পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্যাসিনো সম্রাটের কাছে পদোন্নতি পেতে নিয়মিত ধরনা দিতেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আশ্রয়দাতাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা যেমন রয়েছেন, আবার রয়েছেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে তাদের প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের নজরদারীর আওতায় আনা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে ক্যাসিনো ও টেন্ডারবাজি তদন্তের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা। রিমান্ডে ক্যাসিনোকান্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও একই কমিটির বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানের জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যর পেয়েছেন তদন্তের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেফতার হওয়া খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, সেলিম প্রধানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্য পেতে ২৪ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এসব চিঠি দেয়া শুরু হয়েছে। ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং আইনের আটটি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। দায়িত্বশীল সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন, যারা তার কাছে যেতেন সম্রাট তাদের নাম বলে দিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ও র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, ক্যাসিনো কারবার, আন্ডারওয়ার্ল্ড, অস্ত্র, মাদক, অবৈধ অর্থ, জবর-দখলসহ সকল অপকর্ম নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সম্রাট ও আরমানকে। তাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই সম্রাট, খালেদ মাহমুদ, জিকে শামীম ও আরমান চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো কারবার ও টেন্ডারবাজিসহ নানা রকমের অপরাধ চালিয়ে আসছিল। আর তাদের সহায়তা করেছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারাও তাদের সহায়তা করেছেন। বিনিময়ে তারা পেয়েছেন মোটা অংকের কমিশন। টেন্ডার বাণিজ্য করে তারা নানা কায়দায় টাকা কামিয়েছেন। খালেদ ও জিকে শামীমকে কয়েকদফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, টেন্ডার জমা দিলেই সব সেক্টরের লোকজনকে কমিশন দিতে হতো। কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া বন্ধ করে দিত ওরা। যাদের বেশি কমিশন দেয়া হতো তার মধ্যে রেলপথ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ক্রীড়া পরিষদের কতিপয় প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা রয়েছেন। সম্রাট ও আরমান রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব। এরআগে ডিবি পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। র্যাবের হেফাজতে থাকা সম্রাট ও আরমানকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সংস্থার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট ও আরমান দেশের বাইরে অর্থপাচারের ব্যাপারে অনেক তথ্য দিচ্ছেন। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই ও থাইল্যান্ডে বেশ কিছু অর্থ পাচার করেছেন। তাদের সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ ছিল। সম্রাট জানিয়েছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সাথে কমিশন ও এলাকার দখল নিয়ে বছর খানেক ধরে বিরোধ চলছিল। জিসান ও তার লোকজন তাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সম্রাট, জিকে শামীম, খালেদ ভুইয়া ও আরমানকে আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে নানাভাবে সহায়তা করেছেন অন্তত বিশ প্রভাবশালী। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতা রয়েছেন। তাছাড়া ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বেশ কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে। তাদের ব্যাপারে সরকারের হাইকমান্ডকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের নজরদারীর আওতায় আনা হয়েছে। উপরের গ্রিন সিগন্যাল পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযানে এই পর্যন্ত ২২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারমধ্যে সম্রাট, খালেদ মাহমুদ, জিকে শামীমসহ ৮ জন প্রভাবশালী আছেন। এই সময়ে ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি থানায় ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারমধ্যে মাদক ও অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া ১১টি মামলার তদন্ত করছে র্যাব। মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের করা ৮টি মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
২৪ সংস্থাকে সিআইডির চিঠি
ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেফতার হওয়া খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, সেলিম প্রধানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্য পেতে ২৪ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এসব চিঠি দেয়া শুরু হয়েছে। ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং আইনের আটটি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি।
যেসব সংস্থাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি লিমিটেড ও আবাসন খাতে ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব উল্লেখযোগ্য বলে জানা গেছে। যে ছয়জনের তথ্য চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগের নেতা ও প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীম, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও তার ছোট ভাই একই থানার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান ওরফে মিজান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।