Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ভোগের নাম কাদায় নিমজ্জিত গ্রামীণ সড়ক

মো. আজিজুল হক টুকু, নাটোর থেকে | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

নাটোরে দুর্ভোগের আরেক নাম কাদায় নিমজ্জিত গ্রামীণ সড়ক। তবে গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়নের এই সময়ে কাঁচা রাস্তা খুঁজে পাওয়া কঠিন হলেও ব্যতিক্রম শুধু সিংড়া উপজেলার বড়সাঁঐল বাজার থেকে কুশাবাড়ি রাস্তাটি। শিক্ষা স্বাস্থ্য আর ব্যবসায়ের সমৃদ্ধ এই জনপদে আড়াই কিলোমিটারের এই ব্যস্ত রাস্তাটি একটু বৃষ্টিতেই পানি আর কাঁদায় একাকার। দুর্ভোগে পড়েছেন এই রাস্তা ব্যবহারকারী এলাকার প্রায় দশ হাজার বাসিন্দা।

প্রাচীনকাল থেকে বড়সাঁঐল এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ সমৃদ্ধ এক জনপদ। বড়সাঁঐল বাজারের পাশে বিশাল খেলার মাঠসহ চারপাশ জুড়ে শিক্ষা বিস্তারে অবদান রেখে চলেছে বড়সাঁঐল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বড়সাঁঐল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং বড়সাঁঐল টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ। কুশাবাড়ি রাস্তার পাশেই পাটসাঁঐল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পাটসাঁঐল কমিউনিটি ক্লিনিকের অবস্থান। বড়সাঁঐল বাজারে দুই শতাধিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে গড়ে উঠেছে গাভীর খামার। দুধ কিনতে প্রাণ খুলেছে একটি ডেইরি হাব।

এলাকার প্রায় সকল রাস্তা পাকা হলেও এখনো কাঁচা রয়ে গেছে বড়সাঁঐল থেকে কুশাবাড়ি পর্যন্ত ২.৬ কিলোমিটারে দীর্ঘ রাস্তাটি। একটু বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এলাকার প্রায় আড়াই হাজার বসতবাড়ির দশ হাজার বাসিন্দা দূর্ভোগ যেন জন্মগত। বৃষ্টি এবং বৃষ্টির পরের দিনগুলোতে খুব বেশী জরুরী কাজ না থাকলে লোকজন বাইরে বের হন না। আবার কেউ কেউ বিকল্প পথ ধরে মানুষের বসতবাড়ি হয়ে যাতায়াত করেন।
তবে সবচে’ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী আর রোগীদের। রোগীদের পদচারনায় ব্যস্ত পাটসাঁঐল কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন সেবাগ্রহীতা আসলেও বৃষ্টির দিনে তা কমে হয় সাত-আট জন বলে জানালেন কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার আতাউর রহমান।

পাটসাঁঐল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব বলেন, বৃষ্টির দিনে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায়না কাঁদা-পানি ভরা রাস্তা দিয়ে, তাই তাদের হাজিরা কমে যায় এই রাস্তার কারনে। একই অভিমত অন্য তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের। শিক্ষার্থী ইতি খাতুন ও সুমন আলী বলেন, এই রাস্তাতে বৃষ্টির দিনে চলাচল সম্ভব না বলে ঐ দিনগুলোতে স্কুল কামাই হয়। এলাকার সার ও মাছ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, এই এলাকাটি মাছ ব্যবসায়ে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। গ্রামটি পুকুরের গ্রাম। বড়সাঁঐল-কুশাবাড়ি রাস্তাটি মাছের পোনা আর খাবার এবং মাছ বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধক। রাস্তাটিকে ব্যবসায়ীদের জন্যে দুঃখের রাস্তা বলে উল্লেখ করলেন প্রতিষ্ঠিত দুধ ব্যবসায়ী মোকছেদ সরদার।

এই রাস্তা সংলগ্ন বাড়িতে বসবাস করেন জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি সরকার আনিসুর রহমান, হাঁটু সমান কাদার রাস্তাটি পাকা করার জন্যে এক দশকের আপ্রান চেষ্টার কথা উল্লেখ করে খানিকটা হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, জানি না কবে আমাদের এই প্রত্যাশা পূরণ হবে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং ব্যক্তিবর্গের কাছে বারবার এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গণদরখাস্ত দিয়ে শুধু আশার বাণীই শুনেছেন বলে জানালেন হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম।

সিংড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসান আলী জানান, ইতোমধ্যে কুশাবাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মৌসুমী বায়ু সৃষ্ট বৃষ্টির প্রভাব কেটে গেলেই কাজ শুরু হবে। আর রাস্তার অবশিষ্ট কাজ বছরের শেষার্ধে আইআরআইডিপি-৩ কর্মসূচীর আওতায় অন্তভর্‚ক্ত করে নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ