পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি বিশেষ নিরীক্ষায় ধরা খেয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল আরো প্রায় ৪১ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে দুই দফায় ইফার ডিজির ফেরত দেয়া টাকার পরিমাণ দাঁড়াল সোয়া ৭৩ কোটিতে।
প্রথম দফায় গত ২৩ অক্টোবর সোনালী ব্যাংক পাবলিক সার্ভিস কমিশন শাখায় একটি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৩২ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় গত ৩১ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের একই শাখায় ৩টি চেকের মাধ্যমে ৪২ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেন তিনি। সরকার ফিরে পেল তার হারিয়ে যাওয়া সোয়া ৭৩ কোটি টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি পরীক্ষার জন্য সরকার একটি বিশেষ নিরীক্ষা দল প্রেরণ করেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব বাংলাদেশ কার্যালয় থেকে এ নিরীক্ষা দল প্রেরণ করা হয়। সিভিল অডিট বিভাগের এ নিরীক্ষা দল অন্যান্য অনিয়মের সাথে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের কয়েকটি বড় ধরনের আর্থিক ঘাপলা খুঁজে পান। তারা কেবলমাত্র ৯/৭/১৯ থেকে ৮/৮/১৯ পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পের ডিপিপি, বরাদ্দ ও ব্যয়, ক্যাশবহি, লেজার বুক ও রেকর্ডপত্র যাচাই করে ৩১,৯৯,১৫,২২০/- টাকার একটি বড় ধরনের অনিয়ম খুঁজে পান। বিষযটি নিয়ে মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তার পক্ষ থেকে বলা হয় এ টাকা ৬৪ জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে খবর নিলে দেখা যায় সেখানে এ টাকা প্রেরণ করা হয়নি। ফলে বিষয়টি ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। প্রতিনিধিদল ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে গত ২৩ অক্টোবর মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল একদিনেই উক্ত ৩১,৯৯,১৫,২২০/- টাকা চেক নং-১৪৬০৭০৮ মারফত ফেরত দেন। চেকের টাকা চালান নং টি-৩১ তারিখ ২৩ অক্টোবর, সোনালী ব্যাংক লি:, পাবলিক সার্ভিস কমিশন শাখা, আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭-এ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।
এরপর একই ব্যাংকে আরো ৩টি চেকের মাধ্যমে চালান নং টি-৯৮, চালান নং টি-৯৯ এবং চালান নং টি-১০০ মারফত মোট ৪১,২৭,৩০,০৪৪ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়। যে তিনটি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৪১ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয় তা হলো চেক নং-১৪৬০৭৩১ মারফত ২৪,০৫,৫২,২২৫ টাকা, চেক নং -১৪৬০৭৩২ মারফত ৪,৫৫,০৪,৮১৯ টাকা এবং চেক নং-১৪৬০৭৩৩ মারফত ১২,৬৬,৭৩,০০০ টাকা। মোট ৪১,২৭,৩০,০৪৪ টাকা গত ৩১ অক্টোবর সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়। এত টাকা ফেরত দেয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা দলের সদস্যবৃন্দ। তারা বলেন, সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা দল না এলে এ অর্থ কখনোই পাওয়া যেত না।
এ দিকে মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর রোববার এক জরুরি সভায় মিলিত হন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন আগারগাঁও সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সকল পরিচালক এবং কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। তারা বলেন, সামীম মো. আফজালের দুনীতি নজিরবিহীন। স্বজনপ্রীতিতে তিনি চ্যাম্পিয়ন এবং অর্থ আত্মসাতে বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছেন। নিয়োগ কমিটির সভাপতি থেকে নিজের আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। রাতের বেলায় নিজের রুমে খাতায় লিখিয়ে আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করানো, জাল সনদপত্রে চাকরি দেয়া, কোটা না থাকায় নিজের ভাতিজা ও ভাগ্নিকে ভিন্ন জেলার বাসিন্দা দেখিয়ে চাকরি দেয়াসহ বিভিন্ন নির্লজ্জ কর্মের মাধ্যমে নিজেকে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
এ ছাড়াও বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকে টাকা এফডিআর করে কমিশন খাওয়া শুরু করেছেন। ঢাকার ব্যাংক বাদ দিয়ে তিনি ফার্মার্স ব্যাংকের কুমিল্লা শাখায় সাড়ে ২৯ কোটি টাকা এফডিআর করে রাখেন। আর এখন তা ফেরত আনতে ব্যর্থ হন। তারা বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভায় সদস্যবৃন্দ প্রকাশ্যে যে ব্যক্তিকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করেন তিনি কিভাবে মহাপরিচালক পদে আসীন থকেন? বক্তারা ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।