পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুরুতেই চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনার নামে পুকুরচুরির আয়োজনে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বালিশ কেলেঙ্কারির রেশ না কাটতেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরঞ্জাম কেনার জন্য অস্বাভাবিক প্রস্তাব তৈরি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা কমিশন ১২ ধরনের সরঞ্জাম কেনার এ অস্বাভাবিক প্রস্তাবটি ফেরত পাঠালেও এ নিয়ে তোলপাড় থেমে নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া চলছে।
চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনেরা একটি বড় প্রকল্পের শুরুতেই সরকারি অর্থ লোপাটের আয়োজনে দৈনিক ইনকিলাবের কাছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী কঠোর অবস্থানের মধ্যে এ ধরনের পুকুরচুরির প্রচেষ্টা যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান তারা।
রূপপুরে একটি বালিশ কেনা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকায়। আর এ প্রকল্পে বালিশের দাম দেখানো হয়েছে ২৭ হাজার ৭২০ টাকা। প্রতিটি বালিশের কাভারের দাম দেখানো হয়েছে ২৮ হাজার টাকা। ৩০০ টাকার রেক্সিনের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার, ২০ টাকা দামের হ্যান্ড গ্লোভস ৩৫ হাজার, কটন টাওয়েল ৫ হাজার ৮৮০ টাকা। এভাবে ১২ ধরনের সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক বেশি মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের অর্থে এটি বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাব তৈরিতে ভুল হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিকল্পনা কমিশনের নজরে না এলে এ প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়ে যেত।
বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক, পেশাজীবী নেতা ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এ ধরনের অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে স্ব স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করেছে। মন্ত্রণালয়ের সচিবের স্বাক্ষরে প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে গেছে।
এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা দায় এড়াতে পারেন না। যে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছেন ঠিক সে সময়ে যারা রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাটের আয়োজন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে চট্টগ্রামবাসী এবং বিএমএর আন্দোলনের ফসল উল্লেখ করে তিনি বলেন, কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অপকর্মের কারণে শুরুতেই এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুণœ হোক তা কারও কাম্য নয়।
পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা জাতির জন্য লজ্জাজনক। রূপপুরের বালিশ কেলেঙ্কারির রেশ না কাটতেই জাতিকে আরও একটি কেলেঙ্কারি দেখতে হল। চট্টগ্রামে চিকিৎসা বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার জন্য এ অঞ্চলের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ঘটনায় এ প্রকল্পটি শুরুতেই হোঁচট খেল এবং দুর্নামের মুখে পড়ল। এর সাথে যারা জড়িত দ্রুততম সময়ে তদন্ত করে দেশবাসীর সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা জরুরি বলেও মত দেন এ পেশাজীবী নেতা।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এইচ এম মজিবুল হক শুক্কুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। অথচ কতিপয় আমলা চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ফসল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্নে অনিয়ম ও সরকারি অর্থ লোপাটের মহা আয়োজন করে বসেছেন। তদন্তের মাধ্যমে এর সাথে জড়িত সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে এ প্রকল্পটি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সরকারকেও সতর্ক হতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।