Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লেভেলক্রসিং যেন মরণফাঁদ

কুমিল্লায় ১৩৭ পয়েন্টে ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কুমিল্লা রেললাইনে লেভেলক্রসিংয়ে নেই কোনো গেটম্যান। এমনকি যানবাহন ও পথচারি থামানোর ব্যারিয়ারও নেই। আর তাই ফাঁকা পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপার হচ্ছে। রেলওয়ের কুমিল্লা অঞ্চলে ১৩৭টি অবৈধ লেভেলক্রসিং মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম এবং লাকসাম-নোয়াখালি-চাঁদপুর রেলপথের বেশিরভাগ স্থানে গেটম্যান ও ব্যারিয়ার না থাকায় প্রায়ই ঘটছে দুঘর্টনা। কুমিল্লার লাকসাম থেকে আখাউড়া রুটে ৪৭টি, লাকসাম-নোয়াখালি রুটে ৩৮টি, লাকসাম-চাঁদপুর রুটে ৩৭টি এবং লাকসাম থেকে গুণবতী রুটে ১৫টি অবৈধ লেভেলক্রসিং রয়েছে। এসব রুটে বৈধ লেভেলক্রসিং রয়েছে মাত্র ৩২টি।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে অরক্ষিত লেভেলক্রসিংগুলো অস্বীকৃত বা অবৈধ। যা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ ও অনুমতি ছাড়াই যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে বিভিন্ন সংস্থা তৈরি করেছে। আর তাই এসব লেভেলক্রসিংয়ে লোকবল নিয়োগ এবং ব্যারিয়ার নির্মাণের কোনো এখতিয়ার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নেই। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ওইসব লেভেলক্রসিংয়ের সামনে নিজ দায়িত্বে সাবধানে পারাপার হওয়ার সতর্কবাণীর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেদের দায় সেরেছেন।

কুমিল্লা অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবৈধ লেভেলক্রসিং রয়েছে লাকসাম আখাউড়া এবং লাকসাম-নোয়াখালি রুটে। ব্যারিয়ার ও গেটম্যানবিহীন অবৈধ এসব লেভেলক্রসিং পারাপার হতে গিয়ে ট্রেন ও যানবাহন সংঘর্ষে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে বহু মানুষকে। গত বছর জানুয়ারি মাসে লাকসাম-আখাউড়া রুটের কুমিল্লার বিজয়পুরের জেলখানা বাড়ি লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় এক্সিম ব্যাংকের গাড়ি দুর্ঘটনায় সাতজন মারা যায়। ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর ওই একই লেভেলক্রসিং পার হতে গিয়ে সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৩ যাত্রী প্রাণ হারায়। ২০১১ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদলে অবৈধ লেভেলক্রসিয়ে ঢাকা অভিমুখি সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় ১টি বাসের ১৮ যাত্রী নিহত এবং ২৫ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এমনিভাবে প্রতিবছরই এসব অবৈধ লেভেলক্রসিং কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য মানুষের প্রাণ।

সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া যেসব লেভেলক্রসিং তৈরি হয়েছে তা জনসাধারণ ও যাত্রীবাহী পরিবহনের কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। চলাচলে সুবিধা সৃষ্টি হওয়ায় এসব লেভেলক্রসিং ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠেছে। তাই জনসাধারণের স্বার্থে ও জানমালের কথা বিবেচনা করে এসব অস্বীকৃত লেভেলক্রসিংয়ে গেট নির্মাণ ও গেটম্যান নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভুমিকা রাখতে পারে।

রেলওয়ে কুমিল্লার উর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, লাকসাম-নোয়াখালি-চাঁদপুর-আখাউড়া রুটে ৩৯টি লেভেলক্রসিং খুব সহসাই বৈধ করে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

রেলওয়ে ফেনির উর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী রিটন চাকমা জানান, লাকসাম থেকে গুণবতী পর্যন্ত যে ১৫টি অবৈধ লেভেলক্রসিং রয়েছে এগুলো বৈধ করার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ