পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার- চট্টগ্রাম বন্দর’। ‘কান্ট্রি মুভস উইথ আস’। এই দু’টি হচ্ছে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের থিম অর্থাৎ অগ্রযাত্রার প্রতিপাদ্য। দক্ষিণ এশিয়ায় হাজার বছরের নিরাপদ পোতাশ্রয়। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ভেতর দিয়ে প্রায় দেড়শ’ বছরের পথচলা চট্টগ্রাম বন্দরের।
দেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড ও প্রাণভোমরা হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রযাত্রায় সংযোজন একের পর এক সাফল্যের পালক। এবার যুক্ত হলো বিশ্বের ৩ মিলিয়ন বা ৩০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা সম্পন্ন সমুদ্রবন্দর-শিপিংয়ের মর্যাদাপূর্ণ ‘ক্লাবে’ চট্টগ্রামের স্থান করে নেয়া। ‘থ্রি মিলিয়ন ক্লাব’র গর্বিত মেম্বার আজ চট্টগ্রাম বন্দর। চলতি পঞ্জিকা বছর ২০১৯ সাল শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি ও রফতানিমুখী কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমান দাঁড়াবে ৩০ লাখেরও বেশি। প্রসঙ্গত দেশের আমদানি-রফতানির প্রায় ৮৫ শতাংশই চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
তাছাড়া মাত্র কিছুদিন পূর্বেই বার্ষিক কন্টেইনার পরিবহনের পরিমান ও সক্ষমতায় চট্টগ্রাম বন্দর বৈশ্বিক ক্রম তালিকায় সুনাম অর্জনই শুধুই নয়; অধিকতর উন্নতির ধাপে এগিয়ে যায়। গত আগস্ট মাসে লন্ডনভিত্তিক শিপিং খাত বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সংবাদমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’-এ প্রকাশিত তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের ১০০টি কর্মব্যস্ত বন্দরের মাঝে ৬৪তম বন্দর হিসেবে নিজের জায়গাটি অর্জন করে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ছয় ধাপ এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর।
২০১৮ সালে বিশ্বের বন্দরসমূহের কন্টেইনার পরিবহনের সংখ্যা বা পরিমানগত হিসাব করেই এই তালিকাটি প্রণীত হয়। লয়েডস লিস্টে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৭০তম। ২০১৬ সালে ছিল ৭১তম।
উপরোক্ত সাফল্যের রেশ না কাটতেই এখনই চট্টগ্রাম বন্দরের হাতের মুঠোয় এসে গেলো আরেকটি বড়সড় অর্জন। যা বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দর তথা বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য, ব্যবসা-বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সুনামকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাবে এমনটি প্রত্যাশা পোর্ট-শিপিং সার্কেলের। ইতোমধ্যে দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দর ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বান্ধব বন্দর হিসেবে সুনামের অবস্থানে রয়েছে। সুশৃঙ্খল শ্রম পরিবেশে সচল রয়েছে বন্দর।
গতকাল (শনিবার) সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, চলতি বছরে এ যাবৎ ৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩০ লাখ ইউনিট কন্টেইনার পরিবহন বা হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড অর্জন করলো চট্টগ্রাম বন্দর। পৃথিবীতে ৩ মিলিয়ন কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ব্যস্ততা ও কৃতিত্ব তেমন বেশি সংখ্যক সমুদ্র বন্দরের নেই। আর চট্টগ্রাম বন্দর রয়েছে তাদের কাতারে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, চলতি পঞ্জিকা বছর ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে গত ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ৩০ লাখ ২ হাজার ৪২ ইউনিট কন্টেইনার হ্যান্ডেল করা হয়েছে। গতবছর ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ২৯ লাখ ৩ হাজার কন্টেইনার হ্যান্ডেল করে। ২০১৭ সালে ২৬ লাখ ৬৭ হাজার, ২০১৬ সালে ২৩ লাখ ৪৭ হাজার কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়।
এরফলে এক বছরের ব্যবধানে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০১৯ সাল শেষ হতে আরও ১১ দিন বাকি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বন্দরে সামনের কিছুদিনে ৩০ লাখের সঙ্গে যোগ হবে আরও অন্তত এক লাখ কন্টেইনার।
বন্দরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও বন্দর ব্যবহারকারীগণ মনে করেন, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, টার্মিনাল ও ইয়ার্ডসহ কিছু অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধি, কর্তৃপক্ষের নিবিড় তদারকি, সুষ্ঠু সমন্বয়, শ্রম পরিবেশে উন্নতি ও শৃঙ্খলা, জাহাজের অবস্থানকাল আগের তুলনায় হ্রাস পাওয়া, ব্যবস্থাপনায় উন্নতিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচেষ্টার ফলেই চট্টগ্রাম বন্দরের সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়ে উঠেছে।
অবশ্য বন্দর-শিপিং খাতের অভিজ্ঞজনেরা মনে করেন, সময়ের প্রয়োজনে কর্ণফুলী নদীর ওপারে বন্দর সম্প্রসারণ, বে-টার্মিনাল নির্মাণ, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন, ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জামের ঘাটতি পূরণ, নতুন নতুন জেটি-বার্থ, টার্মিনাল নির্মাণসহ বন্দরের চলমান এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পসমূহ অতিদ্রæত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া অপরিহার্য। তাহলেই প্রধান এ বন্দর দেশের ক্রমবর্ধমান আমদানি-রফতানি বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন, কর্মসংস্থানের চাপ বা চাহিদা সামাল দিতে সক্ষম হবে। অন্যথায় দেশের প্রধান এই বন্দর অবকাঠামো চাহিদার বিপরীতে সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।