Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

লাখো মানুষের দুর্ভোগ

মাতামুহুরী নদীর তরছঘাটায় সেতুর অভাব

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৪২ এএম

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর তরছঘাট এলাকায় একটি সেতুর অভাবে ৪ ইউনিয়নের ১ লাখ লোকের দূর্ভোগ ও যাতায়াত ক্ষেত্রে অন্তহীন সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে একটি কাঠের সেতু দিয়ে শিশু, নারী, শিক্ষার্থীও বৃদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষকে কষ্ট করে পারাপার করতে হচ্ছে। বছরের ছয় মাস কাঠের সাঁকো ও অবশিষ্ট সময় নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদী পার হতে হিমশিম খেতে হয়। বিশেষ করে বর্ষায় মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে পানি বৃদ্ধি পেলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাওয়া-আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পূর্ব ভেওলা ইউনিয়ন, বিএমচর ও সাহারবিল, কোনাখালীর অন্তত ৪০ গ্রামের ১ লাখ মানুষকে নদী পার হয়ে উপজেলা সদর ও বানিজ্যিক এলাকা পৌরশহরে আসতে হয়। তাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে মাতামুহুরী নদীর ওপর তরছঘাটা পয়েন্টে অস্থায়ী কাঠের সেতুটি। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সাহারবিল ইউনিয়নের ৭ গ্রামের লোকজন এ কাঠের সাঁকো দিয়ে পারাপার করে। পূর্ব ভেওলা ইউনিয়নের মাবিয়াবাপের পাড়া, আনিসপাড়া, সেকান্দর পাড়া, নোয়াপাড়া, বুড়ির পাড়া, খরি বাপের পাড়া, কালাগাজী সিকদার পাড়া, ফজল রহমান সিকদার পাড়া, অলি বাপের সিকদার পাড়া, শাহাবখান পাড়া ও পূর্ব নয়াপাড়া গ্রামের লোকজন এ পথে নিয়মিত যাতায়াত করে। ওইসব এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে উপজেলা সদর চিরিংগা বাজারে যাতায়াতে ওই কাঠের সাঁকোটিই একমাত্র ভরসা। বর্তমানে ওইসব গ্রামের মানুষ উল্টোদিকে ৫ কিলোমিটার ঘুরে বাটাখালী সেতু পার হয়ে উপজেলা সদরে আসতে হয়।

ইউনিয়নের বিশিষ্ট সমাজ সেবক রফিকুল কাদের কালামনুসহ এলাকাবাসি জানান, একটি সেতুর অভাবে এ অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত কৃষক প্রচুর সবজি উৎপাদন করেও পরিবহণ ও বাজারজাতকরণের অভাবে সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কৃষকরাই তাদের উৎপাদিত সবজি ন্যায্যমূল্যে বাজারজাত করতে পারত যদি একটি পাকা সেতু তৈরি করা হতো।

এলাকার সেকান্দর পাড়া গ্রামের ফজলুল কাদের জানান, যাতায়াতের দুর্ভোগের কারণে উপজেলা সদর থেকে ওই এলাকার মানুষ অনেকটা বিচ্ছিন্ন। অসুস্থ লোকজনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। ফলে হাসপাতালে নেয়ার পথে অনেক সময় রোগী বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল জানান, এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে এলাকায় মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি সাধারণ কৃষক সুফল পেত।

মাতামুহুরী নদীর তরছঘাটা পয়েন্টে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া)র সংসদ সদস্য জাফর আলম বিএ (অনার্স) এম এ জানান, পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের স্থানীয় বেশকিছু লোক দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় সেতুর দাবি জানিয়ে আসছে। আশা করি মাতামুহুরী নদীর তরছঘাটা পয়েন্টে খুব শিগগিরই একটি সেতু নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই পয়েন্টে সেতু নির্মাণের জন্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে চেষ্টা করা হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ