পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনদুর্ভোগ ও আওয়ামী লীগ পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলাফেরা করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই সরকার যে জনগণের সমস্যা বুঝতে পারেনা, কিংবা বুঝতে পারছেনা এর বড় প্রমাণ বর্তমানের পেঁয়াজ সংকট। সরকারি দলের লোকজনের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়ানো হচ্ছে এর দাম। আওয়ামী লীগের ভেল্কিবাজরা প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টাকা জনগণের পকেট কেটে নিচ্ছে। শুধু পেঁয়াজ নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম এখন আকাশচুম্বী। পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে চালসহ অন্যান্য ভোগ্য পণ্যের দাম। পত্রিকার খবর অনুযায়ী গত দুই মাসে আট ধাপে সিন্ডিকেট লুটে নিয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত আড়াই মাস ধরে পেঁয়াজের দাম ডাবল সেঞ্চুুরি থেকে ট্রিপল সেঞ্চুরিতে ছুঁই ছুঁই করে বিশ্ব রেকর্ড করেছে। ১৬ টাকার পেঁয়াজ এখন ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ-রসুনের এই কৃষিপ্রধান দেশে মানুষকে আজ মিডনাইট সরকারের বাজার সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে হালি দরে পেঁয়াজ কিনে খেতে হচ্ছে! সঙ্কট সমাধানের পথে না গিয়ে সরকার পেঁয়াজ সঙ্কট নিয়ে দেশে বিদেশে রসিকতায় মেতেছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারকে বশংবদ সরকার উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের ইতিহাসে তো বটেই পৃথিবীর ইতিহাসে এমন আত্মর্যাদাহীন সরকার আর দ্বিতীয়টি নেই। এই আত্মর্যাদাহীন সরকারের সঙ্গে একমাত্র মিল পাওয়া যায় স্বাধীনতা হারানো দেশগুলির সরকারের। আমাদের বর্তমান সরকারটির অবস্থাও এখন তেমনি দাঁড়িয়েছে। জনগণ যতই অভিযোগ করুক, উদ্বেগ প্রকাশ করুক, সমস্যা ও সংকটের কথা বলুক, প্রতি ক্ষেত্রেই তাদের উদাসীন মনোভাব স্বাধীন দেশটাকে আজ অস্তিত্ব সংকটে ফেলে দিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে পেঁয়াজ নিয়ে সংকট, সব ইস্যু নিয়েই বালখিল্যতা কিংবা ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপি কিংবা অযথা বিরোধীদলকে জড়িয়ে নিজেদের দায় এড়ানোর নির্লজ্জ প্রচেষ্টা এই সরকারকে জনগণকে ঘৃণার পাত্রে পরিণত করেছে। গুম, খুন অপহরণের ভয়ে মানুষ মুখ খুলছেনা, এজন্য সরকার যদি নিজেদের সফল মনে করে তাহলে সেই পুরোনো প্রবাদটির কথাই মনে পড়ে, ‘পাগলের সুখ মনে মনে’।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্য উপাদান নিয়ে নিত্য নতুন রঙ-ঢঙের কথা বলেই যাচ্ছেন। গত ৪ অক্টোবর ভারত সফরে গিয়ে মনে হয় বাংলাই ভুলে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। পেঁয়াজ সঙ্কট নিয়ে তিনি হিন্দি ভাষায় রসিকতা করে বলেছিলেন: ’ম্যায়নে কুক কো বোল দিয়া, আব সে খানা মে পেঁয়াজ বান্দ কারদো....। হিন্দি বোলচাল দিয়ে সেই অনুষ্ঠানে ভারতীয়দের খুব হাততালিও পেলেন। তারপর আরো কয়েক দেশ ঘুরে দেশে ফিরে ২৯ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পেঁয়াজ না খেলে কী হয়? পেঁয়াজ ছাড়া আমি রান্না করি। পেঁয়াজ নিয়ে এত অস্থির হওয়ার কী আছে, আমি জানি না। গত শনিবার শেখ হাসিনা বললেন, ‘পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি, গণভবনে আজ পেঁয়াজ ছাড়া সব রান্না হয়েছে।” এই অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষ কষ্ট বা সংকটে পড়লে সেটা হয় উনার রসিকতার উপাদান। দেশের জনগণ জানতে চায়, কোনো কিছুর দাম বাড়লেই যদি সরকার প্রধান পরামর্শ দেয়, “ওটা ছাড়াই চলতে”, তবে ঔষুধের দাম বেড়ে গেলে রোগীকে তাঁর পরামর্শ কি হবে? পেঁয়াজ সংকট সৃষ্টির জন্য এই সরকারের অদক্ষতা, অযোগ্যতা, অর্বাচীনতা, অবহেলা যা অষ্টাদশ শতাব্দিতে ফরাসী বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্সের রানীর মতোই কা-জ্ঞানহীন কথাবার্তার মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা। যেমন-রুটি নাই তো কি হয়েছে, কেক খাবে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনার ক্ষমতার আধিপত্যের রঙিন সম্প্রসারণে দেশবাসী দুঃসহ যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট। আপনার খাদ্য তালিকা থেকে পেঁয়াজ মাইনাস করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ আপনি ও আপনার সরকার নিজেরাই এখন এ জাতির জন্য এক মহাসংকট। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। এই সংকট মোকাবেলায় জনগণ আপনার পদত্যাগ চায়। জনগণ বিশ্বাস করে, আপনারা সরকার থেকে মাইনাস হলে দেশের সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব। কারণ গণতন্ত্র ফিরে আসলে সাম্য-মানবিক মর্যাদা-ন্যায়বিচার ইত্যাদি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে। এটি সত্য যে, সুশাসন, ন্যায়বিচারের সাথে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক শত্রুতা রয়েছে।
চালের দামও বাড়ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকারের প্রচ্ছন্ন ছত্রছায়ায় সিন্ডিকেটের নজর এখন চালের বাজারেও। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো সংস্থার দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। এখন চালও জনগণকে বাড়তি দরে কিনতে হচ্ছে। বাজারে সরকারের কোনো নজরদারি নেই। যে যেভাবে পারছে সাধারণ মানুষের টাকা লুটে নিচ্ছে। গত কয়েকদিন চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সরকার বলেছে, সারাদেশে চালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। চালের আমদানিও গত বছরের এই সময়ের চেয়ে বেশি।
বিএনপির প্রতিবাদ সভা আজ: পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি’র উদ্যোগে আজ সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া একই ইস্যুতে দেশব্যাপী মহানগর ও জেলা সদরে কর্মসূচি পালিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।