Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ছোলনা সালামিয়া মাদরাসা নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অবস্থিত ছোলনা সালামিয়া এতিমখানা ও মাদরাসার কার্যক্রম নিয়ে একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ মহলটি মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানোর পাশাপাশি মাদরাসার একটি দ্বিতল ভবনের নামকরণ নিয়েও মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া, আ.সালাম মিয়া, সিরাজ মুন্সীসহ স্থানীয় বেশকিছু ব্যক্তির অভিযোগ, মাদরাসার সাবেক সম্পাদক ও শিক্ষক হাফেজ মো. হাসমত আলীকে দুর্নীতির কারণে সম্প্রতি বরখাস্ত করা হয়। হাসমত আলীকে বরখাস্তের পর পরই একটি মহলের প্ররোচণায় মাদরাসার পরিচালনা পর্যদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মাদরাসার সার্বিক দেখভাল ও অনুদান দেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার শুরু করে কুচক্রি মহলটি। এ মহলটি মাদরাসার দ্বিতলা ভবন করে দেয়া পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি গিয়াসউদ্দিন বেনু ও অন্যতম সদস্য শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর মরহুম পিতার নামে মিথ্যা ও অবান্তর কথা বলে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদরাসার দ্বিতল ভবনটির নামকরণ করা হয় মরহুম আব্দুস সামাদ মিয়ার নামে। ভবনটি নির্মাণের সমস্ত অর্থের যোগানদাতা মরহুম আব্দুস সামাদ মিয়ার দুই ছেলে বেনু ও ঝুনু। মাদরাসা থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদকের যোগসাজসে প্রভাবশালী একটি মহল মাদরাসার সুনামকে বিনষ্ট করতে নানাভাবে পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে তারা মাদরাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মতিনকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাদরাসা থেকে সরে যেতে বলে। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় একাধিকবার সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে হুমকি প্রদান করে। এছাড়া হত্যারও হুমকি দেয়া হয়। এ নিয়ে বোয়ালমারী থানায় একাধিক জিডি করেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিন। অভিযোগ উঠেছে, বরখাস্ত হওয়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হাসমত আলী চাকরি থাকার সময়ে রেজুলেশন খাতা, ক্যাশ খাতা, এতিমখানার দলিলসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার চিঠি দিয়ে তা ফেরত চান পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ সাইয়েদ মুরাদুল্লাহ আহমাদ। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কতৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মো. হাসমত আলী মাদরাসা ও এতিমখানার ৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বিগত ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর মাদরাসায় তদন্তে যায় উপজেলা সমাজসেবা অফিসার। সরেজমিনে গিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার হাসমত আলীর কাছে ৬ লাখ টাকা হস্তমজুত পান। এছাড়া তার বিরুদ্ধে এতিমখানা, মাদরাসার দান এবং অনুদানের টাকা নিজে উঠিয়ে নিয়ে ভোগ করেন। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এ এস এম আলী আহসান মাদরাসার সভাপতি বরাবরে পাঠানো এক চিঠিতে হাসমত আলীকে অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে তার পদ থেকে বরখাস্তের নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে মাদরাসা কমিটি সর্ব সম্মতিক্রমে গত ১১ ফেব্রয়ারি হাসমত আলীকে বহিষ্কার করা হয়। মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে অপসারণ হবার পর নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন হাফেজ হাসমত আলী এমন অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।
এ বিষয়ে মাদরাসার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মো. হাসমত আলী বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে মাদরাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে। মাদরাসার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কথা অস্বীকার করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ