পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পেঁয়াজের বাজারে কারসাজির মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ কোটি টাকা করে গত চার মাসে ভোক্তাদের ৩ হাজার ১৭৯ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) নামের একটি সংগঠন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের মূল্য নৈরাজ্য’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়।
চার মাসে পেঁয়াজের সিন্ডিকেট যে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তা দিয়ে দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা সম্ভব বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত মূল্য তালিকা এবং নিজস্ব উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পেঁয়াজের মূল্য ধরে সংগঠনটি কারসাজি চক্রের হাতিয়ে নেয়া অর্থের পরিমাণ বের করেছে।
এ জন্য ২ জুলাই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পেঁয়াজের মূল্য বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজের লজিক্যাল মূল্য (যৌক্তিক মূল্য) ৩০ টাকা এবং অক্টোবর মাসের ৩১ দিন লজিক্যাল মূল্য ৫০ টাকা ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে জুলাইয়ে ৩৯৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, আগস্টে ৪৯১ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সেপ্টেম্বরে ৮২৫ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অক্টোবরে ১ হাজার ৪৬৪ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ভোক্তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
তিনি বলেন, স¤প্রতি পেঁয়াজের খুচরা মূল্য বর্তমানে ১২০-১৫০ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি এখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের পক্ষে এখন পেঁয়াজ দুর্লভ পণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত দুই সপ্তাহে অকল্পনীয় হারে পেঁয়াজের মূল্য বাড়লেও মূলত চার মাস আগে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঈদুল আজহার এক মাস আগে জুলাই মাসের ২ তারিখ থেকে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়। সেই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে ২৪ বার পেঁয়াজের মূল্য ওঠা-নামা করেছে। পেঁয়াজের মূল্যের এই ওঠা-নামার পেছনে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করেছে।
সরবরাহ কম ও আমদানি খরচ বৃদ্ধির অজুহাতে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ করে পলাশ মাহমুদ বলেন, পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কম ও আমদানি খরচ বৃদ্ধি এই দুটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির সময়কাল লক্ষ করলে দেখা যায় তাদের দু’টি যুক্তিই শুধুমাত্র অজুহাত ও ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণার কৌশল। কারণ, ঈদুল আজহার এক মাস আগে কোথাও সরবরাহ ঘাটতি ছিল না এবং আমদানি খরচ বেশি ছিল না। শুধুমাত্র ঈদকে সামনে রেখে সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা অব্যাহতভাবে দাম বাড়াতে থাকে।
তিনি বলেন, ভারত যেদিন দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় তার পরদিনই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। যদিও এক দিনের মধ্যেই বর্ধিত দামের পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসা সম্ভব নয়। এমনকি বর্ধিত দামে কোনো এলসিও খোলা হয়নি। ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ এক মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু দেশের বাজারে সর্বত্রই এখনও ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ ব্যবসায়ীদের এই পেঁয়াজ কম দামে আগেই কেনা ছিল এবং যথেষ্ট সরবরাহ ছিল।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রায় ১৮ কোটি ভোক্তা কতিপয় দুষ্কৃতকারী সিন্ডিকেট সদস্যের কাছে জিম্মি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ১৩ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট শনাক্ত করা হয়েছে। গত চার মাসে বাণিজ্যমন্ত্রী অন্তত পাঁচবার স্বীকার করেছেনÑ পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সিন্ডিকেট জড়িত। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে সিন্ডিকেটের হাত থেকে ভোক্তাকে মুক্ত করতে সিসিএস’র পক্ষ থেকে চারটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলোÑ প্রথমত, ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযানের মতো পেঁয়াজের মূল্য বাড়ানো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো এবং দ্রæত কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেয়া। দ্বিতীয়ত, দ্রæত একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পেঁয়াজের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া। তৃতীয়ত হলো, পেঁয়াজ ছাড়াও যে কোনো পণ্যে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি হলে সরকার থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ মূল্য ঘোষণা করা, যাতে সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করতে না পারে। চতুর্থত, পণ্য বা সেবার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে অংশীজনদের নিয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরে একটি সেল গঠন ও সার্বক্ষণিক তদারকি করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য শহিদুল ইসলাম এবং জয়ন্ত কৃষ্ণ জয়। এর মধ্যে শহিদুল ইসলাম বাজার ঘুরে পেঁয়াজের মূল্য সংগ্রহ করেন। আর জয়ন্ত কৃষ্ণ জয় পেঁয়াজের মূল্য বিশ্লেষণ করে যৌক্তিক দাম ও সিন্ডিকেটের হাতিয়ে নেয়া টাকার পরিমাণ বের করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।