পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেলুনে ব্যবহারের জন্য সিলিন্ডারের ভেতরেই হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা চায় বিস্ফোরক পরিদফতর। দেশের প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপার ও থানার ওসিকে এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করে চিঠি দেয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাঠে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক সামসুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি, সিলিন্ডারের ভেতরে এভাবে হাইড্রোজেন তৈরি করা খুব ঝুঁকিপূণ। দেশের প্রায় প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপার ও থানা ওসিকে এ বিষয়ে সতর্ক করে আমরা চিঠি দিচ্ছি। এর আগেও দিয়েছি। এখন নতুন আবারো করে চিঠি দিচ্ছি।
আইনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরক অ্যাক্ট-১৮৮৪ এবং গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা-১৯৯১’, ‘এলপিজি বিধিমালা-২০০৪’ অনুযায়ী এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এজন্য ওই তিন অ্যাক্ট ও বিধিমালা ছাড়াও পেট্রোলিয়াম আইন-২০১৬ এর ২০ ধারা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। এই আইনগুলোর আওতায় যে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর জন্য বিস্ফোরক পরিদফতর থেকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন পরিত্যক্ত ও ব্যবহার অনুপযোগী সিলিন্ডারকে হাইড্রোজেন তৈরির রি-অ্যাক্টরে রূপান্তর করে কস্টিক সোডার জলীয় দ্রবণের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়ামের গুঁড়ো (ছাই) মিশিয়ে সিলিন্ডারের ভেতরে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন করে বেলুনে ভর্তি করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন প্রক্রিয়াটি একটি তাপ উৎপাদনকারী পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে প্রচুর পরিমাণ হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনের সঙ্গে-সঙ্গে প্রচন্ড তাপ উৎপাদন করা হয়। অন্যদিকে কস্টিক সোডা সিলিন্ডার ক্ষয়কারী বিকারক। যা সিলিন্ডারের পুরুত্ব ক্ষয় করে এবং সিলিন্ডারের চাপসহন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সিলিন্ডারের মধ্যে উৎপাদিত হাইড্রোজেন গ্যাসের অণুগুলোর গতিশক্তি বেড়ে যাওয়ায় সিলিন্ডারেরর গায়ে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি হয়। সিলিন্ডারের চাপ সহনীয় মাত্রা এক সময় অতিক্রম হওয়ায় সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটে।
গত ৩০ অক্টোবর মিরপুরের রূপনগরে বেলুনে গ্যাস ভরার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সাত শিশু মৃত্যুবরণ করে। ওই সময় আরও ১৫ জন আহত হয়। ঘটনার পর পরই বিস্ফোরক পরিদফতর দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ৫ নভেম্বর ওই তদন্ত প্রতিবেদন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে বলেও বিস্ফোরক পরিদফতর স‚ত্রে জানা গেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছ‚ সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্য আছে মা-বাবা ও সন্তানদের হাইড্রোজেন ভরা বেলুন কেনায় নিরুৎসাহিত করা এবং কোথাও এই ধরনের সিলিন্ডার দেখলে স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া।
রাজধানীর মিরপুরের ঘটনায় যে সিলিন্ডারটির বিস্ফোরণ ঘটে, সেটি এলপিজি সিলিন্ডার ছিল। আর এ ধরনের সিলিন্ডারে যে এলপিজি ভরা হয়, সেটি কম চাপযুক্ত গ্যাস। কিন্তু হাইড্রোজেন একটি অতি উচ্চচাপ যুক্ত গ্যাস। ফলে এলপিজি সিলিন্ডারের মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনের চেষ্টা করলে সেটি ফেটে যাবে। অন্যদিকে, যদি সিলিন্ডারে হাইড্রোজেন উৎপাদন না করে শুধু এলপিজির মতো রিফিল করা হয়, তাহলে সেটি ফেটে যাওয়ার ভয় থাকে না। মিরপুরের এলপিজি সিলিন্ডারটি রঙ ছিল লাল। সাধারণত দুই ধরনের গ্যাস দিয়ে বেলুন ফোলানো হয়। হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন। এক ঘনমিটার হিলিয়ামের দাম সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা বিপরীতে এক ঘন মিটার হাইড্রোজেনের ম‚ল্য ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে সিলিন্ডারে এই হাইড্রোজেন তৈরি করতে খুব বেশি হলে ৬০ থেকে ১০০টার মতো খরচ হয়। কম ম‚ল্যে ব্যবসা করার লোভে বেলুনওয়ালারা না-জেনে, না-বুঝে এসব প্রাণঘাতী কর্মকান্ড করেন।
পরিদফতর স‚ত্র জানায়, সর্বশেষ গত ১৪ মে অবৈধভাবে বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভর্তিকরণ, বিনা লাইসেন্সে এলপিজির মজুদ, বিক্রয় ও সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, স¤প্রতি এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি বিভিন্ন উৎসব ও মেলায় সিলিন্ডারে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন করে বেলুনে ভর্তি করে সরবরাহ এবং মেলায় ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছে বিক্রি করছে। এই ধরনের সিলিন্ডার থেকে বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভর্তির সময় সিলিন্ডার ও বেলুন বিস্ফোরিত হয়ে ব্যবহারকারী এবং সাধারণ মানুষের প্রাণহানিসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।