পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর বাজারে দফায় দফায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। মাসের ব্যবধানে ১০০ টাকা এবং সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। ঢাকার বাজারে পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ, হাজীপাড়া, খিলগাঁও, শান্তিনগর, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, ধোলাইপাড়, সায়েদাবাদ, স্বামীবাগ এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ‘পেঁয়াজের দাম কমতে সময় লাগবে’ বক্তব্যের পর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম আরো কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। অথচ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ। অথচ পেঁয়াজ সঙ্কটের ধোঁয়া তুলে মূলত পাগলা ঘোড়ার মতোই যেন ছুটছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম তিন দফা বেড়েছে। ফলে বেশিরভাগ বাজারেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। আপেল, কমলার চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেশি হয়ে গেছে। অবশ্য ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ব্যর্থতা, লাগামহীন কথাবার্তা এবং ভারতের উপর অধিক নির্ভরশীলতার কারণে পেঁয়াজ কাদাচ্ছে দেশের মানুষকে।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহে যেসব বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা বিক্রি হয়, সেই বাজারগুলোতে এখন দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে। আর ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। যাত্রবাড়ীর আড়তের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রাজধানীর শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে তিন দফা। প্রথম দফায় কেজিতে ১০ টাকা এবং পরের দুই দফায় কেজিতে ২০ টাকা করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জহির বলেন, পেঁয়াজের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে আমরাও বিস্মিত। ব্যবসা করি ঠিক আছে আমাদেরও তো পেঁয়াজ খেতে হয়। বাণিজ্যমন্ত্রীর পর প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন- পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর আমরা ধারণা করেছিলাম এবার হয়তো পেঁয়াজের দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবে দেখছি উল্টো। দাম তো কমেইনি উল্টো আরও বেড়েছে। রামপুরার বাসিন্দা মামুন খান বলেন, আমরা আসলে মগের মুল্লুকে আছি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন পেঁয়াজের বড় চালান দেশে আসছে। এমন ঘোষণায় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখছি কী, ওই বক্তব্যের পর উল্টো পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল। আবদুর রশিদ নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে কার্যকরী কোনো মনিটরিং নেই। যে কারণে হুটহাট করে একটার পর একটা পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ধুম-ধাম করে পণ্যের দাম বাড়া কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। শনির আখড়ার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মু মিজানুর রহমান বলেন, ভারতের ওপর সরকার নির্ভরশীল হওয়ায় ৪ গুণ বেশি দরে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। জনগণের প্রতি জবাবদিহি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে কর্নাটকের কৃষকদের দাবির মুখে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দিয়েছে ভারত সরকার। এখন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে তারা। তবে এর জন্য বেশ কতগুলো শর্ত মানতে হবে ভারতের ব্যবসায়ীদের। ভারতের এই পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম কমে আসতে পারে বলে মনে করছেন বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে সীমিতভাবে হলেও একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
সঙ্কট ও মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। পরে এই নির্দেশ কিছুটা শিথিল করা হয়। রফতানি বন্ধের আগে খোলা এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) বিপরীতে পেঁয়াজ দিতে শুরু করে তারা। বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, গত ২৮ অক্টোবর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক শাখা এক আদেশে সীমিতভাবে পেঁয়াজ রফতানির অনুমতির বিষয়টি জানায়। এই আদেশ চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এই স্থগিতাদেশে কারণে সীমিতভাবে হলেও একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সরকার পেঁয়াজের মূল্য আয়ত্বের মধ্যে রাখতে চেষ্টা করছে। মেঘনা ও সিটি গ্রুপের আমদানি করা পেঁয়াজ দুয়েকদিনের মধ্যেই দেশে প্রবেশ করবে। এ মাসের মাঝামাঝিতে বাজারে উঠতে শুরু করবে দেশি পেঁয়াজ। ফলে পেঁয়াজের সঙ্কট আর থাকবে না বলে আশা করছি।’
জানতে চাইলে রাজধানীর শ্যামবাজারের আমদানিকারক হাজি মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, ‘রফতানির নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহারের খবর শুনেছি। তবে এটি আমাদের জন্য ততটা সুবিধাজনক নয়। কারণ আমি যতদূর জেনেছি, ভারত পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার জন্য এই অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমাদের জন্য নয়। ব্যাঙ্গালুরুর গোলাপি পেঁয়াজ মালয়েশিয়ায় ভালো চলে। আর সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আনা আমাদের জন্য কোনোভাবেই লাভজনক হবে না, অনেক খরচ হবে। এছাড়া নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে হয়তো এমনিই ভারতের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।