পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বিএনপির দুই প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। গতকাল ছিল দুই সিটির নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন।
গতকাল বিকেল পৌনে ৩টায় রাজধানীর গোপীবাগে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি মনোনীত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। অন্যদিকে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেন উত্তর সিটি করপোরেশনের বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
মনোনয়নপত্র জমা শেষে মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা উচ্চ শিক্ষিত। দেশ এবং নগরের উন্নয়ন আমরা করতে পারব ইনশাআল্লাহ। বিএনপি আজ ঐক্যবদ্ধ। দেশে গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই। ঢাকাবাসী এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আজ ঐক্যবদ্ধ। বিজয় আমাদের নিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।
ইশরাক বলেন, বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের এনে ঢাকা শহরের উন্নয়ন করা কোনো ব্যাপারই ছিল না। গত ১২ বছরে যে অর্থ পাচার হয়েছে সেই অর্থ যদি দেশের অর্থনীতিতে থাকতো তাহলে শুধু ঢাকা নয় বাকি মেট্রোপলিটন সিটি আজ উন্নত শহর হতো। দেশ আজ অনেক এগিয়ে যেত কিন্তু সেটা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, একই নির্বাচন কমিশনের অধীনে ৩০ জানুয়ারি কেমন নির্বাচন হয়েছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। একজন প্রার্থী হিসেবে এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি কেমন আস্থা থাকতে পারে? এটা জাতির কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। তারপরও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের (নির্বাচন কমিশন) একটি সুযোগ এসেছে ভুল সংশোধনের। আশা করব, উনারা সেটা করবেন।
তিনি বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ভোট ডাকাতি হয়েছে। আগের দিন রাতেই ব্যালটে সিল মেরে ভোটের বাক্স ভরা হয়েছে। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, এটা জনগণ বিশ্বাস করে না। নির্বাচনের ন্য‚নতম পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে আমরা মনে করি না। এ নির্বাচন কমিশনের প্রতি ন্য‚নতম আস্থা অর্জিত হয়নি আমাদের।
নির্বাচন কমিশন চাইলে ইভিএম দিয়েও স্বচ্ছ করতে পারে, আবার ইভিএম ছাড়াও নির্বাচন স্বচ্ছ করতে পারে। এ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে আমাদের শঙ্কা রয়েছে। তবুও জনগণকে নিয়ে যেহেতু আমরা রাজনীতি করি, তাই আমরা এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছমনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মনোয়নপত্র জমা শেষে তাবিথ আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, সন্দেহ আমাদের একার না, সাধারণ জনগণের অনেক প্রশ্ন আছে। তারা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কি না, তাদের ভোট গণনা হবে কি না। এ কথাগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, বিতর্কিত নির্বাচন অতীতে হয়ে গেছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। অনেক অপরিস্কার জায়গা আছে। যেখানে প্রযুক্তি এবং ক্রয় তথ্য নিয়েও প্রশ্ন আছে। এগুলো নিয়ে আগামী দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, আপনারা অতীতেও দেখেছেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা অত্যন্ত সিরিয়াস। যত সমস্যাই আসুক, আমরা সবগুলোকে অতিক্রম করে চেষ্টা করবো এগিয়ে যেতে। শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবো। তার মানে এই নয়, যে ভুলগুলো হতে যাচ্ছে, সেগুলো আগে থেকে মেনে নেবো। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী, আগামী দিনগুলোতে সংলাপের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হবে। গত নির্বাচনের পর অনেক নির্বাচনে বিশেষ করে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আমরা শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলাম। অনেক অভিযোগ তুলেছিলাম, যেগুলোর একটাও আমলে নেয়া হয়নি ও তদন্ত করা হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তাবিথ আউয়াল বলেন, সেখানেও আমরা শেষ পর্যন্ত ছিলাম। যদিও দুঃখজনক- ভোটাররাও ভোট দিতে পারেননি, আর গণনা তো দরকারই ছিলো না। এবারও আমরা বলছি, নির্বাচন যদিও সুষ্ঠু হবে না, তাও আমরা গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রেখে চেষ্টা করছি এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তাবিথ আউয়াল বলেন, গত নির্বাচনে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো সেখানে আমাদের একটা প্রতিবাদ ছিলো। নির্বাচনটাকে আমরা বয়কট করেছিলাম। এটা ইলেকশনের দিন। আমরা চেষ্টা করেছিলাম একদম শেষ পর্যন্ত থাকতে। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত এই ইলেকশনে থাকবো। এবং শেষটা দেখেই ছাড়বো। ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে আমরা যে আশঙ্কা তুলে ধরেছি, নিশ্চয় ইলেকশন কমিশন আমাদের সঙ্গে বসবেন। আমরা আশাবাদী বসার মাধ্যমে আমরা কনভিন্স করতে পারবো, ইভিএম ব্যবহার যেন না হয়। আগামী দিনগুলোয় সংলাপে বোঝা যাবে, ইভিএম নিয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি হয়।
ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশন আরেকটি বক্তব্য দিয়েছে, যেটা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, যদি সবাই না চায়, তবে ইভিএম ব্যবহার করবে না। তাই এখানে কথা বলার একটা ফাঁক রয়েছে। তাবিথ বলেন, আমরা আগামীতে আবার টেকনিক্যাল টিম নিয়ে বসবো। যাদের খারাপ এক্সিপেরিয়েন্স আছে ইভিএম নিয়ে, তাদের সকলকে নিয়ে এসে ইলেকশন কমিশনে বসবো।
জনগণ আপনাকে কেন পছন্দ করবে- এ প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, জনগণ এখন অপেক্ষায় আছে, যে ভয়ভীতির দেশে বাস করছে, সেখানে তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটের অধিকার ফেরত পাচ্ছে কি না। আমরা একটা বিষয় পরিস্কারভাবে বলতে চাই, ইলেকশন বিগত দিনে অলরেডি বিতর্কিত হয়েছে। এখানে পুলিশ প্রশাসনের যে ভ‚মিকা ছিলো সেখানেও আমাদের অনেক আপত্তি আছে। ভোটারদের আপত্তি আছে। ভোটগণনা নিয়ে আপত্তি আছে। আগের দিনে ভোট হওয়াতে তা নিয়েও আপত্তি আছে। ইভিএম হল আরেকটা বিষয়, যেটা নির্বাচন কমিশন টেনে নিয়ে এসেছে নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে। ইভিএম সংখ্যা বাড়ানোর কথা তারা বলছে, কিন্তু কমানোর কথা বলছে না।
ইসি দাবি না মানলে নির্বাচনে থাকবেন কি না জানতে চাইলে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা আগাম কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে ইলেকশন কমিশনার বলে দিয়েছেন, সবাই যদি ইভিএম না চায়, তাহলে সেটা রাখবেন না। তার মানে কথা বলার একটা সুযোগ আছে। সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। ইলেকশনের রুলসে পরিস্কার বলা আছে, কোনো ক্যান্ডিডেট অথবা রাজনৈতিক দল যারা ইলেকশনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে , তারা যখন দরকার তখন সংলাপ করতে পারে। ওই অধিকার বিবেচনা করে আমরা সংলাপের দিকে এগিয়ে যাবো। মনোনয়নপত্র দাখিল করতে তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে আসেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।