পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বুয়েটসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে আন্দোলন এটি শুধু আবরার ফাহাদের হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতেই নয় মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভারতের সঙ্গে করা অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যেই যৌক্তিক সাহসী প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তার সেই দাবির বাস্তবায়নই হচ্ছে চলমান আন্দোলনের মূলমন্ত্র। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ অসম এবং অধীনতামূলক ও সার্বভৌমত্ব বিপন্নকারী চুক্তির বাতিল চায়। দেশের জনগণ, গত একদশকে ভারতের সঙ্গে করা সকল চুক্তির বিস্তারিত জানতে চায়। এই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। হুমকি ধামকি দিয়ে আন্দোলন দমন করা যাবেনা। এই আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের গোলামীর জিঞ্জির ছিঁড়তে স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন। গতকাল (রোববার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী হুমকী দিচ্ছেন অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘ছাত্রদের ১০ দফা মেনে নেয়া হয়েছে আবার কিসের আন্দোলন?’ প্রথম কথা হচ্ছে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ দফা শেখ হাসিনা কিংবা তাদের নিয়োগকৃত ভিসি এমনিতেই মেনে নেয়নি, তাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। ১০ দফা মানার ঘোষণা দিলেই সরকারের সব অপরাধ মাফ হয়ে যায়না। ভারতের সঙ্গে অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে বন্যপ্রাণীর মতো পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। সেইসব চুক্তি বাতিল বাতিল করতে হবে।
রিজভী বলেন, কি অপরাধ ছিল শহীদ আবরার ফাহাদের? আবরার ফাহাদ তো বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছিলো। লিখেছিলো বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে। তাহলে ছাত্রলীগের যেসব অস্ত্রধারীরা আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে তারা কোন দেশের স্বার্থ রক্ষা করেছে। কোন অপশক্তির স্বার্থ রাখা করেছে? এই বিবেকশূণ্য ক্যাডারদের মগজ ধোলাই করলো কারা?
ছাত্রলীগ মনুষ্য চরিত্র হারিয়ে বন্য পশুর চরিত্র নিয়েছে মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগ একেকবার একটির চেয়ে আরেকটি ভয়ঙ্কর কাÐ ঘটানোর পর বেরিয়ে আসতে শুরু করে সারাদেশে তাদের ভয়ঙ্কর অপকর্মের কথা। এখন গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের টর্চার সেলের কথা। এটি তো নতুন নয়। নিকট অতীতে, লগি বৈঠা হাতুড়ি চাপাতি নিয়ে সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগ যখন বর্বর আক্রমণ চালিয়েছিল, ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে নির্যাতন চালিয়েছিল তখনও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল ছাত্রলীগের টর্চারে সেলের কথা। তখন যদি ছাত্রলীগের বর্বরতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে আবরার হত্যাকান্ড ঘটতো না। ঠান্ডা মাথায় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ছয়টি ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করতে করতে মেরে ফেলার মতো নৃশংসতা কোনো সভ্য রাষ্ট্র কল্পনাও করতে পারেনা। আবরার হত্যাকান্ডের দায় ছাত্রলীগের অভিভাবক আওয়ামী লীগ এড়াতে পারেনা।
নোবেল নিয়ে চট্টগ্রামের মেয়রের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যাতে নোবেল পুরস্কার না পান, সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই নাকি বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, মেয়র নাছির এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, তিনি আসলেই আওয়ামী লীগ। অন্যত্থায় তার বোঝা দরকার ছিল, নোবেল পুরস্কার র্যাব-পুলিশের হাতে নয় যে, চাইলেই শেখ হাসিনাকে দেয়া সম্ভব। কিংবা অনুগত দলদাস সাংবাদিক দিয়ে প্রচারণা চালিয়েও নোবেল পাওয়া সম্ভব নয়।
র্যাব সদস্যকে সীমান্তে পিটিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে কোন কথা না বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুদের ফেনী নদীর পানি,চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর, বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যবেক্ষণে রাডার স্থাপনের অধিকার, আমদানিকৃত এলপিজি দিয়ে আসার এক সপ্তাহ না যেতেই সেই বন্ধুরাই আমাদের কয়েকজন র্যাব সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে বেধড়ক পিটিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর এতো বড় অন্যায়ের খবর পত্রপত্রিকায় দেখে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য এই তাবেদার সরকার কানে দিয়েছে তুলো, পিঠে বেঁধেছে কুলো, চোখে পরেছে ঠুলো। এতো বড় ঘটনার পরও সামান্য প্রতিবাদ পর্যন্ত করলো না সরকার। প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে পাখির মতো মানুষ হত্যা করছে বিএসএফ। মানুষ ধরে নিয়ে গিয়ে পঙ্গু করে দিচ্ছে। অথচ বিএসএফ এর বন্দনা করছে এই সরকার। প্রধানমন্ত্রী দাসখত লিখে দিয়ে আসার সময় সীমান্ত হত্যা নিয়ে কোন কথাও বলেনি।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বর্ণনা দিতে গিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাঁর শারীরিক অবস্থার আশংকাজনক অবনতি ঘটেছে। কারাগারে নেয়ার সময় সম্পূর্ণ সুস্থ, দেশনেত্রী এখন হুইল চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারেন না। তিনি কারও সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারেন না। নিজের খাবার নিজে খেতে পারেন না। মাথার চুলও বাঁধতে পারেন না। তাঁর পোশাকও আরেকজনকে পরিয়ে দিতে হয়। হাত-পা শক্ত হয়ে গেছে। হাত-পায়ের আঙ্গুল ফুলে গেছে। পঁচাত্তর বছর বয়সী নেত্রীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে জীবন ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বারবার ইনস্যুলিন পরিবর্তন এবং ইনস্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরেও কোন অবস্থাতেই তার সুগার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কোন কোন সময় এটি ২৩ মিলিমোল পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খাবারের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দেয়াতে শরীরের ওজন অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে। যথাযথ চিকিৎসার বিষয়ে আমরা বারবার দাবি করা সত্তে¡ও দেশনেত্রীকে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি বিশিষ্ট দেশের কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।
বেগম জিয়ার জরুরিভাবে উন্নত চিকিৎসা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যথার কারণে রাত্রে তাঁর ঘুম হচ্ছে না এবং সারাক্ষণ তিনি অস্থির থাকছেন। আর্থ্রাইটিস ও ফ্রোজেন শোল্ডার সমস্যার কারণে স্বাস্থ্যের আরও গুরুতর অবনতি ঘটছে। ঘাড়-মাথা সোজা রাখতে পারছেন না। কয়েক বছর আগে অপারেশন করা চোখ এবং হাঁটুর ব্যাথা ক্রমশ: বৃদ্ধির ফলে অসহ্য ব্যথায় কাতরাচ্ছেন ‘গণতন্ত্রের মা’। দেশবাসী দেশনেত্রীর জীবনের পরিণতি নিয়ে অজানা আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। সরকার অমানবিক এবং বেআইনি কাজে এতো অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে যে তারা বেগম খালেদা জিয়ার বিপদজনক অসুস্থতাও ভ্রæক্ষেপ করছে না। সরকারের অমানবিক ও অসুস্থ আচরণ প্রমাণ করে দেশনেত্রীকে প্রাণনাশের ষড়যন্ত্র করছেন তারা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ও দেশ বিক্রি করার জন্য আইন আদালতকে কব্জা করে দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।