পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দে ১৪তম অবস্থানে থাকা বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বরাদ্দের মাত্র ১ দশমিক ৯২ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে। মন্ত্রণালয়টি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮১২ কোটি টাকা পেয়েছিল, যার মধ্যে ২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা থেকে এসেছে। তবে মন্ত্রণালয়টি এই অংশ থেকে এখনও একটি পয়সাও ব্যয় করতে পারেনি।
শুধু বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ই নয়; আরও অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বিদেশি সহায়তা কাজে লাগাতে পারেনি। এমনকি কিছু মন্ত্রণালয় সরকারের নিজস্ব তহবিলও ব্যবহার করতে পারেনি। ফলস্বরূপ, উন্নয়ন বাজেটের বাস্তবায়ন গত অর্থবছরের তুলনায় শতাংশের হিসাবে হ্রাস পেয়েছে। অথচ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প দ্রæত বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার বেশ কিছু অনুশাসন দিয়েছেন। যেমন- প্রকল্প কর্মকর্তাদের প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করা, জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রকল্প নেওয়া। কিন্তু এই অনুশাসন বাস্তবায়ন ও নজরদারিতে তেমন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি।
ইতোমধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেটসহ বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি গত অর্থবছর থেকে বছরের শুরুতেই মন্ত্রণালয়গুলোকে বরাদ্দের সব টাকা খরচের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন টাকা খরচের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো ছাড়পত্র নিতে হয় না। তবু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এডিপি বাস্তবায়ন আগের সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।
টাকা খরচ করতে না পারার পেছনে প্রকল্প কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও সুষ্ঠু ক্রয় পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অর্থবছর শুরু হওয়ার আগেই ক্রয় পরিকল্পনা থাকা উচিত, যাতে বাজেট পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া সম্ভব হয়। এতে প্রকল্প যথাসময়ে শেষ হবে, অর্থনৈতিক সুবিধা বেশি পাওয়া যাবে।
বাজেট বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে নভেম্বর অবধি মন্ত্রণালয়গুলি ৪১ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে, যা বরাদ্দের ১৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই হার ছিল ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ, তখন ৩৬ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। এ বছর বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহার শতাংশ এবং পরিমাণ উভয় হিসাবেই হ্রাস পেয়েছে।
সূত্র মতে, বিদেশী উৎস থেকে ব্যয় বৃদ্ধির এক উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও গত পাঁচ মাসে বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহার ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে। জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে ১১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে, যা মোট বিদেশি সহায়তা বরাদ্দের ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এ সময়ে বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহার ছিল ১২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা যা ছিল বরাদ্দের ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ। চলতি উন্নয়ন বাজেটে বিদেশি সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা সরকার নির্ধারণ করেছিল ৭১ হাজার ৮শ কোটি টাকা।
প্রতিবছর বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রæতি বাড়লেও সরকার বেশি ব্যয় করতে পারে না। ফলস্বরূপ, অব্যবহৃত বৈদেশিক সহায়তা প্রতি বছর স্তুপিকৃত হচ্ছে। যে কারণে পাইপলাইনে বৈদেশিক সহায়তা ২০১৮-১৯ সালের শেষে রেকর্ড ৪ হাজার ৮১১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তবে, সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় বেড়ে ২৯ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা হয়েছে যা শতাংশের হিসেবে ৩৭ দশমিক ৮৯ ভাগ। ব্যয়টি নিজস্ব উৎস থেকে বরাদ্দের ২২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের পাঁচ মাসের মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলি ২১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল, যা মোট বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ ছিল।
রেলপথ মন্ত্রণালয় বরাদ্দের ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, শিল্প মন্ত্রণালয় ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং জনসুরক্ষা বিভাগ ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ ব্যবহার করেছে। সরকার চলতি অর্থবছরে এডিপির জন্য ২ লাখ ১৫ হাজার ১১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সব মিলিয়ে এবারের এডিপিতে ১ হাজার ৫৬৫টি প্রকল্প আছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ছোট-বড় সব মন্ত্রণালয়েরই উদ্যোগী থাকা উচিত। কেননা, এডিপির অর্থ খরচ হলে তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এখন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে নজরদারি বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ, অর্থায়নের সমস্যার কারণে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়। প্রকল্পের ধরনের ওপর সেটা নির্ভর করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।