পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ইনকিলাব রিডার্স ফোরাম ঢাকা জেলা কমিটির কো-কনভেনর প্রফেসর খলিলুল্লাহ চৌধুরী গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, গত ২২ জানুয়ারি ১৬ সংবাদপত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপনের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি সংস্থা সরকারি অর্থ ব্যয় করে সংবাদপত্রে যে বিজ্ঞপ্তিটি প্রচার করেছে, এর কোনো জাতীয় বা দাপ্তরিক গুরুত্ব আছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পাঠকপ্রিয় প্রভাবশালী পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাবে ১৮.০১.১৬ তারিখে প্রকাশিত ‘জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার’! শীর্ষক সংবাদটি মিথ্যা সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালকে জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদটি নাকি ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উস্কানিমূলক। কিন্তু ইফা কর্তৃপক্ষ এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি, এমন কথা তারাও দাবি করতে পারেনি বরং বলেছে, ‘সরকার জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণ করবে’ মর্মে ইফা ডিজি বিবিসি বাংলায় কোনো বক্তব্য রাখেনি, যা বিবিসির নিজস্ব ওয়েবসাইট ঠিকানা উল্লেখ করে, ইফা কর্তৃপক্ষ জনগণকে জানিয়ে দিয়েছেন। ইনকিলাবের সংবাদে কোথাও বলা হয়নি যে, ইফা ডিজি একথা বলেছেন যে, ‘সরকার জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণ করবে’।
তাহলে কোন কথাটিকে তারা অসত্য ও বানোয়াট বলছেন? তাহলে বিবিসির ওয়েবসাইটে ১৫.০১.১৬ তারিখে আপলোড করা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনটি আসলে কী? তাছাড়া এসব বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গত বছরের নভেম্বরের প্রথম দিকে সারাদেশে ইফা কর্মকর্তাদের যে চিঠি দিয়েছে তাও কি মিথ্যা? ইফা ডিজি তো বিবিসির প্রতিবেদন ও ইফা কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরিত চিঠির কথা নিজেই স্বীকার করেছে। তাহলে ইনকিলাবের সংবাদে অসত্য, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট হলো কীভাবে? আমাদের মনে হয়, নিজেদের জারিজুরি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ইফা ডিজি বেসামাল হয়েই এধরনের অসঙ্গতিপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি সরকারি তহবিলের অর্থ ব্যয় করে সংবাদপত্রে প্রকাশ করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছে। বিজ্ঞপ্তিটিতে দাবি করা হয়েছে, গত ৩৬ বছর ধরে দেশের প্রায় ৩ লাখ মসজিদের ১ লাখ ৭২ হাজার ইমাম ও খতীবকে ইফা নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। এ দাবি সামীম আফজালের বিজ্ঞপ্তিতে শোভা পায় না। কেননা, ৩৬ বছর ধরে বিগত সরকারগুলো উপযুক্ত মহাপরিচালকদের তত্ত্বাবধানে ইমাম প্রশিক্ষণের কাজ করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজ ডিজি সামীম আফজাল এ মহান কাজটির সর্বনাশ ও অবমাননাই শুধু করেছেন। তিনি ইমামদের প্রশিক্ষণের নামে নানাবিধ দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচার করেছেন। ইমামদের সমাবেশে গায়িকা এনে লোকগীতি পরিবেশন করিয়েছেন। বিদেশি তরুণ তরুণীদের যৌথনৃত্য অনুষ্ঠিত করিয়েছেন। ইমামদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এমনকি দলীয় নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করেছেন।
প্রিয় পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাবের সাথে যোগাযোগ করে জেনেছি, ইফা ডিজির বক্তব্য কেন নেয়া হয়নি এ কথা বলে তার দফতর থেকে সংবাদপত্রে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ চিঠির জবাব, সংশোধনীটি প্রকাশের সময় দেয়া ও পত্রিকার বক্তব্য জানার অপেক্ষা না করেই তড়িঘড়ি করে সেদিনই সংবাদপত্রে ইনকিলাবের প্রতি বিষোদগার করে এই বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে ইফা কর্তৃপক্ষ, যা তাদের অসহিষ্ণুতা ও মানসিক অস্থিরতারই বহি:প্রকাশ। ইফা ডিজির বিগত বছরগুলোর ছোট বড় সব আমলনামা ইতোমধ্যেই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনেও জমা আছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও তার কর্মকা- রেকর্ড হয়ে আছে। নানা টালবাহানা ও বুজরুকি করে এই ডিজি নিলর্জের মতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় এখানো টিকে আছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের জনৈক পরিচালকের ইয়ারদোস্ত পরিচয় দিয়ে তিনি স্বাভাবিক তদন্ত ও কার্যক্রমেও বিঘœ ঘটান বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে। দৈনিক ইনকিলাবের পক্ষ থেকেও আমাদের বলা হয়েছে যে, ডিজির সব কথা ও কাজের রেকর্ড তাদের হাতে রয়েছে। মিডিয়াকে দেয়া তার বক্তব্য কেবল ইনকিলাবই নয় দেশের অন্যান্য সংবাদপত্রেও ছাপা হয়েছে। গত ১৭ তারিখের মানবজমিন পত্রিকার প্রথমপাতায়ও এ সম্পর্কিত সংবাদ ছাপা হয়েছে। এ সবের কোনো ব্যাখ্যা বা জবাব না দিয়ে ডিজি কেবল ইনকিলাবকে গালমন্দ করে একটি বিজ্ঞাপন প্রচারকেই যথেষ্ট মনে করেছেন। পাশাপাশি তার অন্যায় অপকর্ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে অক্ষম, হতাশাগ্রস্ত, দুর্নীতিবাজ, দুরাচারিদের মতোই খিস্তিখেউরের পথ অবলম্বন করেছেন। কেউ তার অপকর্ম ধরিয়ে দিলে তাকে আলবদর ও স্বাধীনতা বিরোধীদের দোসর বলে গালি দিয়ে কোণঠাসা করার সস্তা কৌশল প্রয়োগ করছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজরা যে ভুক্তভোগীদের গালাগাল দিয়ে রক্ষা পায় না, তা এই ধড়িবাজের জানা নেই। জননেত্রী যত দ্রুত এ বেহায়া লোকটির দায় নিজের কাঁধ থেকে নামাবেন তার ব্যক্তিত্ব ও তার সরকারের জন্য ততই মঙ্গলকর হবে। ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে সরকারের ইমেজ ধূলিমলিন করার ক্ষেত্রে এ ব্যক্তিটির কর্মকা- গত কয়েক বছর ধরেই নেত্রীর জন্য বিষময় ফল বয়ে আনছে।
এই হঠকারী ব্যক্তি নেত্রীর চোখে ধূলা দেয়ার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নামের নিচে লিখেছে ‘প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’। এটি মূলত বঙ্গবন্ধুকে বড় করা নয়। এ হচ্ছে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যাকে অবমাননার শামিল। কেননা, বঙ্গবন্ধু কেবল একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নন। তিনি বাংলাদেশেরই প্রতিষ্ঠাতা ও স্থপতি। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাকে একটি মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের চেয়েও ক্ষুদ্র সংস্থা বা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বলে প্রচার করায় তার সম্মান বাড়ে না বরং তাকে ছোট করা হয়। আমরা ধড়িবাজ ডিজি সামীম আফজালের দ্রুত অপসারণ চাই। দৈনিক ইনকিলাবের বিষয়ে তার ভাষা ও বিবৃতি সংযত করার আহ্বান জানাই। অন্যায় করে পার না পেয়ে ডিজি কেবল ইনকিলাবের উপরই তার ঝাল ঝাড়বেন আর কেউ তাকে কিছু বলবে না, দেশ এখনো এমন মগের মুল্লুক হয়ে যায়নি। দেশব্যাপী আমরা ইনকিলাব রিডার্স ফোরামের লাখো সদস্য তার এধরনের আচরণ, বক্তব্য ও বিজ্ঞপ্তি প্রচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, অবিলম্বে তার অপসারণ দাবি করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।