পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর ২৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে পানি ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। রাজধানীর পান্থপথে নতুন পানি ভবনটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো দিন এটি উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
তিনি বলেন, আগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বিদ্যুতের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সে কারণে বিদ্যুৎ ভবনে এ অফিসের কার্যক্রম চলে আসছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেখলেন পানি নিয়ে সারা বিশ্বে সমস্যা আর সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস নেই। তাই তিনি এ ভবন নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উপমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর বেসরকারি ভাড়া বাড়িতে প্রদত্ত ভাড়ার ৫.৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মীদের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ দেয়া।
জানা গেছে, ১৯৫৪ এবং ১৯৫৫ সালের উপর্যুপরি ভয়াবহ বন্যার পর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৫৭ সালে জাতিসংঘের অধীনে গঠিত ক্রুগ মিশনের সুপারিশক্রমে এতদঞ্চলের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ইপিওয়াপদা) গঠন করা হয়। বর্তমান বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ইপিওয়াপদা এর পানি উইং হিসেবে দেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রধান সংস্থা হিসেবে কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্টর আদেশ নং-৫৯ মোতাবেক ইপিওয়াপদা এর পানি অংশ একই ম্যান্ডেন্ট নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সম্প‚র্ণ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়, দেশের পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন সাধন। বন্যা, খরা, জলাবদ্ধতা, আন্তর্জাতিক নদীর প্রবাহ, লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা ও প্রাকৃতিক পরিবেশের যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি, মৎস্য, বন ইত্যাদি ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পানি সম্পদের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা করা। সে কারণে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব অফিস ছিল না স্বাধীনতার ৪৮ বছর ধরে। এবার স্বাধীনতার ৪৯ বছরে তা নিজস্ব ভবন পাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি ভবন নির্মাণের ম‚ল লক্ষ্য হলো পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষতা উন্নয়নসহ আন্তঃবিভাগের সমন্বয় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রতি বছর বেসরকারি ভাড়া বাড়িতে প্রদত্ত ভাড়ার ৫.৩০ কোটি টাকা সাশ্রয়। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মীদের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ পাবেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা অফিস ও দপ্তরগুলোর জন্য বর্তমানে সরাসরি ভাড়ায় চালিয়ে আসছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর জন্য সরকারিভাবে কোটি কোটি টাকা ভাড়া পরিশোধ করতে হতো। এখন থেকে আর ভাড়ার টাকা দিতে হবে না। সে কারণে সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে।
ভবনে যা থাকছে, উন্নত ব্যবস্থাপনা, কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিবীক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫টি সংস্থার দপ্তর একই স্থানে থাকছে। প্রতিটি সংস্থার কারিগরি, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সহজতর সমন্বয় সাধন করা।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ডিপিপি অনুমোদন করা হয় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। প্রথম ব্যয় ধরা হয় ২১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে তা বাড়িয়ে করা হয় ২৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০১৩ সালে জুলাই এবং শেষ হওয়র কথা ২০১৬ সালের ৩০ জুন। কিন্তু কাজ দেরিতে শুরু করার কারণে বাস্তবায়নের শেষ কাজ ধরা হয় ২০১৯ সালের জুন মাসে।
বৈদ্যুতিক নকশা এবং অঙ্কন, বৈদ্যুতিক যান্ত্রিক নকশা এবং অঙ্কন (কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের জন্য) এবং স্যানেটারি ১ দফা ৪০.০০ ৩৯.৮০। প্লাম্বিং নকশা এবং অঙ্কন, অগ্নিরোধক নকশা এবং অঙ্কন। প্রগতির তৈরি মিৎসুবিসি এল-২০০ পিকআপ (মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য), রেজি: ও ১% বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্যসহ। দপ্তর নির্মাণ ৩য় তলা পর্যন্ত (অনুঃ)/১২ তলা পর্যন্ত বহুতল ভবনের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎতায়ন, স্যানেটারি এবং পানি সরবরাহের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন, সাবস্ট্রেশন নির্মাণসহ সোলার প্যানেল (অন গ্রিড টাইপ)।
পানি ভবনে যা থাকছে
পানি ভবন-১২ তলাবিশিষ্ট, দৈর্ঘ্য ২৭৬ ফুট এবং প্রস্থ ১২৭ ফুট, ফ্লোরের মোট এরিয়া ৩৫০০০ বর্গফুট বেজমেন্ট এবং সেমি বেজমেন্টের উচ্চতা ১০.৮২ ফুট, ফ্লোর উচ্চতা (নিচতলা) ১৩.৭৫ ফুট, ফ্লোর উচ্চতা (অন্যান্য তলা) ১২.২৫ ফুট, ভবনের মোট উচ্চতা ১৭৪ ফুট (সিভিল এভিয়েশন কর্তৃক অনুমোদিত উচ্চতা ১৭৪ ফুট)। অডিটোরিয়াম দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ ৫১ ফুট, মোট এরিয়া ৫১০০ বর্গফুট (প্রায়) অডিটোরিয়াম উচ্চতা ২১ ফুট, অডিটোরিয়াম ধারণক্ষমতা ৫৩৬ জন। সার্ভিস ভবন ৩ তলাবিশিষ্ট, দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ ৬০ ফুট, প্রতি ফ্লোরের মোট এরিয়া ৬০০০ বর্গফুট (প্রায়)।
সার্ভিস ভবনের উচ্চতা ১৪ ফুট, প্রধান জলাধারের দৈর্ঘ্য ২৭৫ ফুট এবং প্রস্থ ৭৫ ফুট মোট এরিয়া ২০৬২৫ বর্গফুট (প্রায়), পুকুরের দৈর্ঘ্য ১৬৪ ফুট এবং প্রস্থ ১৩১ ফুট, মোট এরিয়া ২১৪৮৪ বর্গফুট (প্রায়), হেলিপ্যাডের এরিয়া ৪৫০০ বর্গফুট (প্রায়), ভবনের বেজমেন্ট এবং সেমি বেজমেন্টে পার্কিং সংখ্যা ১৭৬টি, ভবনের বাইরে খোলা জায়গায় পার্কিং সংখ্যা ২০০টি, কমন টয়লেটের সংখ্যা ৪৮টি, রুমের সাথে অ্যাটাচড টয়লেট সংখ্যা ৭০টি, ভবনের লিফট সংখ্যা ৮টি, লিফটের ধারণক্ষমতা (প্রতি লিফটে সর্বোচ্চ ১৩ জন করে)। ভবনের ১১ তলায় কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। সোলার প্যানেল ৪০ কিলোওয়াট (অন গ্রিড টাইপ) এবং ভবনের জেনারেটর ৪টি প্রতিটি ৬৫০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন। অত্যাধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, আধুনিক স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।