পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
রফতানি আয়ের নিম্নগতির প্রভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর) বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৬২ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ব বাজারে পণ্যের চাহিদা কম ও সঠিক মূল্য পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রফতানি হচ্ছে না। অন্যদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। এসব বড় বড় প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। এতে করে আমদানি ব্যয় যে হারে বেড়েছে সেই তুলনায় রফতানি হয়নি। যার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ২৫১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে এক হাজার ৮১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সেই হিসেবে অক্টোবর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৬২ কোটি ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা) দাঁড়ায় প্রায় ৪৭ হাজার ৭৭ কোটি টাকা।
ঘাটতির এ অঙ্ক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল ৫৩২ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় এবার ঘাটতি বেড়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে তা ঋণাত্মক হয়েছে। প্রথম চার মাস চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।
এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতন-ভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করা হয়েছে ৩২৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে ২১৩ কোটি ১০ লাখ। এ হিসাবে সেবায় বাণিজ্যে দেশে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ১২৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
প্রথম চার মাসে প্রবাসীদের আয় রেমিট্যান্স এসেছে ৬১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সেই হিসেবে রেমিট্যান্সে ২০ দশমিক ৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ১৬৫ কোটি ২০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ৮৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ ও নিট বেড়েছে ৪ দশমকি ৭৬ শতাংশ। একই সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে ৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা তার আগের অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ২ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।