Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মায় আটকে আছে ৩০ জাহাজ

তীব্র নাব্যতা সঙ্কট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা
নাব্যতা সঙ্কটে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় আটকে থাকা পণ্যবাহি কার্গো জাহাজের মালামাল খালাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীর দু’গ্রæপের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
এতে করে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কার সৃষ্টি হতে পারে। তবে বিষয়টি অমলে নিয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সরেজমিনে গতকাল রোববার সকালে দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখনও নাব্যতা সঙ্কটে আটকে আছে অন্তত ৩০টি মালবাহি জাহাজ। জানা যায়, নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটের দৌলতদিয়ায় নাব্যতা সঙ্কটের কারণে গত ৮ নভেম্বর থেকে পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন পণ্য বোঝাই কার্গোজাহাজগুলো চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে ছেড়ে এসে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় আটকা পড়ে আছে। পরে এখান থেকে আংশিক পণ্য খালাস করে ছোট কার্গো বা ট্রলারে বাঘাবাড়ী পাঠানো হচ্ছে। এরপর হালকা হয়ে যাওয়া কার্গোগুলো বাঘাবাড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় আটকে থাকা জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে প্রতি টনে ১২৫ টাকা শ্রমিক খরচ দেয়া হয়। একেকটি জাহাজ থেকে অন্তত ২৫০ টন মালামাল খালাস করা হয়ে থাকে। এভাবে প্রতিদিন ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টন মাল খালাস করা হয় দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুষ্ক মৌসুম শুরুর দিকে গত কয়েক বছর ধরে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নাব্যতা সঙ্কট দেখা দেয়। যে কারণে প্রতি বছর এখানে আটকা পড়ে পণ্যবাহি জাহাজ। বিগত কয়েক বছর ধরেই এ সকল জাহাজের পণ্য খালাস নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও গোয়ালন্দ উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মন্ডলের মের্সাস আরিফ ট্রান্সপোর্ট এÐ কমিশন এজেন্ট।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দৌলতদিয়া ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুর রহমান মন্ডলের কাছে হেরে যান নুরুল ইসলাম মন্ডল।
এবারও আটকে থাকা জাহাজের পণ্য খালাসে নুরুল ইসলাম মন্ডলের লোকজনই নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। এ পরিস্থিতিতে অপর পক্ষ পণ্য খালাসের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যাপক শোডাউন করেছে। এ সময় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
দৌলতদিয়া ঘাটে শ্রমিক জোগানের দায়িত্বে থাকা মের্সাস আরিফ ট্রান্সপোর্ট এÐ কমিশন এজেন্ট এর ব্যবস্থাপক মনির উদ্দিন সরদার বলেন, তাদের ১৫০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছে। শ্রমিক সঙ্কট থাকায় পণ্য খালাস কাজ দ্রæতগতিতে করা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, প্রতি বস্তা মাল খালাস বাবদ ৩ টাকা করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল জানান, আটকে থাকা জাহাজের পণ্য খালাসে বিবাদমান কোনো পক্ষের সাথে তিনি জড়িত নন।
এ বিষয়ে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল জানান, প্রতি বছর আমার মালিকানাধীন মের্সাস আরিফ ট্রান্সপোর্ট এÐ কমিশন এজেন্ট জাহাজের পণ্য খালাসের কাজ করে থাকে এ বছরও আমরাই করছি। অপর পক্ষ গায়ের জোর খাটিয়ে তারা খালাস করার পায়তারা করছে। যে কারণে তারা শোডাউনও করেছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, আটকে থাকা জাহাজের পণ্য খালাস নিয়ে কিছুটা উত্যপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, দ্রæত ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ