পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম নগরবাসীর মাঝেও। রাজধানী ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের পালে যেন হাওয়া লেগেছে। ঘরে-বাইরে রাজনীতিক-নাগরিকদের মাঝে আলাপে-আড্ডায় চসিক নির্বাচনকে ঘিরে আলোচনা দিন দিন সরগরম হয়ে উঠছে। চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার সঙ্গে বন্দরনগরীর একাংশ (চান্দগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম ষোলশহর, পাঁচলাইশ, মোহরা) নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৩ জানুয়ারি। সবার জোরালো ধারণা এরপরই শুরু হবে সিটি নির্বাচনের তোড়জোড় প্রস্তুতি।
বর্তমান চসিকের মেয়াদকাল, সামনে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষির্কী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন, মাহে রমজান ও পবিত্র ঈদুল ফিতর, বর্ষাকালসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ-প্রবণ সময় ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) চসিক নির্বাচনের সুবিধাজনক তারিখসহ সিডিউল ঘোষণা করবে। চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচনের পরপরই এ নিয়ে সক্রিয় চিন্তাভাবনা এবং আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি শুরু করবে ইসি। তবে প্রাথমিক প্রস্তুতি আগে থেকেই চলে আসছে এমনটি জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ। আভাস মিলেছে আসছে বছর ২০২০ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে অথবা জুন-জুলাই মাসে চসিক নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে চসিক নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা যখনই আসুক, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তরের সিটি নির্বাচন এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচনের হাত ধরে বন্দরনগরীতে ভোটের আলোচনায় তৃণমূল রাজনীতি জমে উঠছে। পৌষের শীতে চায়ের আসরে এপিঠ-ওপিঠ ভোটের আলোচনাই মুখ্য। দুই প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের জোট বা মিত্রদের মাঝে চসিক নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়ে গেছে বিভিন্নমুখী কৌশলী হিসাব-নিকাশ।
প্রায় ২০ লাখ ভোটারের সমর্থন নিয়ে এবং ৬০ থেকে ৬৫ লাখ চট্টগ্রাম মহানগরবাসীর অভিভাবক অর্থাৎ সিটি মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীরা নেপথ্যে এবং প্রকাশ্যে তৎপর হয়ে উঠেছেন। বন্দরনগরীর বর্তমান ও সাবেক এমপি-মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতাদের কাছে গিয়ে সমর্থনের আশায় ঘন ঘন ধরনা দিচ্ছেন সিটি মেয়র পদে লড়াইয়ের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ঢাকায় গিয়েও শীর্ষ নেতাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
শুধুই মেয়র পদই নয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর মিলে ৫৫ জন কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঝে তোড়জোড় চলছে আরও আগেই। কাউন্সিলর পদে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যারা মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা প্রতিদিনই ছুটছেন মহানগর, কেন্দ্র ও জেলার প্রভাবশালী নেতাদের দুয়ারে।
আবার সমর্থনের পাল্লা ভারী করতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে টানছেন। অনেক জায়গায় পোস্টার ও ব্যানার টানানো হয়েছে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের ছবি সম্বলিত। এর মধ্যদিয়ে চসিক নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে ঝিমিয়ে থাকা রাজনীতির মাঠ ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কদর বেড়েছে। স্থানীয় দলীয় অফিসগুলোও সরগরম হয়ে উঠছে।
বিগত ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন মেয়র পদে বিজয়ী হন। ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আজম নাছির উদ্দীনসহ কাউন্সিলরগণ দায়িত্বগ্রহণ করে প্রথম সভা করেন। সেই তারিখ হিসাবে ধরে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট বর্তমান চসিকের পাঁচ বছর মেয়াদপূর্তি হতে যাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী মার্চ মাসে না হলেও জুন বা জুলাইয়ে চসিক নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪১টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এখন প্রায় ২০ লাখ। ২০১৫ সালে চসিক নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৪৯ জন। ২০১০ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৮ জন। ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ভোটার হালনাগাদ প্রক্রিয়ায় এবার নতুন প্রায় ১০ শতাংশ হারে দেড় থেকে দুই লাখ ভোটার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে আগামী চসিক নির্বাচনে মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সম্পর্কে পূর্ব প্রান্ত কালুরঘাট-মোহরা থেকে পশ্চিমে হালিশহর-কাট্টলী, উত্তরে দক্ষিণ পাহাড়তলী-ফতেয়াবাদ থেকে দক্ষিণে পতেঙ্গা পর্যন্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সবখানে আলোচনা-পর্যালোচনা, হিসাব-নিকাশ আর গুঞ্জনের শেষ নেই। অতীত এবং বর্তমান নাগরিক সেবা নগরবাসী কী পেয়েছেন আর তারা কী কী চেয়েছিলেন তারও হিসাব-নিকাশ চলছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিভিন্নমুখী তৎপরতায় এবং দলীয় নেতৃত্ব ও তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, আগামী চসিক নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের তরফ থেকে সিটি মেয়র পদটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী বা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে একাধিক নাম আসছে। তাদের মধ্যে আছেন বর্তমান মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, সাবেক মেয়র বিশিষ্ট সমাজসেবক এম মনজুর আলম, সাবেক মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন। মেয়র পদে একাধিক দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকারই সম্ভাবনা।
তবে মনোনয়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকেই। অন্যদিকে বিএনপি এবং জোটের পক্ষ থেকে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। বিএনপি চসিক নির্বাচনে আগ্রহী। দুই প্রধান দলের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ঘিরে যার যার সমর্থিত জোট, মিত্র ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর বলয় তৈরি হচ্ছে। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা গা-ঝাড়া দিয়ে উঠছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।