Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিন সিনেমা পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে ফিরলেন ডিপজল

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

চলচ্চিত্রের মুভি লর্ড খ্যাত মনোয়ার হোসেন ডিপজল নতুন করে চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনার যাত্রা শুরু করলেন। ১২ নভেম্বর কক্সবাজারে একসাথে নতুন তিন সিনেমার শূটিংয়ের মাধ্যমে নবদ্যোমে তিনি চলচ্চিত্রের নবযাত্রা শুরু করছেন। ব্যক্তিগত কারণ এবং চলচ্চিত্রের মন্দাবস্থার কারণে বেশ কয়েক বছর তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন। তবে সব প্রতিকূলতা দূরে ঠেলে আবার চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেছেন। এবার প্রযোজনার পাশাপাশি তিনি নিজেই তার নতুন সিনেমাগুলো পরিচালনা করবেন। এর আগে তিনি তিনটি সিনেমা পরিচালনা করেছিলেন। তারপর দীর্ঘদিন পরিচালনায় যুক্ত হননি। দেশসেরা পরিচালকদের নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেছেন। সিনেমা তিনটির শূটিং শুরু করে বড় আয়োজনের মাধ্যমে এগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরবেন বলে ডিপজল জানান। কক্সবাজারে কয়েকটি গান, অ্যকশন দৃশ্য ও কিছু দৃশ্যের শূটিং শেষে এ মাসের শেষের দিকে ঢাকায় ফিরে সিনেমাগুলোর ধরণ এবং নায়ক-নায়িকাদের আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেবেন। ডিপজল বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে এতদিন সিনেমা নির্মাণ থেকে দূরে ছিলাম। এখন সবকিছু গুছিয়ে নতুন করে কাজে নেমেছি। আশা করছি, দর্শক আমার কাছ থেকে যে ধরনের সিনেমা প্রত্যাশা করেন, তা তাদের উপহার দিতে পারব। তিনি বলেন, ভাল গল্প এবং নির্মাণ সংকটের কারণে আমাদের চলচ্চিত্রের দুরবস্থা চলছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে দর্শকের মনের মতো গল্পের সিনেমা নির্মাণ করা ছাড়া উপায় নেই। আমি বরাবরই দর্শকের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেছি। এখনও যখন দেখি টেলিভিশনে আমার অভিনীত সিনেমাগুলো প্রচার হয়, তখন ব্যাপক দর্শক তা দেখেন। এর মূল কারণ সিনেমার গল্প। গল্প নির্ভর সিনেমা নির্মাণ করলে যে দর্শক দেখেন, তা আমার অভিনীত সিনেমাগুলোই তার প্রমাণ। আধুনিক যুগেও যে দর্শক আমাদের সমাজ, পরিবার ও দেশের গল্প দেখতে চায়, তা বোঝা যায়। আমি দর্শকের এই মনোভাবটিকে ধরে রেখেই নতুন সিনেমা নির্মাণ করছি। তিনি বলেন, অশ্লীলতার কারণে যে সময়টাতে দর্শক পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখতে পারতেন না, সে সময়ে আমি নির্মাণ করেছিলাম কোটি টাকার কাবিন। এ সিনেমাটি পুরো চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটই বদলে দেয়। গল্প নির্ভর সুস্থ্যধারার সিনেমা হলে যে দর্শক দেখেন তা এ সিনেমার মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলাম। এ ধারাবাহিকতায় একে একে নির্মাণ করেছিলাম চাচ্চু, মায়ের হাতে বেহেশতের চাবিসহ অনেকগুলো সিনেমা। এ সিনেমাগুলো দর্শক এতটাই গ্রহণ করে যে অন্যান্য নির্মাতারাও অশ্লীল সিনেমা বাদ দিয়ে সুস্থ্যধারার সিনেমা নির্মাণ করেত থাকেন। এ ধারাটি ধরে রাখতে এবং সময়ের সাথে তাল মিলাতে না পারায় চলচ্চিত্র আবারও মন্দাবস্থার মধ্যে পড়ে। এখন তা একেবারে প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এ অবস্থা থেকেই আবারও আমি সিনেমা নির্মাণ শুরু করছি। সময়োপযোগী সিনেমা নির্মাণে হাত দিয়েছি। তিনি বলেন, একটি চলচ্চিত্র একটি বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি। এতে যদি বিনোদনের ঘাটতি থাকে এবং দর্শকের মনের মতো না হয়, তাহলে দর্শক তা দেখবেন কেন? এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমি চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ১২ নভেম্বর থেকে কক্সবাজারে শূটিং শুরুর মাধ্যমে সিনেমাগুলোর কাজ শুরু হবে। সেখানে একটানা ১৫ দিন কাজ করব। নতুন করে সিনেমা নির্মাণের এ ধারাটি অব্যাহত থাকবে। ডিপজল বলেন, সিনেমার দুরবস্থা কাটাতে ভাল সিনেমা নির্মাণের বিকল্প নেই। আমরা যদি চুপ করে বসে থাকি, তাহলে তো এ অবস্থা কাটবে না। কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু সিনেমা নির্মাণ করলেই হবে না, আমি কি সিনেমা নির্মাণ করছি, তার গল্প কেমন, দর্শক গল্প পছন্দ করবে কিনা, এতে কী ধররেন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে-এ বিষয়গুলো না ভেবে সিনেমা নির্মাণ করলে তা দর্শকের দেখার কোনো কারণ নেই। আমি নতুন যে তিনটি সিনেমা নির্মাণ শুরু করেছি, এগুলো অনেক ভেবেচিন্তে নির্মাণ করছি। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আমার নতুন সিনেমায় অনেক গুণীজনদের সম্পৃক্ত করেছি। দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আলম খানকে অনুরোধ করে গান করার জন্য রাজী করিয়েছি। তিনি আমার অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন। তার মতো এমন গুণী সঙ্গীতজ্ঞকে আমি আমার চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত করেছি। পাশাপাশি নতুন শিল্পীদেরও সিনেমাগুলোতে নিয়েছি। সবমিলিয়ে ভাল সিনেমা নির্মাণে যে ধরনের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের প্রয়োজন, তার সবকিছুই নেয়া হয়েছে। আশা করছি, দর্শকদের ভাল সিনেমা উপহার দিতে পারব। ডিপজল বলেন, আমাদের সিনেমাকে আমাদেরই বাঁচাতে হবে। ধার করে বা আমদানি করা সিনেমা দিয়ে দেশের সিনেমা বাঁচানো যাবে না। আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির মধ্যেই যুগোপযুগী সিনেমা নির্মাণ করতে হবে। তিনি জানান, এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে সিনেমা নির্মাণ করব। সিনেমার বর্তমান দুর্দশা কাটাতে খুব বেশি সিনেমার প্রয়োজন পড়ে না। বছরে যদি চার-পাঁচটা হিট সিনেমা উপহার দেয়া যায়, তবে তা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট। এতে অন্য নির্মাতারাও উৎসাহী হয়ে সিনেমা নির্মাণে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। আমি এ কাজটি করতে যাচ্ছি। ডিপজল জানান, ইতোমধ্যে আমার বেশ কয়েকটি সিনেমার কাজ শেষ হয়েছে। নতুন সিনেমার পাশাপাশি এগুলোও মুক্তি দেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ