রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
জনবল সঙ্কটে ভুগছে ল²ীপুরের রামগতি উপজেলা কৃষি বিভাগ। এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৪০টি পদের মধ্যে ২২টি পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটি শূন্য রয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। এতে করে ‘সয়াবিনের রাজধানী’ হিসেবে খ্যাত কৃষি নির্ভর এ এলাকার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানের সুফল ভোগ করতে পারছেন না তারা। যে কারণে, অতিদ্রæত জনবল সঙ্কট নিরসন করে প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর। আর তালিকাভুক্ত কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার জন। দেশের সবচেয়ে বেশি সয়াবিন উৎপাদন এ অঞ্চলে হওয়ায় এটাকে ‘সয়াবিনের রাজধানীও’ বলা হয়। তাছাড়া আউশ-আমনসহ শাক-সবজি উৎপাদনেও পিছিয়ে নেই এলাকাটি। আর এসব দেখভালে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে উপজেলা কৃষি বিভাগে অনুমোদিত পদ রয়েছে ৪০টি। এগুলো হচ্ছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দু’টি, সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ২৫টি, প্রধান সহকারি, অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর দু’টি, স্প্রে মেকানিক, মোকাদ্দাম দু’টি, এমএলএসএস দু’টি ও নিরাপত্তা প্রহরীর দু’টি। এগুলোর মধ্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার একটি, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার ১৩টি, উচ্চমান সহকারি, অফিস সহকারির একটি, মোকাদ্দামের একটি, স্প্রে মেকানিকের একটি, এমএলএসএস’র দু’টি ও নিরাপত্তা প্রহরির একটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
এ জনবল সঙ্কটের কারণে স্বল্প সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদেরকে প্রকৃত সেবা বা পরামর্শ দিতে পারছেন না। তাছাড়া প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় কৃষি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প সঠিকভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে ফসল উৎপাদনে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
উপজেলার চরগাজীর উত্তর টুমচর এলাকার কৃষক মো. রুহুল আমিন জানান, ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার পদটিতে কেউ নেই। সঠিক সময়ে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। যে কারণে সেবা পেতে বিলম্ব হচ্ছে।
উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন জানান, ওই ইউনিয়নে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার তিনটি পদরে মধ্যে দু’টি শূন্য রয়েছে। ফলে তিনজনের কাজ তাকে একা করতে হয়।
তিনি বলেন, ‘তিনজনের কাজ একজন দিয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্ভব নয়। এতে কৃষকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ছালেহ উদ্দিন পলাশ বলেন, ‘কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি কৃষি বিভাগ কৃষক কার্ড থেকে শুরু করে সার, বীজ ও কৃষি উপকরণ বিতরণসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু চরম জনবল সঙ্কটের কারণে আমরা কৃষকদেরকে পুরোপুরি সেবা দিতে পারছি না।’
উপজেলা সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিজন কান্তি জানান, গত বছরের অক্টোবর মাসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুচ সোবহান পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হলে পদটি শূন্য হয়। সেই থেকে কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওই পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অন্য উপজেলা থেকে গিয়ে তিনি সপ্তাহে দুই দিন অফিস করার কারণে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মোর্কারম হোসেন ২৬ অক্টোবর থেকে ছয় মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণজনিত ছুটিতে রয়েছেন। সব মিলে এখানে অনেকগুলো পদ শূন্য থাকায় মাঠ কার্যক্রমসহ অন্যান্য কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খাঁন জানান, শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য অধিদপ্তরকে কয়েকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। পদগুলো নিয়মিত করতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।