অন্ধকার, হতাশা ও নিরাশার মধ্যে তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আশার আলো দেখতে পান
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
'
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে' এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে আমাদের অনেকের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। আমাদের অনেকের মধ্যে ভয়-ভীতি ও ত্রাস আছে। কিন্তু যখন তিনি (তারেক রহমান) সুদূর থেকে লালমনিরহাটের গ্রামের একজন নেতাকে ফোন করে বলছেন- কেমন আছেন, ভালো আছেন তো? সাহস হারাবেন না, আমরা সবাই আছি। তবে উনারা (আওয়ামী লীগের নেতারা) অনেকে ভাবেন, তিনি শুধু স্কাইপিতে আমাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু না, তিনি প্রায়ই দেশের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। এভাবে তিনি উজ্জীবিত করছেন গোটা জাতিকে। সেই কারণে বললাম, আমাদের এতো অন্ধকার, হতাশা ও নিরাশার মধ্যে আশার আলো দেখতে পাই তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বের মধ্যে। সেই নেতৃত্বই আমাদেরকে মুক্তি দেবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যারা
বিএনপি করি, তারা সবাই জানি-
বিএনপিকে তৃণমূলে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথম কাজটি করেছিলেন এই দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ঠিক একইভাবে তারেক রহমান শুরু করেছেন তার রাজনৈতিক জীবন ও রাজনৈতিক চর্চা।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেন, তারেক রহমান বিদেশ থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে নেতৃত্ব পেয়েছেন। আমরা এই কথাটার একটা জবাব দিতে চাই। জনাব তারেক রহমান উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতিতে আসেন নাই। তার জন্ম হয়েছে রাজনীতির মধ্যে। তার পিতা ছিলেন এদেশের স্বাধীনতার ঘোষক এবং মা ছিলেন গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী। সেই সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই তার জন্ম হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান যখন একদম শিশু (৫-৬ বয়স) যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে। অর্থ্যাৎ পিতার নেতৃত্বে পিতার পোস্ট পেয়েছেন। আর যখন তিনি কৈশোর পার করছেন তখন গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছেন তারই মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি সেই পরিবেশে, সেই পরিবারে এবং সেই সময়ে জন্ম নিয়ে নেতৃত্বের যাবতীয় গুনাবলি তিনি অর্জন করেছেন। আমি এজন্য বলি, তিনি দুই সূত্রে নেতা। একটি হচ্ছে তিনি জন্ম সূত্রে নেতা। আরেকেটা হচ্ছে, তিনি খুব অল্প সময়ে নেতৃত্বের সমস্ত গুনাবলি অর্জন করেছেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দদেশ্য করে ফখরুল বলেন, অন্ধকারের মধ্যে যখন আশার রেখা দেখতে পাই তখন আমরা মুক্তির স্বাদ পাই। আজকে সারাদেশে যে অন্ধকার ছেয়ে ফেলেছে, সেই অন্ধকারের মধ্যে আমরা একটা আশা আলো দেখতে যে, আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশের ১৬ কোটি মানুষের ভবিষ্যত, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে নিশ্চিত করতে তার সমস্ত শক্তি দিয়ে কাজ করছেন। তখন আমরা নি:সন্দেহে আশার আলো দেখতে পাই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, বেগম জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছি। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশকে মুক্ত করেছি। একইভাবে তারকে রহমানের নেতৃত্বে বেগম জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো।
তিনি বলেন, গত ১০ বছর ধরে এই সরকার
বিএনপিকে পিটিয়েছে। এখন পেঁয়াজ ও লবণসহ সব কিছু দিয়ে সাধারণ মানুষকে পিটানো শুরু করেছে। চালের এমন দাম বাড়ানো হয়েছে যে, সাধারণ মানুষের জীবন দু:সহ হয়ে উঠেছে। সব তো খাওয়া শুরু করেছে 'সরকার'।
ক্যাসিনো থেকে সব কিছু খেয়েছে। আর এখন সাধারণ মানুষের পেঁয়াজ ও লবণ নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করছি। আমরা সমস্ত দল মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এমন গণআন্দোলন সৃষ্টি করবো, যে গণআন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বেগম জিয়া মুক্ত হবেন, গণতন্ত্র মুক্ত পাবে। এটা আমার বিশ্বাস। আমরা জানি এটা হবেই।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেন, এটা স্বৈরাচার সরকার। কিন্তু এটা তো স্বৈরাচারের বাবা (ফ্যাসিবাদ)। স্বৈরাচারের থাকে...। এরশাদ ও আয়ুব খান ছিলেন স্বৈরাচার, তখন এই অবস্থা ছিল না। এটা ফ্যাসিবাদ। কিছু নেই। এখন একজন ও এক ব্যক্তি আছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শফিউল বারী বাবু'র সভাপতিত্বে এবং
সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েলের সঞ্চালনায় সভায়
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী-খান সোহেল, সাংবাদিক নেতা সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।