Inqilab Logo

শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চাষির মুখে তৃপ্তির হাসি

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সাধারণত শীতকালে সব ধরণের সবজি চাষ হয়। সবজি অঞ্চল খ্যাত মীরসরাই-সীতাকুন্ড বিখ্যাত। এখানকার সবজি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠানো হয়। এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভরশীল। কৃষির উৎপাতি ফসল বিক্রী করে সংসারের যাবতীয় খরচ মেটায়। তবে আগাম সবজি চাষ কৃষক যেমনি লাভবান হয়, তেমনি ক্রেতা সাধারণ শীতকালীন সবজি আগাম স্বাদ গ্রহন করে তৃপ্তি মেটাতে পারে। এই জন্য উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি লাভের আশায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোর যেন ভাগ্য খুলে গেছে। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের শুরুতে চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাবেন এখানকার কৃষকরা। চাষিরা জানান, যেকোনো ফসল আগাম চাষ হলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। তাই মুনাফাও বেশি। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক মুনাফা লাভের জন্য ফুলকপি, বাঁধাকপির, বরবটি, ঢেরশ, সিম, লাউ, বেগুন, শসা, মুলা, লাল শাক, মুলার শাক ইত্যাদি চাষ করছেন চাষিরা। পানি জমে না এমন উঁচু জমি কপি চাষের জন্য উপযুক্ত বলেও জানান তারা।

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম সবজি চাষের দেখা মিলেছে উপজেলার দুর্গাপুর, চৈতন্যহাট, করেরহাট, খৈয়াছরা, কমলদহ, আবুরহাট, আবুতোরাব, মঘাদিয়া, তালবাড়িয়া, মস্তাননগর, আমবাড়িয়া, ওয়াহেদপুর, হিঙ্গুলীসহ বিভিন্ন এলাকায়। দক্ষিণ মঘাদিয়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম বর্গা জমি নিয়ে গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন।

পশ্চিম গড়িয়াশ গ্রামের সজল চন্দ্র দেবনাথ জানান, বসতবাড়ির আঙিনায় এবং বাড়ির পাশে প্রায় দেড় কানি জমি নিয়ে সারাবছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে থাকেন তিনি। ক্ষেত থেকে সরাসরি মিঠাছরা বাজারে তুললে পাইকাররা এসব সবজি কিনে নেন। শীতের পূর্বে এই সময়ের আগাম সবজিতে ভালো দাম পাওয়া য়ায় বলে প্রতিবছর এভাবেই চাষ করেন অনেক কৃষক।

চৈতন্যহাট গ্রামের সবজি কৃষক সাধন চন্দ্র শীল বলেন, ‘সবজির কদর সারাদেশেই রয়েছে। তবে তা আগাম চাষ করতে পারলে আরও বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করলে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করা সম্ভব। সবজি ক্ষেতে পোকামাকড় আক্রমণ করবেই।’ সেজন্য কীটনাশক ব্যবহার না করে আধুনিক বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষক জমি থেকে তুলে লাল শাক ও মুলার শাক মুঠা প্রতি ২০টাকা হারে বিক্রি করছে বাজারে যার খুচরা মূল্য ৩০-৩৫ টাকা। বরবটি কৃষক কেজি প্রতি ৩০-৩৫ টাকা পাইকারী বিক্রী করে। যার বাজারে খুচরা মূল্য প্রায় দ্বিগুণ ৫৫-৬০ টাকা। মণ প্রতি প্রায় ২৩৫০-২৪০০টাকার মতো।

এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, অগ্রিম চাষাবাদে কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। মীরসরাইয়ে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ভরা মৌসুমের চাষের অনেক বেশি লাভবান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ