পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্যাসিনোকান্ডের আলোচিত যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যে এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামটি সীমান্তের কাছাকাছি। ধারণা করা হচ্ছে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১২টার পর চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে কয়েক ঘণ্টা ধরে অভিযান চালায় র্যাব-১ এর একটি বিশেষ দল। পরে কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের পরিবহন ব্যবসায়ী মনির চৌধুরীর বাড়ি থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতারের পর তাদের ঢাকায় আনা হয়। আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকার জুয়াড়িদের কাছে ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে পরিচিত।
এদিকে আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট কিভাবে চৌদ্দগ্রামের অজয়পাড়ায় এসে গোপনে বসবাস করতে লাগলো-এ নিয়ে নানান গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। সম্রাট উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের পরিবহন ব্যবসায়ী হাজী মুনির চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে লুকিয়েছিলেন বলে র্যাব দাবি করেছে। ওই বাড়ি থেকে রোববার ভোরে র্যাব ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সম্রাটকে আটক করে। এ সময় তার সহযোগী যুবলীগ নেতা আরমানকেও আটক করা হয়।
র্যাব-১১ কুমিল্লা কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার প্রণব কুমার বলেন, শনিবার সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে র্যাবের ১২ থেকে ১৪টি গাড়ি কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের আশপাশে অবস্থান নেয়। র্যাব বিভিন্ন সড়কের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক হেলাল বলেন, মুনির চৌধুরী স্থানীয় জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ফেনীর মেয়র ও স্টার লাইন গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী আলাউদ্দিনের ভগ্নিপতি। আলাউদ্দিন জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।
সূত্রে জানা গেছে, স্টারলাইন গ্রæপের ব্যবস্থাপক ও ফেনীর মেয়র আলাউদ্দিনের সাথে ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সুসম্পর্ক ছিল। সাস্প্রতিক সময়ে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে স্টারলাইন পরিবাহনের কাউন্টার নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হলে সম্রাটের সহযোগিতা নিয়ে আলাউদ্দিন সমস্যাগুলো সমাধান করেন।
এ বিষয়ে মেয়র আলাউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সম্রাটের বাড়ি ফেনী। আমিও ফেনীর মেয়র। সেই হিসেবে তার সাথে আমার পরিচয় রয়েছে। হাজী মনির সম্পর্কে আলাউদ্দিন বলেন, তিনি আমার ভগ্নিপতি। সম্রাট হাজী মনিরের দু-সম্পর্কের আত্মীয় হয়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চৌদ্দগ্রামে বাড়ি হলেও মনির চৌধুরী ফেনীতে থাকেন। গত এক সপ্তাহ ধরে ফেনী থেকে প্রায়ই ওই বাড়িতে আসা-যাওয়া করছিলেন তিনি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কৌত‚হলের সৃষ্টি হয়। জামায়াত নেতা মনির চৌধুরীর দোতলাবাড়ি। তারা বলছেন, মনির তার বাড়িতে আসা-যাওয়া কম করতেন। সম্প্রতি হঠাৎ করে তার আনাগোনা বেড়ে যায়। এমনকি দোতলা ওই বাড়িটির মূল ফটকও বন্ধ থাকে। এরপরও পেছনের দরজা দিয়ে ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন তিনি।
এর মাঝেই শনিবার দিনগত রাত ৯টার দিকে র্যাবের কয়েকটি গাড়ি মনির চৌধুরীর বাড়ি ঘিরে ফেলে। পরে রাত ১১টার দিকে মনির চৌধুরীর দোতলার বাড়ির একটি কক্ষ থেকে ক্যাসিনো সম্রাট ও তার সহযোগী আরমান আলীকে বের করে নিয়ে আসেন র্যাব সদস্যরা। পরে রাত সোয়া একটার দিকে তাদের নিয়ে ওই বাড়ি ত্যাগ করে র্যাবের গাড়ি। শনিবার সন্ধ্যায়ও মনির চৌধুরী একবার তার ওই বাড়িতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় একাধিক সূত্র।
মনির চৌধুরীর ভাতিজি সামিয়া জান্নাত বলেন, এক সপ্তাহ আগে আমি শ্বশুরবাড়ি থেকে এই বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। সম্রাট ও আরমান এই বাড়ি থাকতেন কিনা তা আমার জানা নেই। তবে সম্প্রতি মনির চাচা প্রায়ই আসা যাওয়া করতেন বাড়িতে। গতকাল সন্ধ্যায়ও তাকে দেখা গেছে।
তিনি আরো বলেন, রাতে হঠাৎ এই বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। এরপরই বাড়ি থেকে সম্রাট ও আরমানকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
মনির চৌধুরীর প্রতিবেশী মো. জামাল ও মো. মারুফ বলেন, মনির চৌধুরী ফেনীতে ব্যবসা করেন। সেই খানেই তিনি থাকতেন। এই বাড়িতে তার বৃদ্ধ মা ছাড়া কেউই থাকতেন না। কিন্তু তিনি ইদানীং বেশি আসা-যাওয়া করতেন তিনি। আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জানান, মনির চৌধুরী এক সময় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।