Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিংড়ায় ধান কলা চাষে গুল ও শ্যাম্পু ব্যবহার

কৃষকরাই কৃষি গবেষক

আনোয়ার হোসেন আলীরাজ, সিংড়া (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

নাটোরের সিংড়ায় ধান ও সবজিসহ কলা চাষে কীটনাশকের পরিবর্তে শ্যাম্প ও গুল ব্যবহার করছেন কৃষকরা। এতে ধানসহ সবজি ও কলার গায়ের রং ভালো থাকে এবং বাজারে দামও বেশি পাওয়া যায়। তাই কৃষকরা নতুন এই ফর্মলা বেঁছে নিয়েছেন। উপজেলার মোট কৃষি জমি ৪৩ হাজার ৩ শ’ হেক্টর। চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে। বন্যার পনি দেরিতে নামায় ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে রবি শষ্যের আবাদ করা হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি অফিসের তদারকি না থাকায় বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে জমজমাট ব্যবসা করছেন সার-কীটনাশক ব্যবসায়ীরা। সময়মত কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ না পেয়ে নিজেরাই কৃষি গবেষক হয়েছেন বলে দাবি করেছেন কৃষকরা। বাজারে নিউবেন, ফেমামিক্স, এসিবিন, একামাইট ও মিটপসহ অনেক জনপ্রিয় কোম্পানির ওষুধ বাজারে রয়েছে।
সার ও কিটনাশক ব্যবসায়ী আতাউর রহমান জানান, বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির নামে অনুমোদহীন ভেজাল কীটনাশক বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা অহরহ প্রতারিত হচ্ছেন।
উপজেলার আগপাড়া গ্রামের কলা চাষি মকবুল হোসেন জানান, কলার গায়ের রং খারাপ অথবা চেরারোগ দেখা দিলে গায়ে মাখা শ্যাম্প ও গুল ব্যবহার করলে রোগবালাই দূর হয় এবং কলার গায়ের রং চকচক করে। লালোর ইউনিয়নের মাদারীগ্রামের মোহাম্মদ আলী জানান, গত কয়েক বছর ধরে তিনি বোরো ধানে শ্যাম্প ব্যবহার করে আসছেন। তিনি আরও বলেন, ধান ফুলে বের হওয়ার পর ১৬ লিটার পানিতে ১ টাকা দামের একটি শ্যাম্প পানিতে গুলিয়ে স্প্রে মেশিন দিয়ে ছিটিয়ে দিলে ধানের রং চকচক হয়।
শেরকোল ইউনিয়নের আরেক কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, তিনি কয়েক বছর ধরে বোরো জমিতে গুল (পান মসলা) ও শ্যাম্প ব্যবহার করছেন। তিনি আরও বলেন, বোরো ধান লাগানোর পরে জমিতে লালচেরা ধানের চারার গোড়ায় থাকে ফলে ধানের শিকড় গোজাতে সময় লাগে। ধান লাগানোর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বিঘাপ্রতি ২৪টি গুল সারের সঙ্গে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিলে লালচেরার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তার দাবি শাক-সবজিসহ ধানে শ্যাম্প ব্যবহার করলে সবজি চকচক করে এবং বাজারে দাম বেশি হয়।
তবে শ্যাম্প ও গুল ব্যবহার করলে জমির উর্বর শক্তি নষ্ট হয় কিনা তার সঠিক উত্তর দিতে পারেননি উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অফিসার সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রমাণ ছাড়া কাউকে ভেজাল কিটনাশক বলতে পারি না। তার দাবি শাক-সবজিসহ ধানে শ্যাম্প ব্যবহার করলে সবজি চকচক করে এবং বাজারে দাম বেশি হয়। নদী ও বিলের মুখে অবৈধ সুঁতি ও বানায় পানি নামার বাঁধা সৃষ্টি হওযায় রবি শষ্যের আবাদ কম এবং বোরো ধান লাগানোও পিছিয়ে যেতে পারে।
তবে সন্দেহ হলে টেস্ট করার জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ভেজাল কিটনাশকের বিরুদ্ধে মোবাইল কোট পরিচালনার বিষয়ে তিনি জানান, জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ