পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শীর্ষ যুবলীগ সন্ত্রাসী খোরশেদের মৃত্যুতে চট্টগ্রামে পাতাল জগতের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। র্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্তদের অনেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। কেউ আবার বিদেশে পালানোর পথ খুঁজছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলমান শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেই যুবলীগ নেতা খোরশেদের মৃত্যুর ঘটনায় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসী ও হাইব্রিডদের মাঝেও উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
র্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধী যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। খোরশেদের পতনে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় স্বস্তি বিরাজ করছে। খোরশেদ ও তার বাহিনীর চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসে অতিষ্ট ব্যবসায়ীরা খুশি। তারা তার সহযোগীদেরও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার রাতে নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে র্যাবের সাথে গোলাগুলিতে প্রাণ হারান খোরশেদ। পুলিশের খাতায় সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী হলেও খোরশেদ ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। র্যাব পুলিশের তথ্যমতে তার বিরুদ্ধে যুবলীগ কর্মী আবদুল মান্নান হত্যাসহ আটটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি শ্যুটারগান, দুইটি বিদেশি পিস্তল ও ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব।
নগরীর মোগলটুলি এলাকায় কমার্স কলেজ সড়কের পাশে তার বাড়ি। খোরশেদ আহম্মদ ওই এলাকার মোহাম্মদ শফীর পুত্র। খোরশেদের দুই স্ত্রী রয়েছেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তার পাঁচ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তান আছে। দ্বিতীয় স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। গতকাল দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়-তার বাড়িতে দলের নেতাকর্মীসহ স্বজনদের ভিড়।
এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। র্যাবের অভিযানে তার মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিক তার অনুসারী ও ক্যাডারের বিক্ষোভ প্রর্দশন করার চেষ্টা করলেও র্যাব-পুলিশের বাধায় তা পন্ড হয়। তবে গতকাল তারা ছিলো নীরব। বাড়ির আশপাশে তাদের জটলা দিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দেখা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল কাদের ওরফে মাছ কাদেরের হাত ধরে তার উত্থান। আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি এবং মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মোগলটুলি ও আগ্রাবাদ এলাকার ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তার বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত চাঁদা তুলতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি থাকলেও প্রাণ ভয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করতেন না। তাছাড়া যুবলীগের নেতা হওয়ায় পুলিশও তাকে অনেকটা সমীহ করত। গেল দুই বছর ধরে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাদেরের সাথে তার দূরত্ব বাড়ে। নিজের প্রভাব বাড়াতে আশপাশের কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রæপকেও দলে বেড়ায় খোরশেদ।
অনুসারীদের দাবি, খোরশেদ দলীয় কোন্দলের শিকার হয়েছে। কোন্দলের কারণেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। ২০১৪ সালে যুবলীগ কর্মী কানা কুদ্দুসকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় খোরশেদ নেতৃত্ব দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় খোরশেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। গ্রেফতার হয়ে কারাগারেও ছিলেন খোরশেদ।
পুলিশ জানায়, এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজির পাশাপাশি টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ এবং কিশোর গ্যাঙয়ের নেতৃত্ব দিতেন খোরশেদ। সদরঘাট থানার ওসি ফজলুর রহমান ফারুকী বলেন, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে আটটির বেশি মামলা রয়েছে। কোতোয়ালী এবং ডবলমুরিং থানায়ও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, তালিকাভুক্ত এ সন্ত্রাসীকে ধরতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়। তবে প্রতিবারই সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। রোববার রাতে আগ্রাবাদের জীবন বীমা ভবনের পেছনে একটি আস্তানায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযানে যায় র্যাব।
এদিকে চলমান শুদ্ধি অভিযানের শুরুতেই চট্টগ্রামে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নামে আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণকারীরা গা ঢাকা দিতে শুরু করে। ইতোমধ্যে বিদেশে পালিয়ে গেছেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। পলিটেকনিক এলাকার যুবলীগ নেতাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছাড়াও কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর আত্মগোপনে রয়েছেন। খোরশেদের পতনের পর অপরাধীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।