Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনুমোদনহীন সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম্য

আনোয়ারায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা

নুরুল আবছার তালুকদার, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় দিনদিন বেড়ে চলছে অনুমোদনহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম। ফলে অদক্ষ চালকদের হাতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য যাত্রী। বেপরোয়াভাবে এ অটোরিকশাগুলো চলাচল করলেও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) বা ট্রাফিক পুলিশ কার্যত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এছাড়া আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচলরত চালকদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইন্সেস। প্রশিক্ষণহীন এসব চালকদের বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর ফলে প্রায় ঘটছে সড়কে দুর্ঘটনা। প্রসাশনিকভাবে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত বসালেও দেখা যায় যে, যে পথে ভ্রাম্যমান আদালত বসেছে সে পথে না গিয়ে অন্য পথে চলে গিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌছে তারা। এভাবে চলছে আনোয়ারা পিএবি সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যাত্রী পরিবহন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা পিএবি সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে অনুমোদনহীন চট্টমেট্রো-থ ১২, চট্টগ্রাম-১৩ ও চট্টগ্রাম-১৪ এবং চট্টগ্রাম-থ সিরিয়ালের ৩ হাজারেরো অধিক অটোরিকশা চলাচল করে থাকে। এসব অনুমোদনহীন অটোরিকশা যানবাহন আইন অনুযায়ী পরিবহন কাজে ব্যবহারের নিয়ম না থাকলেও বিশেষ এক টোকেনের মাধ্যমে গাড়িগুলো চলাচল করত। প্রতিদিন বিভিন্ন স্টেশনে লাইনম্যানদের মাধ্যমে ১০-৩০ টাকা ওয়াবিল নিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে। বর্তমানে বিভিন্ন অভিযোগের কারণে টোকেনের মাধ্যমে অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দেয় ট্রাফিক বিভাগ। যার কারণে সড়কে অনুমোদনহীন অটোরিকশার চলাচল কমে যায়। ফলে বেড়ে যায় যাত্রী ভোগান্তি ও চালকদের ভাড়া নৈরাজ্য। প্রতিদিন কেইপিজেডের শ্রমিক পরিবহনে শ’ শ’ বাস, জিপ ও মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে নেয়ায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গাদাগাদি করে স্বল্প সংখ্যক বাসে চলাচল করছে হাজার-হাজার যাত্রীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার প্রধান সড়কের জয়কালী বাজার, মালঘর বাজার, বরকল ব্রিজ, থানার মোড়, মেডিকেল মোড়, কালাবিবি দিঘীর মোড়, চাতরী চৌমুহনী, কাফকো সেন্টার, ১৫নং ফেরিঘাট, সিইউএফএল কলোনি, পারকিবিচ, বটতলী রুস্তমহাট বাজারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে অসংখ্য অটোরিক্সার স্টেশন রয়েছে। অদক্ষ চালকের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ছাড়াও যাত্রীদের পোহাতে হয় গাড়ি ভাড়া নৈরাজ্য ও নানা হয়রানী। বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার আসলে মনে হয় যেন যাত্রীরা চালকদের কাছে জিম্মি। চাতরী চৌমুহনী থেকে আনোয়ারা জয়কারী বাজার স্টেশনে নির্ধারিত ভাড়া ১০ টাকা হলেও ওইদিনগুলোতে দিতে হয় ২০-৩০ টাকা। চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে কর্ণফুলী মইজ্জারটেক স্টেশনে ভাড়া ২০ টাকা হলেও তারা আদায় করে নেয় ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত।

চাতরী চৌমুহনীস্থ ওয়ান মাবিয়া সিটি সেন্টার ব্যবসায়ীক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক বাবুল জানান, অনুমোদনহীন অটোরিক্সার সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে বেকার যুবক ও কিশোররা প্রশিক্ষণ ও ড্রাইভিং লাইন্সেস ছাড়া চালকের আসনে বসে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবন ও অঙ্গহানী ঘটছে। এগুলো বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।
চাতরী চৌমুহনী ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে টোকেন দিয়ে কোন অটোরিকশা চলাচল করছে না। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কিছু সাংবাদিকদের অনুরোধে অনুমোদনহীন গাড়ি আইন অনুযায়ী আটক করলেও তা ছেড়ে দিতে হচ্ছে। আমরা আইনানুগ চেষ্টা চালালেও ঐসব কারণে নিরুপায় হয়ে চলতে হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, উপজেলার প্রধান সড়কে অনুমোদনহীন অটোরিকশা চলাচল বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে অনেক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ