Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাতাল জগতে আতঙ্ক

বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসী খোরশেদের মৃত্যুতে আগ্রাবাদে স্বস্তি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শীর্ষ যুবলীগ সন্ত্রাসী খোরশেদের মৃত্যুতে চট্টগ্রামে পাতাল জগতের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। র‌্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্তদের অনেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। কেউ আবার বিদেশে পালানোর পথ খুঁজছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলমান শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেই যুবলীগ নেতা খোরশেদের মৃত্যুর ঘটনায় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসী ও হাইব্রিডদের মাঝেও উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

র‌্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধী যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। খোরশেদের পতনে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় স্বস্তি বিরাজ করছে। খোরশেদ ও তার বাহিনীর চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসে অতিষ্ট ব্যবসায়ীরা খুশি। তারা তার সহযোগীদেরও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার রাতে নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে র‌্যাবের সাথে গোলাগুলিতে প্রাণ হারান খোরশেদ। পুলিশের খাতায় সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী হলেও খোরশেদ ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। র‌্যাব পুলিশের তথ্যমতে তার বিরুদ্ধে যুবলীগ কর্মী আবদুল মান্নান হত্যাসহ আটটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি শ্যুটারগান, দুইটি বিদেশি পিস্তল ও ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।

নগরীর মোগলটুলি এলাকায় কমার্স কলেজ সড়কের পাশে তার বাড়ি। খোরশেদ আহম্মদ ওই এলাকার মোহাম্মদ শফীর পুত্র। খোরশেদের দুই স্ত্রী রয়েছেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তার পাঁচ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তান আছে। দ্বিতীয় স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। গতকাল দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়-তার বাড়িতে দলের নেতাকর্মীসহ স্বজনদের ভিড়।

এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। র‌্যাবের অভিযানে তার মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিক তার অনুসারী ও ক্যাডারের বিক্ষোভ প্রর্দশন করার চেষ্টা করলেও র‌্যাব-পুলিশের বাধায় তা পন্ড হয়। তবে গতকাল তারা ছিলো নীরব। বাড়ির আশপাশে তাদের জটলা দিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দেখা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল কাদের ওরফে মাছ কাদেরের হাত ধরে তার উত্থান। আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি এবং মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মোগলটুলি ও আগ্রাবাদ এলাকার ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তার বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত চাঁদা তুলতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি থাকলেও প্রাণ ভয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করতেন না। তাছাড়া যুবলীগের নেতা হওয়ায় পুলিশও তাকে অনেকটা সমীহ করত। গেল দুই বছর ধরে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাদেরের সাথে তার দূরত্ব বাড়ে। নিজের প্রভাব বাড়াতে আশপাশের কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রæপকেও দলে বেড়ায় খোরশেদ।

অনুসারীদের দাবি, খোরশেদ দলীয় কোন্দলের শিকার হয়েছে। কোন্দলের কারণেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। ২০১৪ সালে যুবলীগ কর্মী কানা কুদ্দুসকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় খোরশেদ নেতৃত্ব দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় খোরশেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। গ্রেফতার হয়ে কারাগারেও ছিলেন খোরশেদ।

পুলিশ জানায়, এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজির পাশাপাশি টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ এবং কিশোর গ্যাঙয়ের নেতৃত্ব দিতেন খোরশেদ। সদরঘাট থানার ওসি ফজলুর রহমান ফারুকী বলেন, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে আটটির বেশি মামলা রয়েছে। কোতোয়ালী এবং ডবলমুরিং থানায়ও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, তালিকাভুক্ত এ সন্ত্রাসীকে ধরতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়। তবে প্রতিবারই সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। রোববার রাতে আগ্রাবাদের জীবন বীমা ভবনের পেছনে একটি আস্তানায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযানে যায় র‌্যাব।

এদিকে চলমান শুদ্ধি অভিযানের শুরুতেই চট্টগ্রামে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নামে আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণকারীরা গা ঢাকা দিতে শুরু করে। ইতোমধ্যে বিদেশে পালিয়ে গেছেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। পলিটেকনিক এলাকার যুবলীগ নেতাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছাড়াও কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর আত্মগোপনে রয়েছেন। খোরশেদের পতনের পর অপরাধীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।



 

Show all comments
  • Md Golam ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    গুড।আজকের ঘুম ভালো হবে
    Total Reply(0) Reply
  • MD Abu Bakkar ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    সবাস RAB 7 আপনাদের প্রাতি সবার দোয়া রহিল
    Total Reply(0) Reply
  • Shalom Refaz ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    আলহাদুলিললাহ অনেক দিন পর একটা ভাল খবর সুলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ শুক্কুর আলী ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ সব কিছু আল্লাহর হুকুমেই হয়
    Total Reply(0) Reply
  • Ruhul Bari ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    সন্ত্রাসীদের কোন দল নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Baker Siddiqui ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    Please go ahead, thanks. This is good news for us
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Jafor ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    100% Good Thank you so much
    Total Reply(0) Reply
  • Anis Rahman ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
    Very very good
    Total Reply(0) Reply
  • Saddam Sami ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
    বিচারবহির্ভুত হত্যা কারোই কাম্য নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Asas ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
    অভিযানের নাম হোক রাজনীতি শুদ্ধকরণ অভিযান। যারা রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে বিত্তবান হচ্ছে সবগুলোকেই ধরা উচিৎ। ক্যাসিনোর দায়ে সম্রাট গ্রেফতার ইয়াবারদায়ে বদি কে গ্রেফতার করা দরকার??
    Total Reply(0) Reply
  • গনিম ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৩ এএম says : 0
    বাংলাদেশ রেব বাহিনী কে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা । আমরা অনেক অনেক খুশি হলাম
    Total Reply(0) Reply
  • গনিম ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
    বাংলাদেশ রেব বাহিনী কে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা । আমরা অনেক অনেক খুশি হলাম
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০১ এএম says : 0
    বাংলাদেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর অপরাধীদের গ্রফতার শান্তি প্রতিষ্ঠা মাত্র ছব্বিশ ঘন্টার কাজ। এলিট বাহিনীতো র‍্যাব প্রধানতো বাংলা মায়ের সাহসী সন্তান অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চাদাবাজ মাদক কারবারী গড়ফাদার চোরাচালান এবার বন্ধ হবে ইনশাআল্লাহ। রাজনৈতিক নেতাগন যদি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর আহবান সাড়া দেন। আইন শৃংখলা বাহিনীর স্বাভাবিক স্বাধীন কাজ করতে দিলে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি সাধারণ মানুষের জীবনের জানমালের নিরাপত্তা মাঝেই রাজনৈতিক সরকারের সার্থকতা। দেশে দেশীয় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র কৌশল আছে ভবিষ্যতে থাকবে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ভীষন কর্মসূচি পরিকল্পিত পরিকল্পনা যতাযত নেই,টানা একযোগের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে বিশাল উন্নয়ন অর্থনৈতিক পরাক্রমশালী দেশের কাতারে নিয়ে গিয়ে ও সাধারণ মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুদ্রা দারিদ্র্য মুক্তির উপযুক্ত কর্মসাফল্য কোথায়। আইনের কঠোর কঠিন প্রয়োগ এর মাধ্যমে শৃংখলা আসবে।
    Total Reply(0) Reply
  • হারুন ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:০২ এএম says : 0
    বিশেষ করে চট্টগ্রামে হঠাৎ আংগুল ফুলে কলা গাছ হওয়া নেতাদের চেক করা হোক। কেমনে রাতারাতি বাডার ঘর দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা কামাই তেছে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুবলীগ

১১ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ