পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুর্বিষহ যানজট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। যানজটের কবলে যেন স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো মহাসড়ক। তবে সময় যত যাচ্ছে ততই যানজটের ভোগান্তি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়ে হাঁসফাঁস করা, কর্ম শক্তি হারানো ও বিরক্ত হওয়া যেন নিয়তি।
গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫ টায় ফেনী থেকে বাবাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন সোহেল। উদ্দেশ্যে ছিল বাবাকে নিয়ে কয়েকটা দিন ঢাকায় ঘুরে বেড়ানো। লোকাল বাসেই ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা অসহনীয় যানজট অতিক্রম করে শনির আখড়া পৌঁছান তারা। গ্রাম থেকে ঢাকায় আসা বৃদ্ধ বাবা যানজটে বসে হাঁসফাঁস করছিলেন তখন। অন্যদিকে বাবার উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়। বাবাকে নিয়ে শনির আখড়া নেমে যেতে বাধ্য হলেন। এদিকে হঠাৎ বাবার প্রেসার বাড়ার কারনে বাসার পরিবর্তে সিএনজিতে করে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের ছুটেন তারা। ততক্ষনে সোহেলের বাবার প্রেসার বেড়ে যায় দ্বিগুন। ডাক্তার দ্রুত হসপিটালে ভর্তি করাতে বলেন সোহেলের বাবাকে। সোহেল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তার বাবা এই যাত্রায় বেঁচে গেলেও ডাক্তার বলেছে আগামী এক সাপ্তাহ বেড রেস্ট থাকতে। সরকারের বড়কর্তা ব্যক্তিদের এই দিকে খেয়াল নেই। সবাই ব্যস্ত লুটপাট ও রাজনীতি নিয়ে। গত কয়েক দিন ধরে নজিরবিহীন ভয়াবহ যানজট ফলে একদিকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অন্যদিকে বিমানবন্দরগামী বিভিন্ন ফ্লাইটের অনেক যাত্রী সময়মতো তাদের ফ্লাইট ধরতে পারছেন না। এই সড়কে গত তিনদিন ধরে ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে চার ঘণ্টা।
সকাল থেকে দুপুর, দুপুর থেকে বিকাল, এরপর সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে বিভিন্ন গৌন্তব্যে যাওয়া জন্য অপেক্ষারত যানবাহনগুলো। এভাবেই চলছে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ নানা পদক্ষেপ নিলেও ক’দিন যেতে না যেতে মুখ থুবড়ে পড়ে। এ নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, জনবল সঙ্কটের কারণে যথাযথ কাজ করা যাচ্ছে না। যাত্রীরা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশ ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছে না। অন্যদিকে, সড়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকা, গাড়ি থামার নির্দিষ্ট স্টেশন না থাকা, নিয়ম মেনে গাড়ি না চালানোর কারণেই মূলত কদিন পর পর নিয়মিত যানজট হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর থেকে শনির আখড়া পর্যন্ত মহাসড়কে অন্তত ৫০ কিলোমিটার গাড়ির দীর্ঘ সারি পড়ে রয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় যানজট ভয়বহ রূপ নিচ্ছে। এছাড়া রাজধানী থেকে চট্টগ্রামগামী গ্রিন লাইন পরিবহনের যাত্রী মিলন হোসেন বলেন, সকাল ৯ টায় গাড়িতে চড়ে বেলা সাড়ে ১০ টায় তিনি মোগদা পাড়া পৌঁছে যানজটে পড়েন। সেখানেই দুই ঘণ্টা বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই) গবেষক ইকরাম হোসেন বলেন, যানজট কি শুধু সময়ই নষ্ট করে যাচ্ছে? শুধু সময়ই নষ্ট করছে, বিষয়টা এমন নয়। সময়ের সঙ্গে যেহেতু সব ধরনের কর্মপরিকল্পনার সম্পর্ক, তাই মানুষের মানসিক চাপ বাড়ছে, কর্মপরিকল্পনা ব্যাহত হচ্ছে, অপরিমেয় আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। আক্রান্ত করছে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য আক্রান্ত করছে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সার্বিক অর্থনীতিকে। সেই সঙ্গে শিক্ষা-সংস্কৃতি, বিনোদন ও সামাজিক কর্মতৎপরতাকে ব্যাহত করছে। মানুষের আবেগ, মনমেজাজ এবং সুখ-অসুখকে প্রভাবিত করছে।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবদুল আল মামুন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মহাসড়কে মালবাহী ট্রাক ও লরির সংখ্যা বেশি। তাই দ্রুতগতিতে গাড়ি এগুতে পারছে না আর এতেই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।