Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বালাইনাশকমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহী চাষিরা

মোঃ আজিজুল হক টুকু, নাটোর থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বালাইনাশকমুক্ত সবজি চাষে ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠছে নাটোরের সবজি চাষিরা। পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে সবজিকে রক্ষা করার জন্য বেশিরভাগ জমিতেই কীটনাশকের ব্যবহার করা হয় যা স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ। সবজি চাষে পোকামাকড় ও রোগবালাই বড় বাধা। বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড়ের হাত থেকে সবিজ ফসলকে রক্ষার জন্য সবজি চাষিরা তাই প্রথমেই সাধারণত বিষাক্ত বালাইনাশক প্রয়োগ করে থাকেন। কিন্তু এমন কেনো বালাইনাশক নেই, যা মানব দেহের জন্য কম বেশি বিষাক্ত নয়। নাটোরে সাধারণত যথেচ্ছভাবে মাত্রাহীন পরিমাণে বালাইনাশক ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সবচে বেশি মাত্রায় বালাইনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে সবজিতে। সবজিতে কোনো প্রকার সময় বিচার না করেই সেসব তা তোলা ও খাওয়া হয়। অথচ প্রায় প্রতিটি কীটনাশকেরই রয়েছে কম বেশি ক্ষতিকর প্রভাব। অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে যেমন তেমন, কিন্তু সবজি ফসলের ক্ষেত্রে বালাইনাশক ব্যবহার প্রতিদিন আমাদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। কেননা এসব ফসলের অধিকাংশ আমরা কাঁচা বা সরাসরি খাই অথবা অল্প রান্না করে খাই। তা না হলে আবার এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে পেটের বিভিন্ন রোগ হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

নাটোর সদরের দত্তপাড়া এলাকার মো. হানিফ ও মো. হাসান বলেন বিগত ৫ বছর ধরে ৬০ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন সময়ে ফুলকপি, কাঁকরোল, সিমসহ অন্যান্য সবজি চাষ করছেন। পূর্বে পোকা মারা বিষ স্প্রে করা হতো কিন্তু পোকা তো মরতই না উপরন্তু শ্রমিক ও সময় খরচ বেশি হতো। বর্তমানে ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করে যেমন পোকাও মরে আবার শ্রমিক ও সময় খরচও সাশ্রয় হয়, পরিবেশ বান্ধব ও স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে না। তারা ৬০ শতাংশ জমিতে ২০টি ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করেন। তারা আরোও বলেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বøক সুপারভাইজারদের কাছ থেকে ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহারের সুবিধা সম্বন্ধে জানতে পেরে আগ্রহী হয়ে উঠেন।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ৭টি উপজেলার বর্তমানে ২৪৯ হেক্টোর জমিতে ফুলকপি, পেঁপে, বেগুন, কাঁচাকলা, লাউ, শশা, মিষ্টিকুমড়া, পটল, করলা, সীমসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে ফেরোমেন ফাঁদ, আলোক ফাঁদ, নিম পাতার রস স্প্রে জাতীয় বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে বালাইনাশক মুক্ত সবজি চাষ করা হচ্ছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার নাটোরে মানব স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার জন্য বালাইমুক্ত সবজি চাষে চাষীদের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে বলেন, প্রকল্পের বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কৃষকদের ১ দিনের বালাইমুক্ত সবজি চাষের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে কৃষকরা তাদের জমিতে সবজি ভেদে ফেরোমেন ফাঁদ, আলোক ফাঁদ, নিম পাতার রস স্প্রে প্রভৃতি পদ্ধতি প্রয়োগ করে। এতে কৃষকদের শ্রমিক, সময় ও অর্থ সবকিছুতেই সাশ্রয়ী হয় এবং মানব শরীরের রোগ বালাইও কম হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ