পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দলে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলনে। সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সম্পাদকীয় পদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। ক্যাসিনোতে জড়িত থাকা ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে বাদ পড়তে পারেন কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ কেউ। এ ছাড়া দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসবে বলেও আলোচনা রয়েছে।
আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় সম্মেলনের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠন ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর শ্রমিক লীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সর্বত্রই এখন পরিবর্তনের হাওয়া। সহযোগী সংগঠনের নেতারা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন পদ পাবার জন্য। অন্য দিকে আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের পদ টিকিয়ে রাখতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সম্মেলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, সম্মেলনে পরিবর্তন আসবে তা নিয়মিত বিষয়। প্রবীণদের জায়গায় নবীনরা আসবে তা চিরাচরিত নিয়ম। সম্মেলনের বিষয়ে একটা কথাই বলব- স্বচ্ছ, সৎ, দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত নেতারাই সব জায়গায় পদে আসবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা দেশে আসার পর দুঃসময়ে যারা ছাত্রলীগের হাল ধরেছিলেন এবং এক-এগারোর সময় যারা দলে ভূমিকা পালন করেছেন এবার দলের প্রেসিডিয়াম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য তাদেরই মূল্যায়ন হচ্ছে। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। প্রেসিডিয়ামে থাকা প্রবীণদের প্রায় বেশির ভাগেরই ঠাঁই হচ্ছে। এখানে ঠাঁই পাবেন দলের বর্তমান কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য। এবার উপদেষ্টা পরিষদও হবে অনেক বেশি ‘শক্তিশালী’ ও ‘কার্যকর’।
এ দিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সবচেয়ে বড় চমক সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। যদি পরিবর্তন হয় তাহলে ওবায়দুল কাদেরের স্থলে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, কাজী জাফরউল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এ কয়জনের মধ্যে কেউ আসতে পারেন।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিকেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চারজন মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও দীপু মনি সবাই প্রমোশন পেয়ে প্রেসিডিয়ামে যেতে পারেন। সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে কয়েকজন পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। দুইজন একই পদে থাকতে পারেন আবার কয়েকজন বাদ পড়ার আলোচনাতেও রয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বি এম মোজাম্মেলকে বিশেষভাবে মূল্যায়িত করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্পাদকমন্ডলীর মধ্যে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, সম্পাদকীয় কাজে সক্রিয় ছিলেন তারা বড় পদ পাবেন। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া বড় পদে আসতে পারেন।
এছাড়া সাবেক ছাত্রনেতা ও বিভিন্ন জেলা থেকে দলের জন্য ভূমিকা রেখেছেন এমন অনেককে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে আলোচনায় আছেন- বাহাদুর ব্যাপারী, লিয়াকত সিকদার, অজয় কর খোকন, নজরুল ইসলাম বাবু, মাহমুদুল হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার রোটন। এ ছাড়া গতবারের মতো এবারও আলোচনায় না থাকা অনেককেই প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিয়ে আসতে পারেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগেও বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মহানগরের শীর্ষ নেতাদের ফোন করে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগে শীর্ষ পদে আসতে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। এতে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক মহানগর সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি আবুল বাশার, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন, সাবেক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজের ছেলে মহানগর দক্ষিণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ওমর বিন আব্দুল আজিজ তামিম।
মায়া চৌধুরীর অনুসারী নেতারা প্রচার করছেন তিনি আবারও মহানগরের দায়িত্ব পাচ্ছেন। যদিও তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের একটি প্রস্তুতি উপ-কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে অতীতে তার ছেলে দীপু চৌধুরীর কর্মকান্ড ও মেয়ের জামাই সাবেক র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদের নারায়ণগঞ্জ সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকায় ব্যাকফুটে রয়েছেন। কিন্তু মায়ার সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন নেই এবং তার মতো নেতৃত্ব দলের প্রয়োজন বলে মনে করেন তৃণমূলের অনেক নেতা।
এছাড়া আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং বর্তমানে মহানগরের উপদেষ্টা। সহ-সভাপতি আবুল বাশার অরিজিনাল ঢাকাইয়্যা হিসেবে পরিচিত। বর্তমান কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত ঢাকাইয়্যা হিসেবেই সভাপতির পদ পেয়েছিলেন বলে মন্তব্য বেশির ভাগ নেতার। তাই সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আবুল বাশার বেশ আলোচনায়। তিনি রমনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ দিন। ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার।
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ আবারও পদে আসতে পারেন। সাবেক ত্যাগী ছাত্রনেতা হিসেবে দলের জন্য অবদান রয়েছে এবং এক-এগারোর সময় দলের পরীক্ষিত নেতা হিসেবে বেশ খ্যাতি রয়েছে তার। এদিকে মেয়র সাঈদ খোকনও মহানগর দক্ষিণের শীর্ষ পদের জন্য আলোচনায় আছেন। তবে সাম্প্রতিক ডেঙ্গু ইস্যু ছাড়াও শাহে আলম মুরাদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্ব›েদ্বর কারণে বেশ সমালোচনা রয়েছে তার। লালবাগে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে ময়লা ফেলে রাখার বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছিল।
অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম এম এ আজিজের বড় ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর বিন আব্দুল আজিজ তামিম তরুণ নেতা হিসেবে আলোচনায় আছেন। লন্ডন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী এ নেতা বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদে আছেন। একই সাথে তিনি বাংলাদেশ চিংড়ি ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া শীর্ষ পদে আলোচনায় আছেন- মহানগর নেতা হুমায়ুন কবির, কামাল চৌধুরী, গোলাম আশরাফ তালুকদার, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, আখতার হোসেন, ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু।
এদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারাও নড়েচড়ে বসছেন। নিষ্ক্রিয় মহানগর হিসেবেই পরিচিত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এ কমিটি। সম্মেলনের আলোচনায় নেতারা বেশ সক্রিয় ও তৎপর হয়ে উঠেছেন। এখানে সভাপতি হিসেবে আলোচনায় আছেন- বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহানগর উত্তরের কোষাধ্যক্ষ ওয়াকিল উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ কাদের খান। এ ছাড়া মহানগরের সহ-সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও আলোচনায় আছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান, এস এম মান্নান কচি আলোচনায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সম্মেলন মানেই নতুন মুখ। তবে কোনো আপস নেই। দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ নেতারাই নেতৃত্বে আসবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।