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত হয়। এই বছর একদিনে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় গত ৫ জুন, এই দিনে ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত ও ৯৩ জন আহত হয়। একইবছর সবচেয়ে বেশি আহত হয় ১৫ আগষ্ট, এই দিনে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ২২১ জন আহত।
সড়ক দুর্ঘটনার ১২ কারণ: ১২ করণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- বেপরোয়া গতিতে গাড়ী চালনা, বিপদজনক অভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ক্রটি, ফিটনেস বিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ছোট যানবাহন বৃদ্ধি। তবে সড়ক দুর্ঘটনা রোগে যাত্রী কল্যাণ সমিতি কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবদুল হক, ড্রাইভারস ট্রেনিং সেন্টারের চেয়ারম্যান নূরনবী শিমু, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মো. তাওহিদুল হক, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবু সাঈদ খান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।