Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

একমাত্র বাহন যেখানে ঘোড়ার গাড়ি

মোশাররফ হোসেন বুলু, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ৫:২৭ এএম

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন বঞ্চিত চরঞ্চলের পরিবহন মাধ্যম একমাত্র ঘোড়ার গাড়ি। চরঞ্চলের জনগনের কাছে তাই ঘোড়ার গাড়ির কদর বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদীল চরে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে যে কোন মালামাল পরিবহনের বাহন হিসেবে একমাত্র সম্বল ঘোড়ার গাড়ি। চরের খানাখন্দে ভরা বালুময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলি, ট্রাক যেতে পারে না সেই সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেব ঘোড়ার গাড়ির কদর বেড়েছে। এ উপজেলার ২০টি চরেই সিংহভাগ রবি শস্য উৎপাদন হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, গম, ডাল এসব অর্থকারী ফসল পরিবহনে কৃষকরা ঘোড়ার গাড়িই ব্যবহার করছেন। কৃষকরা এখন তাদের উৎপাদিত ফসল ঘোড়ার গাড়িতেই হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। আর ফড়িয়া ব্যবসায়িদের কাছে কম মূল্যে ফসল বিক্রি করতে হয় না। উপজেলার ৬ ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা একদিকে যেমন উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন তেমনি কৃষি উপকরণ সার বীজসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়ি করেই নিয়ে যাচ্ছেন। ঘোড়ার গাড়ির মালিকরাও অর্থ উপার্জন করে সুন্দর ভাবে সংসার চালাচ্ছেন। ঘোড়ার গাড়ি চালক আমজাদ হোসেন জানান প্রতিদিন গাড়ি দিয়ে ৭/৮ শত করে টাকা উপার্জন করা যায়। ঘোড়ার পিছনে দৈনিক এক থেকে দেড়শ টাকা খরচ হয়। বাকি টাকা তার দৈনিক আয় থাকে। নিজামখাঁ গ্রামের ঘোড়ার গাড়ি চালক সাইদুর রহমান জানান বগুড়া, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে শ্রমিকের কাজ করেও সংসার ঠিকভাবে চালানো সম্ভব হতো না। এখন ঠিকভাবে সংসার চালিয়ে আয় করতেছি ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে। এখন দাওয়াত খেতে শ্বশুর বাড়ি যাই ঘোড়ার গাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে। দৈনিক যে আয় হয় তাতে আর কারো মূখাপেক্ষি হতে হয় না । ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ ও জামা-কাপড় চাওয়ার আগেই দিতে পারতেছি। খোর্দ্দার চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক শাহালম জানান যেখানে ইঞ্জিন চালিত কোন যানবাহন চলে না সেখানেও ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে নির্বিঘেœ ফসলাদি পরিবহন করছি। যার কারণে চরের কৃষকদের কাছে ঘোড়ার গাড়ি জনপ্রিয় একমাত্র পরিবহন মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে। এ উপজেলার বিভিন্ন চরে প্রায় ৫০০শ ঘোড়ার গাড়ি পরিবহন কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
বেলকা চরের কৃষক আনারুল ইসলাম জানান, ঘোড়ার গাড়িতে এখন ধান, পাট, গম, ভুট্টা ও শাকসবজি সরাসরি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। তাতে দাম ভাল পাচ্ছি। ফড়িয়া ব্যরসায়ি আর আমাদের ঠকাতে পারছেনা। মোট কথা ঘোড়ার গাড়ি চরাঞ্চলবাসির পরিবহনের একমাত্র ভরসা।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ