রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুষ্টিয়ায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ হলেও আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজারে পাটের দাম ভালো না পাওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।
জেলা মুখ্য পাট পরিদর্শকের কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি বছর কুষ্টিয়ায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৫ হাজার ১০ হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে পাট চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ২৫০ হেক্টর। এরমধ্যে সদর উপজেলায় দুই হাজার ২৫০ হেক্টর, কুমারখালি উপজেলায় চার হাজার ৬৭৫ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় তিন হাজার ৭৪০ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় চার হাজার ৪৫ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় তিন হাজার ৮৯০ হেক্টর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। এ বছর পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৭০ হাজার ৯৫১ বেল (প্রতি বেল ১৮০ কেজিতে)।
দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের পাটচাষি আবু তালেব জানান, চলতি বছর প্রায় ছয় বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি সাড়ে সাত থেকে আট মণ পাট পেয়েছেন। তবে বর্তমান বাজারে পাটের দামে হতাশ তিনি। পাট চাষ করে উৎপাদন খরচ গায়ে বেঁধে যাওয়ার অবস্থা। তিনি আরও জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ, বীজ বপন, পরিচর্যা, কাটা, পচানো, পুকুরভাড়া, আঁশ ছড়ানো, শুকানো ও বিক্রির জন্য পরিবহনসহ সব মিলে খরচ হয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। আর প্রতিমণ পাট বিক্রি করেছেন প্রায় এক হাজার ৩০০ টাকায়। ফলে বিঘাপ্রতি লোকসান গুনতে হয়েছে।
মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও পাটচাষি মো. মমিন জানান, এ বছর পৌনে দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এবার পাটের বীজটা ভালো ছিল না। ফলে পাটের মাথা ছেঁটে ফেলতে হয়েছে। তা ছাড়া পাটের আঁশও কম হয়েছে। পৌনে দুই বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ৭০০ টাকা। বিঘাপ্রতি আট মণ পাট পেয়েছেন। আর সর্বসাকুল্যে পাট বিক্রি করেছেন ১৭ হাজার ২০০ টাকা। আগামীতে আর পাট চাষ করবেন না।
চিথলিয়া গ্রামের পাটচাষি জাহিদ হোসেন জানান, এবার এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এতে খরচ হয়েছে প্রায় আট হাজার টাকা। পাট পেয়েছি প্রায় সাত মণ। আর বিক্রি করেছি সাড়ে আট হাজার টাকা। বিশেষ করে পাট রোপণ থেকে কাটা ও ধোয়ার সময় পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি খরচ বেড়ে যায়। ফলে পাটের উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়। তবে বছর বছর উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাটের দাম সেভাবে বাড়ছে না। এভাবে দাম না পেলে আগামীতে পাট চাষে আগ্রহ হারাবে চাষিরা।
কুষ্টিয়ার মুখ্য পাট পরিদর্শক সোহরাব উদ্দিন বিশ্বাস জানান, এবার প্রথম দিকে পাটের দাম বেশি হলেও বর্তমানে কিছুটা কম। কৃষক ভালো দাম পাচ্ছে না। কারণ কুষ্টিয়ায় একটি মাত্র পাট ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে খোকসা উপজেলায়, যা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। যদি কুষ্টিয়ার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে পাটের ক্রয়কেন্দ্র থাকতো তবে পাটের ন্যায্য দাম পাওয়া সহজ হতো। কৃষকরাও সহজে পাট বিক্রি করতে পারত।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, এবার জেলার অনেক স্থানে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে চাষিদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। ফলে পাটের মান কমে যাওয়ার কারণে পাটের দাম কিছুটা কম পাচ্ছে চাষিরা। এ ছাড়া বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কুষ্টিয়ার খোকসায় যে পাটক্রয় কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে প্রায় দুই বছর ধরে চাষিদের পাটের টাকা বকেয়া রয়েছে। যদি বকেয়া পরিশোধ করা যায়, তবে চাষিরা সেখানে পাট দিতে আগ্রহী হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।