পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারা আসছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতৃত্বে? জানার কৌতূহল সবারই। কারণ এর ওপর নির্ভর করবে- শুদ্ধি অভিযানের মতো বড় ধাক্কার পর কেমন হবে যুবলীগের কমিটি।
যুবলীগের সাবেক নেতাদের চাওয়া- তরুণ, যুববান্ধব ও সৎ নেতৃত্ব। আর বর্তমানরা চান, ছাত্র ও যুবরাজনীতির অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ কর্মিবান্ধব, গতিশীল ও সহজপ্রাপ্য কাউকে।
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। তার আগেই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলের চারটি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন। ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস।
এরইমধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এসব সংগঠনের শীর্ষ দুটি পদের প্রত্যাশীরা। যদিও তাদের অনেকেই প্রকাশ্যে নিজ নিজ প্রার্থিতার বিষয়ে এখনই ঘোষণা দিচ্ছেন না। ক্যাসিনো, মাদক ও টেন্ডারের সঙ্গে সম্পৃক্ততায় কারো কারো নাম আসায় অনেকটা চুপচাপই রয়েছেন তারা। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই বঙ্গবন্ধু অভিনিউ ও ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত যাওয়া-আসা করছেন। যোগাযোগ বাড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে।
দলের বেশিরভাগ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরাবরের চেয়ে এবার সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। তারা বলছেন, এবার সরাসরি নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই তিনি নিজেই বিভিন্ন মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। এবার সংগঠনে স্থান পাবেন পরিচ্ছন্ন ইমেজ, দক্ষ সংগঠক, ত্যাগী নেতারা। এ ছাড়া ছাত্রলীগের ব্যাকগ্রাউন্ড আছে এরকম দেখে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ইতোমধ্যেই খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করেছে।
জানা গেছে, ২৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকেই আলোচনায় আছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বতর্মান কমিটির ১ নং সদস্য ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরী লিটন ও শেখ ফজলে ফাহিম, যিনি এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া আছেন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম, বর্তমানে প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, ফারুক হোসেন, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন, শেখ ফজলে নাঈম চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় আছেন। তবে চেয়ারম্যান পদে বিশেষ আলোচনায় আছেন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আলোচনায় আরো যারা আছেন- তাদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিন, অর্থ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হালদার, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু, উপশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, কার্যানির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার আলী আসিফ খান।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের জন্য মুখিয়ে থাকে সহস্রাধিক সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা। এ কারণে যুবলীগসহ যেকোনো সংগঠনের তারিখ ঘোষণা হলে ঈদ উৎসব নামে ক্ষমতাসীন শিবিরে। দৌড়ঝাঁপ বাড়ে পার্টি অফিস আর নেতাদের দ্বারে দ্বারে। তবে এবারের প্রক্ষাপটটা একটু ভিন্ন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে আলোচনায় আছেন- ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারি, লিয়াকত শিকদার, মাহমুদ হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। এ ছাড়া জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মর্তুজার নামও আলোচনায় আছে।
সম্মেলন ঘোষণার পরও এবার যুবলীগের আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশায় আছেন সংগঠনের নেতারা। অন্য সময় পূর্বাপর থেকে আঁচ করা গেলেও এবার ঠিক উল্টো।
ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া, নানা অভিযোগে যুবলীগের কয়েকজন শীর্ষনেতার গ্রেফতার, এমনকি খোদ যুবলীগের চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব তলব ও তার বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞাসহ নানা কারণে ক্ষমতাসীন শিবিরের উৎসব আমেজ ম্লান হয়েছে। সব যায়গায় অভিযান ও গ্রেফতার আতঙ্ক।
গত তিন দিন যুবলীগ অফিস ঘুরে দেখা গেছে, সম্মেলনকে ঘিরে অন্য সময়ের মতো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। তবে নেতাদের দৌড়ঝাঁপ থেমে নেই। তুলনামূলক ক্লিন ইমেজের নেতারা স্বল্প পরিসরে নেতাকর্মীদের নিয়ে পার্টি অফিসে যাতায়াত করছেন। যুবলীগের চেয়ারম্যান-সম্পাদক হতে ছোট-খাট শোডাউনও করছেন। শীর্ষ কয়েকজন নেতা অনুসারীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত আসছেন।
আওয়ামী লীগের এ সহযোগী সংগঠনের নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন, এখানে কেউ প্রার্থী হন না। অনেকে আলোচনায় থাকার চেষ্টা করেন বা নেতাদের কাছে নিজেকে তুলে ধরেন। আর প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুবলীগের কংগ্রেসে কখনো ভোট হয়নি। স্বভাবত, কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নতুন নেতাদের নাম ঘোষণা করেন।
দলীয় সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন নেতৃত্ব খুঁজছেন। অনেক নেতার প্রোফাইল তার হাতে। তিনি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে তথ্য অনুসন্ধান করছেন। এর মধ্য থেকে বাছাই করে স্বচ্ছ ইমেজের ও সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন দুইজনকে এ বৃহৎ সংগঠনের দায়িত্ব দেয়া হবে।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগী সংগঠনের মূল নেতৃত্বে ছাত্রলীগের রাজনীতি করাদের আনবেন, এমন একটি সিদ্ধান্তের তথ্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে একটু আশার আলোও জেগেছে।
বিশেষ সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর সার্চের তালিকায় এক ডজনের বেশি যুবনেতার নাম আছে। ওই তালিকায় শেখ পরিবারের অনেকের পাশাপাশি আছেন সাবেক ছাত্রনেতাদেরও নাম। তবে সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতে বরাবরের মতন শেখ পরিবারের একজনকে এবার না-ও চেয়ারম্যান করা হতে পারে। আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিমন্ডলীর সদস্যের প্রভাব খর্ব করতে এমনটা হতে পারে।
তবে যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা চাই তরুণ, যুববান্ধব, সৎ নেতৃত্ব আসুক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।