পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেছেন, ভারতের নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএবি) বাংলাদেশকে আক্রান্ত করলে বিএনপি অবশ্যই কথা বলবে। পাশের দেশে অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে আমরা মাথা ঘামাতে চাই না। কিন্তু ওইখানে এমন আইন যদি পাস হয়, সে আইন যদি আমাকে আক্রান্ত করে, আমাকে যদি সমস্যায় ফেলে দেয় তাহলে তো সেই কথা বলার অধিকার অবশ্যই আমাদের আছে।
তিনি বলেন, আজকে তারা এনআরসি করেছে কোনো আপত্তি নেই আমাদের। সেই এনআরসিতে বাংলাদেশের মানুষের কথা বার বার বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশের মানুষ অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে। সেটা আমরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারি না। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে এই সরকার এ বিষয়ে কোনো রকমের গুরুত্ব দেয় না। গতকাল (শনিবার) দুপুরে গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, অলরেডি আসামে ১৯ লাখ অবৈধ বলেছে, আজকে সেটা নিয়ে খোদ ভারতে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে, বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তারা এই ধরনের ভারত দেখতে চায় না। যেখানে ধর্মে ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি হবে, সা¤প্রদায়িকতা সৃষ্টি হবে। আমরা খুব পরিস্কার করে বলতে চাই যে, আমরা সা¤প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি না। আমরা সকল ধর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, আমরা আমাদের মানুষকে অন্য দেশে পাঠিয়ে দিতে চাই না। সেখান থেকে অন্যায়ভাবে বাংলাদেশী নাম করে ফেরত পাঠানো হবে সেটা আমরা কোনো মতেই মেনে নিতে পারি না।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে এই সরকার এ বিষয়ে কোনো রকমের গুরুত্ব দেয় না। তাদের ব্যর্থতার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আর এই সরকার যে, এটা তাদের (ভারত) অভ্যন্তরীন বিষয়। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এখন বলছে, আমরা নেবো পুশ-ইন করবে যাদেরকে তাদের আমরা ফেরত নেবো। কী দুর্ভাগ্য। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে একটা দুযোর্গময় ভুখন্ডে পরিণত করতে চলেছে। একদিকে রোহিঙ্গা, অন্যদিকে এখন আমাদের বিরাট সীমান্ত দিয়ে যদি বাংলাদেশী বলে পুশ-বেক করা হয়- তাহলে এদেশের অবস্থা কী দাঁড়াবে আপনারা সহজে বুঝতে পারেন।
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দুর্নীতি চরম পর্যায়ে চলে গেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি জায়গায় তারা দুর্নীতি করছে। অন্যদিকে তারা পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশকে একটা গিনিপিগের মধ্যে পরীক্ষাগার তৈরি করছে। এটা আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন জোরদার করতে সকল দলের ঐক্যের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরাতে হবে। এজন্য আমরা শুধু ঐক্যফ্রন্ট নয়, অন্যান্য জোটগুলো নয়, আমাদের সমস্ত দেশের মানুষকে এক করে, দেশের সমস্ত গণতন্ত্র বিশ্বাসী দলগুলোকে এক করে লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। কারণ তিনি হচ্ছেন গণতন্ত্রের প্রতীক, সংগ্রামের প্রতীক। তাকে মুক্ত করে আমাদের সংগ্রাম জয় করতে সক্ষম হবে। আমরা বিশ্বাস করি আজকে আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হই, জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে কোনো স্বৈরশাসনই, কোনো একনায়কই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।
দেশের শাসনব্যবস্থা সংবিধান অনুযায়ী চলছে না বলে অভিযোগ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, পঞ্চাশ বছর পরেও কেনো বলতে হচ্ছে যে, ক্ষমতা আমাদের ফিরিয়ে দাও। ক্ষমতা তো লেখা আছে সংবিধানে। কেনো আমাদের ক্ষমতা বেদখল হয়ে আছে। কেনো সেটা ভোগ করতে আমাদের দেয়া হচ্ছে না। কারণ এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত হতে দেয়া হয় না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে ড. কামাল বলেন, নির্বাচন নির্বাচন নির্বাচন করে যেন তারা মজা পেয়ে গেছেন। যে কোনো কিছুর জিনিসকে নির্বাচন বলেই এরপরে ভোট না দিয়েই মানুষকে বলা যায় যে, এই তো বৈধতা পেয়েছি, নির্বাচিত অমুক, নির্বাচিত তমুক। দেশের মানুষ তো অন্ধ না, দেশের মানুষের বিচার করার একটা ক্ষমতা আছে। আমি সবার কাছে বলি যে, যে কয়েক অনুষ্ঠানটাকে নির্বাচন বলে চালানো হয়েছে সেটা কী আমরা নির্বাচন হিসেবে মেনে নিতে পারি?”
কামাল হোসেন বলেন, সরকারকে বলব সোজা কথা- আপনারা নির্বাচন দেন। প্রথমে নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন করতে হবে, নির্বাচন কমিশন হতে হবে সৎ ও স্বচ্ছ। আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর হতে যাচ্ছে। এবার আসুন- জনগনকে সত্যিকার অর্থে ক্ষমতার মালিক হিসেবে দেখতে চাই।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘ মানুষের কোনো অধিকার নাই, এই রাত গেলে পরে যে রাত আসবে, সেই রাত (২৯ তারিখ) বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে কালো রাত। ওই রাতে বাংলাদেশের ১০ কোটি ভোটারের ভোট সমস্ত রাষ্ট্র মিলে লুট করে, ডাকাতি করে নিয়ে গেছে। একবছর ধরে আমরা তার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিবাদ করতে পারেনি, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।
তিনি বলেন, এই সরকার প্রধান এবং তার মন্ত্রী নিজেরা মাইকের সামনে টেলিভিশনের সামনে এসে বক্তৃতা করছেন এই বিরোধী দলের নেতারা কি বলে? ২৯, ৩০ তারিখ ভোট হয়নি। এর চাইতে সুন্দর ভোট কীভাবে হতে পারে। তাদের চেহারার মধ্যে কান্নার চেহারা। মনে হয় যেন কত কষ্ট পেয়েছেন যে, আমরা এই ভোটটা মানিনি। আমি তাদের কষ্ট আরো বাড়ানোর জন্য বলতে চাই, মানি না, মানব না। আজ মানিনি, কাল মানিনি, যত দিন পর্যন্ত তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারব, ততদিন মানবো না। এজন্যই আজকে রাত পোহালে যে রাত আসবে সেইদিন থেকে শুরু করবো প্রতিবাদ এবং ধীরে ধীরে প্রতিরোধ।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিকল্পধারার নুরুল আমীন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, জেএসডির তানিয়া রব, মো. সিরাজ মিয়া। অনুষ্ঠানে বিএনপির জয়নুল আবদিন ফারুক, গণফোরামের আবু সাইয়িদ, মহসিন রশিদও উপস্থিত ছিলেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।