Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনৈক্যের জয় হয়েছে ব্রেক্সিটে

প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ ইয়ামিন খান
সম্প্রতি ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত হওয়া গণভোটের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেড়িয়ে গেল ব্রিটেন। গত ২৩ জুন অনুষ্ঠিত হওয়া গণভোটে ব্রিটেনের এক কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার ভোটার (৫১ দশমিক ৯ শতাংশ) ভোটার অংশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) না থাকার প্রশ্নে রায় দেয়। অপরদিকে ব্রেক্সিট বলে অভিহিত ১ কোটি ৬১ লাখ ৪১ হাজার ভোটার ইইউ থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার বিপক্ষে রায় দেয়। ভোট গণনার শুরুতে ইইউতে থাকার পক্ষে বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চললেও সময় যত গড়িয়েছে ব্রেক্সিটের পক্ষে এর পাল্লা হেলে পড়েছে। এদিকে ইইউ থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জুন রাত থেকে পাউ-ের দাম অস্বাভাবিক হারে পড়তে শুরু করে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানা গেছে।
১৯৮৫ সালের পর পাউ-ের এতবড় পতন আর হয়নি বলে জানিয়েছে মুদ্রাবাজার। আমরা জানি, ব্রিটেনের অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে কাটিয়ে ওঠার দরুন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ব্রিটেন ১৯৭৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়। ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে যেহেতু ব্রিটেনসহ ইউরোপের ২৮টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত সেহেতু এখানে সবাই সমানভাবে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়া সহজতর আবার এক দেশের পণ্য আরেক দেশের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে ব্রিটেন অসম্মতি প্রকাশ করেছে। আরেকটি বিষয় হলো এক সময়ে ব্রিটেন ইউরোপসহ পৃথিবীব্যাপী সাম্রাজ্য বিস্তার করে শাসন করেছে। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকলে বড় অর্থনৈতিক ক্ষতি আর সেই অর্থনৈতিক ক্ষতিটা হলো যে জার্মানি ও ফ্রান্স সম্মিলিতভাবে নতুন করে ইউরো মুদ্রা চালু করায় ব্রিটেনের পাউ-ের বড় দরপতন হতে শুরু হয়েছে। এই কারণে ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিট ক্যামেরন ২৩ জুন গণভোটের ঘোষণা করেছিলেন।
এখন যেহেতু ব্রিটেন বেরিয়ে গেল সেজন্য ইউরো ও পাউ-ের দাম কমবে আর ডলারের দাম বাড়বে স্বাভাবিক কারণেই। ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায়ের জন্য দায়ী হচ্ছে ভূগোল, চামড়ার রং, ভাষা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করা সৃষ্ট ভৌগোলিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। ইবলিস মানুষকে দিয়ে যে অন্যায়, অবিচার, অশান্তি, যুদ্ধ ও রক্তপাত করাবে বলে আল্লাহকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল তার মধ্যে তার প্রধান অস্ত্র হচ্ছে ভৌগোলিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তিতে মানবজাতিকে জাতি ও রাষ্ট্রে বিভক্ত করা। একটি প্রাকৃতিক নিয়ম যে ঐক্যে জয়, অনৈক্যে পরাজয়। ব্রিটেন এই প্রাকৃতিক নিয়মটি অমান্য করলো। নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থটি হাসিল করতেই ব্রিটেন অনৈক্য করেছে। অনৈক্য সৃষ্টিকারী মতবাদগুলো প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববাসীর জন্য বড় অন্তরায়। এই মতবাদগুলো যত তাড়াতাড়ি প্রত্যাখ্যান করে মানবজাতি আল্লাহর বিধান তাওহীদ মেনে নিয়ে এক পরিবারের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ হবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল হবে।
ষ লেখক : পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা থেকে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অনৈক্যের জয় হয়েছে ব্রেক্সিটে
আরও পড়ুন