Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লালপুরে বন্যায় কৃষির ক্ষতি ৫ কোটি টাকা

মো. আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীতে পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে তবে পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যাদুর্গত এলাকায়। উপজেলার লালপুর সদর, বিলমাড়ীয়া, ঈশ্বরদী ও দুয়ারিয়া এই চারটি ইউনিয়নের সবকয়টি চর ডুবে যাওয়ায় চলতি মৌসুমের সবজি, আখসহ চাষ করা সকল ফসল নষ্ট হয়ে গেছে এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় উপজেলা কৃষি বিভাগ। তবে গবাদি পশু নিয়ে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলে মানুষেরা।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে নুরুল্লাপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পদ্মার তীরবর্তী একটি স্থানে ৩০-৪০টি গরু বাঁধা রয়েছে। পাশে কয়েকজন মহিলা ঠাঁই বসে আছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাজেদা বেগম ও ঝুরিমন নামের দুইজন মাঝ বয়সি মহিলা বলেন, ‘আমাদের বাড়ি চরের মধ্যে ছিলো, বন্যায় আমাদের বাড়ি ডুবে যায় গরু-বাছুর নিয়ে উপরে কোন রকমে একটু ঠাঁই নিয়েছি। চর ডুবে যাওয়ায় গরু-বাছুরের খাবার নেই কোন রকমে আধপেট খেয়ে পশু গুলি বেঁচে আছে। তারা আরো বলেন, ‘শুনেছি সরকার নাকি অনেক সহযোগিতা করে আমরা তো কোনদিনই কিছু পেলাম না।’
কথা হয় বিলমাড়ীয়া চর এলাকার সবজি চাষি নাদের আলী, কাহার আলী, আইদুল, ইয়াজুল হকের সঙ্গে তারা বলেন, ‘পদ্মার পানিতে আমাদের জমিতে চাষ করা আগাম সবজি নষ্ট হয়েগেছে। এখন বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’
এদিকে বন্যা দুর্গতদের জন্য খোলা ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চরাঞ্চলের আশ্রিত মানুষেরা নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে চরাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ি বন্যামুক্ত না হওয়ায় চরাঞ্চলের গবাদি পশু নিয়ে এখনো উপরে অবস্থান করছে অনেকে পরিবার এতে বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এদিকে বন্যা কবলিতদের মাঝে সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে জানালেন ক্ষতিগ্রস্থরা।
লালপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট ও দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘লালপুর উপজেলার মোট আমিষের ১.১৪ শতাংশই চরাঞ্চল থেকে আসে। বন্যা কবলিত গবাদি পশুদের রক্ষায় উপজেলা প্রাণীসম্পদ থেকে বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন করা হচ্ছে।’
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আকস্মিক বন্যায় লালপুর উপজেলার চারটি চরে চলতি মৌসুমে চাষ করা সকল ফসল নষ্ট হয়ে গেছে এতে কৃষি ক্ষেত্রে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি নিরুপন করা হয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন, ‘চরাঞ্চরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের তালিকা কৃষি অফিসের মাধ্যমে করা হয়েছে। আমরা সরকারি সহযোগিতার চেষ্টা করছি। সরকারি যে কোন সহযোগিত পেলে চরাঞ্চলের চাষিদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ