‘আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তারা দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে। গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তারা কাজ করছে।’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেছেন।

বুধবার বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অনেকে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসার জন্য যোগযোগ করছেন’। হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্য প্রত্যাখান করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। এখন আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় স্বাধীনতার যে চেতনা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, পরবর্তীকালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, সেই স্বৈরাচারকে সঙ্গে নিয়ে তারা সরকার গঠন করেছিল। পরবর্তীতে ভোট ডাকাতি করে তাদের নিয়ে সংসদে গেছে। শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব। বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব কয়েকদিন আগে গণতন্ত্রকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করেছেন। তিনি আমাদের প্রিয় নূর হোসেন, যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন, তার বিরুদ্ধে কতগুলো কথা বলেছেন, যে কথাগুলো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। এতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুরোপুরি অপমান করা, দেশের গণতান্ত্রিক মানুষকে অপমান করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আমরা মনে করি, প্রকাশ্যে সংসদে, সব জায়গায় তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের পদত্যাগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসিচব বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা পদত্যাগ করেছেন এটা আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারছি, কিন্তু আমি এখনও জানি না।

বিএনপিতে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে সেজন্য নেতারা চলে যাচ্ছেন। কারণ, বাইরে থেকে তারেক রহমান দল চালাতে পারছেন নাম’- আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব কথা বলে ওনারা অভ্যস্ত। কারণ, তারা নিজেদের দল সামলাতে পারছেন না। প্রতিদিন যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে পরস্পর মারামারি করছেন। তাদের পতন ঢেকে রাখার জন্য তারা অহেতুক মিথ্যা কথা বলছেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে বলেও তিনি জানান।

জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হক প্রমুখ।