Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতি পাঠ্যসূচির বিরুদ্ধে বদরের চেতনায় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে : পীর সাহেব চরমোনাই ও নেতৃবৃন্দ

প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মহান বদর দিবস উপলক্ষে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে এবং ইসলামী ঐক্য আন্দোলনসহ বিভিন্ন খানকা ও দরবার শরীফে পৃথক পৃথক আলোচনা সভায় বলা হয় ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতি ও পাঠ্যসূচি ও ইসলাম নিয়ে চক্রান্তের বিরুদ্ধে বদরের প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বিতর্কিত ও নাস্তিক্যবাদী-হিন্দুত্ববাদী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে বদরের চেতনায় ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই পাঠ্যসূচির জিহাদে মুসলমানদের বিজয় হবে। ইসলামের চির দুশমনরা পরাজিত হবে। পীর সাহেব বলেন, বদরের জেহাদে সত্যপথের অনুসারী অল্প সংখ্যক রোজাদার মুসলমান বিশাল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত মিথ্যার অনুসারী কাফের-মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করে সত্য-মিথ্যার চির পার্থক্য সূচনা করেছিলেন। ইসলামী আন্দোলনও বদরের চেতনায় তাগুতি ও খোদাদ্রোহী শক্তির মোকাবেলায় ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছি। তিনি বলেন, কুরআনের কথা বললে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ আখ্যা দেয়া হয়। তিনি বলেন, নাস্তিক-মুরতাদ গোষ্ঠী আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলাম থেকে দূরে সরাতে পাঠ্যসূচি হতে ইসলাম বাদ দিয়ে নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে উঠছে। এই সিলেবাস বাতিলে মুসলমানরা প্রয়োজনে জীবন ও রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছে। রমজানের পর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনর শুরু করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর ঐতিহাসিক বদর দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। রাজধানীর গুলিস্তানস্থ কাজী বশির মিলনায়তনে নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লালহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও শ্রমিক আন্দোলন কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মহানগর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মু. আমিনুল ইসলাম, উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম আলআমীন, দক্ষিণ সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সেক্রেটারি মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
অধ্যক্ষ মাদানী বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। হত্যা, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- জনজীবনকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দেশকে মুসলমান ও ইসলাম শূন্য করতে সিলেবাসে হাত দিয়েছে। অবিলম্বে এই সিলেবাস বাতিল না করলে সর্বত্র ঈমানী আন্দোলন গড়ে উঠবে।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইসলামবিরোধী শক্তিগুলো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের চেতনায় এসব খোদাদ্রোহী শক্তির বিরুদ্ধে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, পুরোহিতসহ কোনো হত্যাকা-ই ইসলাম সমর্থন করে না।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, সরকার নিজেকে মুসলমান দাবি করে আবার সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস মুছেও দিয়েছে। এইভাবেই সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে বদরী চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে মানবতা ও ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী বলেছেন, ১৭ রমজান ইসলামের সর্বপ্রথম ভাগ্য নির্ধারণী ও বিজয় যুদ্ধ এবং ২০ রমজান সত্য-মিথ্যার চূড়ান্ত ফয়সালা মক্কা বিজয়ের ঘটনা প্রমাণ করে মাহে রমজান আধ্যাত্মিক সাধনা ও নফসের শুদ্ধি সাধনের সাথে জাগতিক শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করারও প্রেরণাদায়ক। এ কারণে পবিত্র কুরআনে উভয় ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামের জিহাদ আর জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মাঝে বিরাট নিকটতম সম্পর্ক নেই। ফিতনা ও ফাসাদ বা আধুনিক পরিভাষায় সন্ত্রাস দমনের উদ্দেশ্যে ইসলামের জিহাদ ও কিতাল পরিচালিত হয়ে আসছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জিহাদ বা সশস্ত্র যুদ্ধ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ক্ষমতার অধীনে পরিচালিত হতে হবে। অন্যথায় তা সন্ত্রাস নামান্তর হবে এবং ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনবে। এ কারণেই মদিনায় হিজরতের আগে মক্কায় মুসলমানরা চরমভাবে নির্যাতিত হলেও জিহাদের হুকুম নাজিল বা এজাযত দেয়া হয়নি। আর বদর যুদ্ধের মাধ্যমে হক বাতিল থেকে চিরদিনের জন্য আলাদা হয়ে গেছে। হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিক্যবাদী পাঠ্যসূচি বাতিল করাতে বদরের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ জেহাদে নামতে হবে।
গতকাল বিকেলে ইসলামী ঐক্য আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ‘মুসলিম বিশ্বের বর্তমান অবস্থা ও বদর যুদ্ধের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আন্দোলনের ঢাকা মহানগরীর আমির মোস্তফা বশিরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল শওকাত হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন, সেক্রেটারি জেনারেল ড. মওলানা এনামুল হক আজাদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোস্তফা তারেকুল হাসান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালউদ্দীন, খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হুসাইন, ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমির মাওলানা ফারুক আহমাদ, মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মওলানা মুহাম্মদ ওমর ফারুক প্রমুখ।
কসরে হাদী খানকা শরীফ
মহান বদরের জেহাদ উপলক্ষে কসরে হাদী খানকা শরীফে এক ইফতার আলোচনা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে খানকার খলিফা শাহ্ সূফী সৈয়দ আবদুল হান্নান আল হাদী বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে ইসলামী শিক্ষা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে চর্তুমূখি চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এসব চক্রান্ত রাসুল (স.) প্রিয় জনতাকে বদরের সাহাবীগণের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে। আলোচনা শেষে তিনি দোয়া মোনাজাত করেন। তিনি খানকা শরীফের উদ্যোগে প্রতিদিন নীলক্ষেত মার্কেট মসজিদে ইফতার মাহফিলে অংশ নেয়ার জন্য রোজাদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ