পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের জনগোষ্ঠীর আস্থার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে বারবার বাধা দেয়ায় বাংলাদেশ এখন আশঙ্কা ও আস্থাহীনতায় ভরা এক অচেনা ভূখন্ড হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে উপেক্ষা করে চক্রান্তের বদ্ধ চোরাগলিতে হাঁটছে। সরকার ও সরকার প্রধানের কারণেই বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন না। তারাই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা প্রদান করছে। বেগম জিয়ার মুক্তিতে সরকারের প্রতিহিংসার মনোভাব থাকায় এক নিষ্ঠুর স্কীম অনুযায়ী তারা কাজ করছে। ক্ষমতার মোহে অন্ধ উন্মত্তের মতো আচরণ করছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা দিয়ে। আজও দেশনেত্রীর জামিন না হওয়া সরকারের সুদুরপ্রসারী ঘটনাবর্তের অংশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনসমর্থিত নেত্রী কারাগারে, আর দুর্নীতি, সন্ত্রাস, দখল, লুটপাট যাদের যাপনসঙ্গী তারাই আজ রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছে। কয়েক যুগের বিবর্তনে বাকশালের প্রেতাত্মা এখন ভীষণ মূর্তি ধারণ করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্রের ধ্বংস সাধন করে গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। ক্ষমতার সুউচ্চ বলয়ে অবস্থান করে দম্ভে ও গর্বে আত্মস্ফীত শেখ হাসিনা পতনের ভূমি দেখতে পাচ্ছেন না বলেই বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রেখেছেন। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে করায়ত্ত করে কোন চক্রান্ত সফল হবে না। বেগম জিয়াকে নিয়ে সরকারের সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে জনগণ ও দল আজ ঐক্যবদ্ধ ও অগ্রগামী। বেগম জিয়ার জীবন নিয়ে সরকারের গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ সচেতন। বেগম খালেদা জিয়াকে এই মূহুর্তে নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারের মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক-শঙ্কা কাজ করছে। যারা জনগণের সমাদৃত নয়, জনগণের ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছে তাদের প্রতিনিয়ত পতনের আশঙ্কা। এক ভয়ঙ্কর চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র নিপীড়ন, নির্যাতন, নিষ্ঠুরতার মধ্যে গণতন্ত্রের সকল পদ্ধতি, প্রথা, রীতিনীতি এবং প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে এই সরকার নিজে টিকে থাকার স্বার্থে একের পর এক অমানবিক কাজ করছে এবং সেই কারণে গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে বারবার বাঁধা দেয়া হচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জুলুমবাজ সরকারের হিংস্র আঁচড়ে এদেশের বিরোধী শক্তিকে জর্জরিত করার জন্য সরকার সকল শক্তি নিয়োগ করেছে। সরকারের দুর্বিনীত হাতের হিংস্রতা এই মূহুর্তে চরম আকার ধারণ করেছে। তারই বহি:প্রকাশ আমরা দেখলাম গত পরশু রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা ও বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে।
তিনি বলেন, দু:শাসনের কালরাতকে আরও অন্ধকারময় করার জন্যই সরকার বিএনপি’র জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। আওয়ামী সরকার একটি বিষয়ে ব্যাপক চর্চা করে, সেটি হলো মিথ্যার। এরা মিথ্যা প্রচারে অক্লান্ত। এরা মিথ্যা মামলা ও কুৎসা রটনাতে অদ্বিতীয়। বিরোধী দলীয় নেতারা সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী কোন কাজ করলে সেটিকেও তারা রাষ্ট্রীয় দমনযন্ত্রের দ্বারা নিষ্পেষিত করে উল্টো মিথ্যা প্রচার চালায়। আমরা সেটিরই দৃষ্টান্ত দেখলাম উল্লিখিত মামলা ও গ্রেফতারের মধ্যে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে কখনোই ঔদার্য, ব্যাপক পরিসর, অন্য দলের প্রতি সহিষ্ণুতা, সহাবস্থানের কোনো বোধ নেই। এরা রাষ্ট্রকে নিজেদের সমষ্টিগত সম্পত্তি বলে মনে করে। তাই গণতন্ত্র, শান্তি, স্থিতি, সহমতকে ধ্বংস করে তারা দেশবাসীকে অশান্তির আগুনে দগ্ধিভুত করছে প্রতিনিয়ত। ক্ষমতার মোহে এরা অন্ধের মতো আর কোন পথের সন্ধান পাচ্ছে না। ক্ষমতার পর্বত চুড়ায় উঠে নামতে পারছেন না। তাই জুলুমের নীতি তাদের টিকে থাকার একমাত্র অবলম্বন। আইন, আদালত, পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ সকল প্রতিষ্ঠানকে হুকুমের দাস বানিয়ে মানুষকে বোবা করার চক্রান্ত চলছে। আমাদেরকে এই আওয়ামী নাৎসী দু:শাসনের তামসিক প্রভাব কাটাতে এই মূহুর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক্ষুনি রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামতে না পারলে এই অন্ধ অসহিষ্ণু সরকারের বলি হবে গণতন্ত্রকামী অসংখ্য মানুষ।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গত পরশু রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, শওকত মাহমুদ, এছাড়াও হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, শফিউল বারী বাবু, সাইফুল আলম নীরব, সরফত আলী সপু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, ব্যারিষ্টার কায়সার কামাল, শাহ মো: আবু জাফর, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক খান, সৈয়দ এহসানুল হুদা, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান তালুকদার, টি এম রফিকুল ইসলাম রিপন, শাহ নেওয়াজ, সাঈদ মাহমুদ জুয়েল, রওনুকুল ইসলাম শ্রাবন, আশরাফুল ইসলাম রবিন, মো: আল আমিন, মোঃ রফিকসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া আজ উচ্চ আদালতের ফটক থেকে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও গত পরশু রাতে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে গ্রেফতারের ঘটনারও আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রিজভী অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহবান জানান। এছাড়া বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মোঃ মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।