Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিপথগামী হচ্ছে কিশোর-তরুণরা

মাদকে সয়লাব নারায়ণগঞ্জ

মো. হাফিজুর রহমান মিন্টু, নারায়ণগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জে শতাধিক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রাঘব বোয়াল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই মাদক ব্যবসায়িদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আরো কয়েকশ’ খুচরা ব্যবসায়ী। যারা বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা ও শহরের অলি-গলিতে মাদক ব্যবসা করে আসছে। যদিও মাদকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান, নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দীন ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম কড়া ভাষায় হুশিয়ারী দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও মাদক বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। বরং মাদকের দাম বেড়েছে। প্রতিটি ইয়াবা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। যা গত এক মাস আগেও বিক্রি হতো ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে পুলিশী অভিযান অব্যাহত থাকলেও চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হচ্ছে না। পুলিশী অভিযানের কারণে চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতারা অনেকটা আড়ালে চলে গেছে। অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছে। কিন্ত তাদের নেটওয়ার্ক কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। এরা এখন নানা কৌশলে এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মাদক বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিনের পর দিন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদে মাদক বিক্রি করে আসছে। আর বর্তমানে তারা মাদক ব্যবসা কার্যক্রম চালু রাখতে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিতে বিভিন্ন পাড়া মহল্লার কমলমতি শিশুদের ব্যাবহার করছে তাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। মাঝে মধ্যে উপরের চাপে পুলিশ লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে ছিচকে কিছু মাদক সেবক ও মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু মাদক ব্যবসা কখনো বন্ধ হয় না।
মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ছিচকে কোনো মাদক ব্যবসায়ী একবার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আদালতে গেলে সে মনে করে সে এই মাদক ব্যবসার নতুন লাইসেন্স পেল। তবে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত জেলা পুলিশ সুপার মাদকের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান শুরু করেছেন।
পুলিশের সূত্র মতে, গত বছরের ১৭ সেপ্টম্বর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে সদর ও ফতুল্লা থানার ৩২ মাদক ব্যবসায়ীর ছবি দিয়ে পোস্টার আকারে তালিকা প্রকাশ করে জেলা পুলিশ। এবং প্রত্যেককে ধরিয়ে দেয়ার উপর আর্থিক পুরষ্কারও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত তালিকার ৯৫ ভাগ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়নি।
ফতুল্লার আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী মীর হোসেন মীরু ওরফে ল্যাঙড়া মীরু, মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু ও শহরের ইব্রাহিম ওরফে হাজী ইব্রাহিম ইবু। আলোচিত এ মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আদালত পর্যন্ত গেলেও পুলিশের দেয়া দুর্বল চার্জশিটও রহস্যজনক কারণে জামিনে ছাড়া পেয়ে পুনরায় মাদক ব্যবসায় রিপ্ত হয় বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, তালিকার বাইরে রয়েছে আরো ৬০ থেকে ৭০ জন বড়-ছোট মাদক ব্যবসায়ী।
জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। গত কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান (বøক রেইড) চালিয়ে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। কেউ ছাড় পাবে না। সে যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ