পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে, দেশের মাটি, পানি রক্ষার যুদ্ধে আবরার ফাহাদ প্রথম শহীদ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেয়ার প্রতিবাদসহ ভারতের সাথে বাংলাদেশের চুক্তির অসঙ্গতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে খুন করা হয়েছে। এজন্য ফেনী নদীর নাম হোক-‘আবরার নদ’।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের মাটি বিক্রি, পানি বিক্রি, দেশ বিক্রির অমানবিক নষ্টবুদ্ধির বিরুদ্ধে সকলকে মৃত্যুপণ যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে। ক্ষমতাসীনদের মুঢ় অহমিকার বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধে সামিল হতে হবে। তিনি আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানান এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
রিজভী বলেন, ফেসবুকে দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ার অপরাধে নারকীয় কায়দায় রাতভর নির্যাতন চালিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা খুন করেছে বুয়েটের সোনার টুকরা মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে। আবরার ফাহাদের মত নিরীহ নিরপরাধ দেশপ্রেমিক মেধাবী ছাত্রকে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রলীগ আবারও প্রমাণ করেছে যে, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নেই। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের হামলা থেকে রেহাই পায়নি। ছাত্রলীগের খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যকে ম্লান করে দিয়ে এর ডাকনাম এখন হয়ে পড়েছে চাপাতিলীগ। ছাত্রলীগ নামক এই দানব জঙ্গীলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষনা না করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরবে না। শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না।
প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে চকবাজার থানায় যে মামলা হয়েছে সেখানে আসামি হিসেবে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। রহস্যজনকভাবে ১৯ জনের মধ্যে এই হত্যাকা-ের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্তের নাম নেই। শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুম তথা টর্চার সেলটি কার? তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। নির্লজ্জ বুয়েট প্রশাসন এই হত্যাকা-কে সামান্য অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু বলে বিবৃতি দিয়েছে। তারা খুনিদের আড়াল করতে সিসিটিভিতে ধারণকৃত ২০ মিনিটের ভিডিও এডিট করে মাত্র দেড় মিনিটের একটি ক্লিপ দিয়েছে আন্দোলনরত ছাত্রদের।
তিনি বলেন, সারাদেশের সাধারণ ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছে। আবরারের খুনীদের বিচারের দাবীতে ছাত্রদের আন্দোলন এখন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। দেশের সাধারণ ছাত্রসমাজের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহবান- এই মৃত্যু উপত্যাকাকে শান্তিময় করতে রাজপথে এখনই নেমে আসতে হবে।
দেশজুড়ে ছাত্রলীগের হোলিখেলার উৎসব চলছে মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশজুড়ে এখন চলছে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের রক্তের হোলিখেলার উৎসব। প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের সামনে কাপুরোষোচিতের মতো বীরদর্পে কুপিয়ে নিরীহ গরীব পোশাক শ্রমিক বিশ্বজিৎকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে আরও বেপরোয়া হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের চুক্তির অসঙ্গতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর ছাত্র আবরার ফাহাদকে খুন করা হয়েছে। আবরারকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সারা জাতি স্তব্ধ ও বিমূঢ় হয়ে পড়েছে। এই অমানবিক নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আবরারকে জীবন দিতে হলো কারণ এদেশের ষোল কোটি মানুষকে অন্ধকারে রেখে পাশ্ববর্তী দেশের সাথে চুক্তি করার ঘটনায় প্রতিবাদ করার জন্য। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী বলেছে-আবরার হত্যার দায় ছাত্রলীগের নয়। সেটা আমরাও বলি। প্রকৃত অর্থে এটার দায় তাদের যারা তাদেরকে দানব বানিয়েছে এবং দানব হওয়ার সুযোগ দিয়ে ব্যবহার করেছে ও করছেন বিরোধী শক্তিকে রক্তাক্ত করতে এবং ভোটারদের ভোট কেড়ে নিতে। বাস পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে যদি বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হয় তবে আবরার হত্যার জন্য ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা হবে কি না তা জাতি জানতে চায়।
রিজভী বলেন, আবরার সত্য তথ্য উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল, সেই পোস্টে ঐসব চুক্তির অসঙ্গতি তুলে ধরেছিল, এজন্য তাকে জীবন দিতে হলো। এটা কোন দেশ? খুনীদের সরকারী দলের তকমা থাকলেই তারা দেশটাকে অভয়ারণ্য বানিয়ে ছাড়ে। আর তাই নির্ভয়ে তারা বিরোধী মত, পথের মানুষদের অবলীলায় হত্যা করতে দ্বিধা করে না। যেদেশে দিনের বেলায় নির্বাচন হয় না, রাতের বেলায় নির্বাচন হয় সেই দেশের সরকার তো জনগণের সরকার নয়, তারা খুনী ও ঘাতকদের সরকার। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে হলে জনগণের দরকার পড়ে না, নির্দয় ঘাতকদের দরকার পড়ে। মেধাবী তরুণ আবরার ফাহাদ এর করুণ মৃত্যু গোটা জাতিকে কাঁদিয়েছে। আজ দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এই ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, যাতে আর কোন মায়ের কোল শুন্য না হয়। আজকে সাংবাদিক, নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবিসহ সবাই গর্জে উঠছে না কেন? নাকি আমাদের বলতে হবে-একটি বিখ্যাত কবিতার কয়েকটি লাইন- যে পিতা সন্তানের লাশ শনাক্ত করতে ভয় পায়/আমি তাকে ঘৃণা করি/যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে/আমি তাকে ঘৃণা করি। যে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবি, কবি ও কেরানী/প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না/আমি তাকে ঘৃণা করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।