Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দু’দলেই প্রার্থী সঙ্কট

ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি নির্বাচন

ফারুক হোসাইন/ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:১৯ এএম

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই ধরা হয় ঢাকার এই নির্বাচনকে। অতীতে ঢাকা সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই পাড়া-মহল্লা, ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডে বইতো নির্বাচনী হাওয়া। টঙ দোকান, চায়ের দোকান, রেস্টুরেন্ট, হাট-বাজারে সরগরম থাকতো নির্বাচনী আলোচনা। মাঠ চষে বেড়াতেন প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতেও লড়াই চলতো হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে। ব্যক্তিগত ইমেজ, দলীয় পদবী, জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে যেতেন একজন আরেকজনকে। তবে আসন্ন নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন। দুটি মেয়র পদে ভোটের মাঠে প্রধান দুই প্রতিদ্ব›দ্বী দলের প্রার্থী মাত্র ৫জন। অন্যান্য বার প্রতি দল থেকে মেয়র মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকতো অনেক নেতা। তবে এবার দু’দলেই মনোনয়ন প্রত্যাশী তেমন নেই। বলা যায় এবার বড় দুটি দলে প্রার্থী সঙ্কট চলছে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন উৎসাহ লক্ষ্য করা না গেলেও দুই দলের প্রার্থীরা ছুটছেন দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে। বিশেষ করে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা নিশ্চিত করতেই চলছে বেশি দৌড়ঝাপ। যদিও উত্তরে দুই দলের পুরনো প্রার্থীদের দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলামই এবারও দলীয় মনোনন পাচ্ছেন বলে দলটির সূত্রে জানা গেছে। এজন্য এই সিটিতে অন্য কেউ প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেননি। অন্যদিকে বিগত সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী, দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালকেই দেয়া হচ্ছে মনোনয়ন। আর দক্ষিণে আওয়ামী লীগের রয়েছে দুইজন প্রার্থী। আবারও মনোনয়ন চান বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন। পাশাপাশি দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরুও দৌড়ে এগিয়ে আছেন। যদি প্রার্থী পরিবর্তন হয় তার মনোনয় পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্যদিকে পরিবর্তন নিশ্চিত বিএনপিতে। ২০১৪ সালে দক্ষিণে মেয়র নির্বাচন করেছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এবার তিনি নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন আগেই। তাই এবার দক্ষিণে নতুন প্রার্থী দিচ্ছে বিএনপি। অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ মেয়র, রণাঙ্গণের গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনই দক্ষিণে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন সেটি প্রায় নিশ্চিত।
কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী আগ্রহ নেই বিএনপিতে: মেয়র পদের পাশাপাশি দুই সিটির ১২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে একই সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব ওয়ার্ডেও বিগত দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতো। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রতিটি ওয়ার্ডেই একাধিক প্রার্থী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একজন অপর জনের চেয়ে নিজের ক্লিন ইমেজ, নিজেকে যোগ্য এবং এলাকায় জনপ্রিয় হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন হাইকমান্ডের কাছে। অন্যদিকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন নিয়ে গত সিটি নির্বাচনেও যারা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই এবার নির্বাচনে আগ্রহী নন। দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা যোগাযোগ করেও সাড়া পাচ্ছেন না তাদের। এছাড়া দলের ক্লিন ইমেজ ও জনপ্রিয় প্রার্থীরাও প্রার্থী হতে যাচ্ছেন না আসন্ন নির্বাচনে। অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তারা বলছেন, প্রার্থী হওয়ার পরপরই শুরু হয় মামলা দেয়া, বাড়ি ঘরে করা হয় হামলা। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাও করতে দেয়া হয় না। প্রার্থী হয়েই ছাড়তে হয় বাড়ি-ঘর। এছাড়া দলের শক্তিশালী অবস্থান না থাকার কারণে তারা প্রার্থী হতে চাচ্ছেন না। ফলে দলের তৃতীয় স্তরের প্রার্থীদেরকেই এবার মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে বিএনপি
উদ্দীপনা নেই ভোটারদের: নির্বাচন এলেই প্রার্থীদের সাথে সাথে ভোটারদের মধ্যেই বিরাজ করে নির্বাচনী উৎসাহ-উদ্দীপনা। অথচ এবার তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা মেলেনি সেই চিরাচরিত নির্বাচনী আমেজ। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাত্যাশীদের পোস্টার চোখে পড়লেও অন্য দলের প্রার্থীরা নির্বাচন বিমুখ। ভোটারদের মধ্যেও নেই নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহ। ভোটারদের অভিযোগ গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাঁধা দেয়া, বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা করতে না দেয়াসহ নানা কারণেই তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই। তবে ইসি যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে এবং ভোটারদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে পারে যে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে তাহলে নির্বাচনী উৎসব দেখা যেতে পারে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ভোটের প্রতি মানুষের এই অনীহা এবং অনাস্থা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোর প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছে। ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে যদি ফলাফলে তার প্রতিফলন দেখতে না পান, তাহলে তিনি পরবর্তীতে আর ভোট দিতে যাবেন না এটিই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, যখন কোনও একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে মানুষ অংশগ্রহণ করে না, তখন সেই প্রক্রিয়ার ওপরে মানুষের আগ্রহ নেই বলে ধরে নিতে হয় এমনটা মনে করেন। মানুষ কেন নিজেকে এই প্রক্রিয়াগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবতে শুরু করলো, সেটাও যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন- এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমানে নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে মানুষের ভেতরে অনীহা আর অনাস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষ ভোট দিলে কিছু আসে যায় না, ভোট দিতে গেলে দিতে পারে না। এই যে ঘটনাগুলোর মধ্যদিয়ে তারা যখন যাচ্ছে, তখন অংশগ্রহণে অনাগ্রহী হয়ে উঠছে। এগুলো গণতান্ত্রিক অবস্থার জন্য অশনিসংকেত। জনগণের মধ্যে যদি সম্মতি সৃষ্টি না হয় সেটা গণতান্ত্রিক হয় না। রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার। কারণ, এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে কারোর জন্যই সুখকর হবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে জনগণের কোন আস্থা নেই। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত জনগণের আস্থার পরিবেশ তৈরী করতে পারেনি। তারা এক পাক্ষিক আচরন করছে। আমাদের সংগঠনকে নিবন্ধন দেয়ার ব্যাপারে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকার পরও এখনো নিবন্ধন দেয়া হয়নি। তাই দলগতভাবে আমাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোন সুযোগ নেই।
মনোনয়ন পেলেই জয় নিশ্চিত: আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণের মাঝে মেয়র প্রার্থীদের পরিবর্তনের চাহিদা রয়েছে। বিএনপির দুর্বল অবস্থানের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এখন চাঙ্গা। কিন্তু দলের মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবেন তা না হলে নির্বাচন করবেন না এমন মনোভাব প্রার্থীদের। ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রার্থীর পরিবর্তন হচ্ছে না এমন একটি গুঞ্জনের কারণে এই সিটিতে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী প্রচারণা বা নিজেকে প্রার্থী হিসেবেও ঘোষণা করছেন না নেতারা। গতবার সাবেক এমপি ডা. এইচ বি এম ইকবাল এবং ব্যবসায়ী আদম তমিজি হক ব্যাপক প্রচারণা চালালেও এবার তাদের মাঝে আগ্রহ দেখা যায়নি।
আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মেয়র প্রার্থীর পরিবর্তনের ব্যাপক গুঞ্জনের কারণে অনেকে প্রার্থী হবার মনোভাব প্রাকাশ করেছেন এবং ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারিং করেছেন। তবে শেষ মুহূর্তে সাঈদ খোকন আবারও মনোনয়ন পাবেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গণে নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা আছে। তাই প্রার্থীদের উচ্ছ¦াস কম। যদি কোন কারণে প্রার্থীর পরিবর্তন হয় তাহলে আওয়ামী লীগের নতুন আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু মনোনয়ন পেতে পারেন।
একটি সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন বলে ব্যাপক আলোচনা ছিল আওয়ামী লীগে। তাপস এ বিষয়ে আগ্রহী নন বলে জানা গেছে। তবে আইনজীবিদের পক্ষ থেকে নজিবুল্লাহ হিরুকে সমর্থন দেয়া হয়েছে মেয়র প্রার্থী হিসেবে।
এদিকে দলের মনোনয়ন পেলে জয় সুনিশ্চিত ভাবছেন মেয়র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে মেয়রদের সম্পর্কের দূরত্ব এবং অনেক ক্ষেত্রে দ্ব›দ্ব থাকলেও থাকলেও দলের মনোনয়ন পেলে সম্পর্ক যতই খারাপ হোক নেতাকর্মীরা দলের মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করবেন এবং প্রশাসনিক সহায়তা পাবেন বলে এমন মনোভাব রয়েছে মেয়র প্রার্থীদের। সে জন্য অনেক সমালোচনাকেই পাত্তা দেন না মেয়র প্রার্থীরা। দলের মনোনয়নই সব কিছু। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণে তারা পাশ করে যাবেন বলে আত্মবিশ্বাসী।
সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন এবং ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, দলের মনোনয়ন ও জয়ের ব্যাপারে তারা শতভাগ আশাবাদি। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু ইনকিলাবকে বলেন, যদি দলের মনোনয়ন পান তাহলে নির্বাচন করবেন।
বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বাচনের বিপক্ষে: ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিলেও নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্ব›েদ্ব বিএনপি। দলটির নেতাকর্মীরা মনে করেন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে যখন দল আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঘোষণা সেই প্রস্তুতিকে বাঁধাগ্রস্ত করবে। তারা মনে করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন যে সুষ্ঠু হয় না তার নজির অতীতে অসংখ্যবার হয়েছে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন ব্যাতীত অন্য যেকোন নির্বাচন, তাও আবার শেখ হাসিনার অধীনে, যেন এক মায়াজাল, ধোকা এবং শেখ হাসিনার জন্য লাইফ সাপোর্ট। তা ডাকসু নির্বাচনই হোক আর ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনই হোক। তিনি বলেন, হায়ার বড়ই অভাব, এখনো অনেক লোক শেখ হাসিনার অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশায় প্রার্থী হয়।
আবু বকর সিদ্দিক টিপু নামে বিএনপির এক কর্মী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের কোন খবর নাই। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে ব্যবসা চলছে। নির্বাচন এলেই জমজমাট হয়ে ওঠে এই ব্যবসা। আফসোস হয় বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। যদি দলে এমন নেতা রেখে গেছেন!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, দলের নেত্রী অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে বন্দী রয়েছেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, জামিন দেয়া হচ্ছে না। নেতারা তার মুক্তির আন্দোলনের বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করে নির্বাচন নিয়ে পাগল পাড়া হয়ে পড়েছেন। দলের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
উত্তর ও দক্ষিণের মনোনয়ন বোর্ডে থাকা দুই সিনিয়র নেতাও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এখন আমাদের উচিত দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন না করা। তা না করে নির্বাচনে ফাঁদে পা দিয়েছেন সিনিয়র নেতারা। তারা বলেন, এই নির্বাচন কি হবে তা কি তারা জানেন না। অতীতে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকেও কি তারা শিক্ষা নেন নি।
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু বলেন, উত্তরে যদি ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। কিন্তু অতীত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বলে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে না। এমনিতেই কেন্দ্র দখল, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাঁধা দেয় সরকার দলীয়রা। এর সাথে নতুন করে আবার ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে ইসি। ইভিএম এমনিতেই বিতর্কিত হয়ে গেছে। সেখানে যান্ত্রিকভাবে কি করে রাখবে বলা মুশকিল। তিনি বলেন, সরকার এবং ইসির সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ ভোটারদের মধ্যে আস্থা তৈরি করা যে তারা ভোট দিতে পারবে এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিসাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বলেন, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে এতোটাই বিতর্কিত করেছে যে, এখন মামলা, হামলার ভয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীরাও প্রার্থী হতে চায় না। কারণ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরই শুরু হয়ে যায় নতুন নতুন মামলা, বাড়িঘরে হামলা, গ্রেফতারের ঘটনা। নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনভাবেই সম্ভব হয় না। ###



 

Show all comments
  • Mashud Alam Bitu ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
    আমরা নির্বাচন চাই না, নির্বাচনের নামে যেই টাকা গুলো খরচ করা হবে, সেই টাকা দিয়ে শহরের যানজট নিরসনের জন্যে কাজ করা হোক!
    Total Reply(0) Reply
  • Payer Ahmed Sumon ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
    আওয়ামীলাীগ থেকে যেকোনো একজনকে প্রার্থী করলেই সে জয়লাভ করবে, কারণ তারা তো অন্য কোন প্রার্থীকে ভোট দিতে দিবে না, তারা ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের মতই রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলবে, সুতরাং নির্বাচনের নামে তামাশা করে জনগণের টাকা নষ্ট করে লাভ নাই , আওয়ামীলীগ থেকে একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করে দিলেই হয়।।
    Total Reply(0) Reply
  • Sakib Ahmed ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
    নির্বাচন কমিশনার একবার যদি বাংলাদেশের সুষ্ঠুভাবে ভোট দেয় তাহলে নিশ্চিত ঢাকা সিটি মেয়র বিএনপি দলীয়ভাবে বিপুল ভোটে জিতবে
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
    অজথা এই নির্বাচন নাটক করে , কার লাভ হবে?? টাকা অপচয় না করে রাস্তার কাজে খরচ করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • S M Nazraton Nayeem ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    বাংলাদেশে এখন নির্বাচন হয়...? 2009 এর পরে ত এদেশে কোন নির্বাচন হয়েছে বলে ত মনে পরছে না আমার...
    Total Reply(0) Reply
  • Iqbal Hossan ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    Where ordinary people have no right to vote, where is the challenge of voting again?
    Total Reply(0) Reply
  • বাবুল ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    প্রার্থী দিয়ে কি লাভ হবে। জিতবে তো আওয়ামীলীগের প্রার্থী
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Baker Siddiqui ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    We want free and fair elections. Election Commission should ensue it.
    Total Reply(0) Reply
  • Sanaulla Sana ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    দেশের নির্বাচন মরে গেছে। নমিনেশন পেলেই আওয়ামী লীগ পাশ। আমরা রাজার দেশের মধ্যে আছি। সিলেকসন হল এখনকার ইলেকসান।
    Total Reply(0) Reply
  • আশরাফুল ইসলাম যাকারিয়া ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    কি আর হবে শুরুতে দেখা যাবে বিএনপি এগিয়ে আছে পড়ে দেখা যাবে একটাও ভোট পড়ে নাই মানি প্রার্থী নিজের ভোট কোথায় সেটা পাওয়া যাবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি করপোরেশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ